মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্ট একপেশে ও অগ্রহণযোগ্য : তথ্যমন্ত্রী

667

চট্টগ্রাম, ১৩ মার্চ, ২০২০ (বাসস) : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন একপেশে ও অগ্রহণযোগ্য। প্রকৃতপক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই মানবাধিকারের কি পরিস্থিতি সেটিও বিশ্ববাসীর জানার প্রয়োজন ও অধিকার রয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী আজ বিকেলে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার শুরুতে সাংবাদিকদের একথা বলেন।
বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ বিষয়ে উল্লিখিত কতিপয় অভিযোগ খন্ডন করে ও প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গত ১১ মার্চ বিশ্বের দেশগুলোতে মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে বাংলাদেশের ওপরও একটি প্রতিবেদন রয়েছে। “আমরা মনে করি, এই প্রতিবেদন একপেশে৷ যাদের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, সে সমস্ত সংগঠনগুলো ইতোপূর্বেই বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে।’”
হাছান মাহমুদ বলেন, যাদের তথ্য উপাত্ত নিয়ে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে, সেই সমস্ত সংগঠনগুলো ইতোপূর্বেই বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। তারা ইতোপূর্বেও বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর একপেশে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাদেরই তথ্য উপাত্ত নিয়ে ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তা অগ্রহণযোগ্য।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিউমান রাইটস রিপোর্টে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রেফারেন্স দেয়া হয়েছে। সুতরাং যেসমস্ত প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে, তাদের কাছ থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে যে রিপোর্ট সেটিও গ্রহণযোগ্য নয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরণের হিউম্যান রাইটস রিপোর্ট ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে।
তিনি বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার জন্য বাংলাদেশের মানুষ সোচ্চার। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যুদ্ধপরাধীদের বিচার করেছে, রায়ও কার্যকর করেছে এবং বিচার কার্যক্রম চলছে।
ড. হাছান বলেন, ‘সর্বজন গ্রহণযোগ্য বিচার নিয়েও প্রশ্ন তুলে যে অ্যামনেস্টি গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে, তাদের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে রিপোর্ট, সেটি গ্রহণযোগ্য নয়’ যুক্তি দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের রিপোর্ট বিশ্বব্যাপীই গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। সুতরাং আমরা কোনভাবেই এ রিপোর্টকে গ্রহণ করতে পারি না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবছরের প্রথম দিনে নানাভাবে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে প্রতিবছর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে বহু মানুষ হতাহত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র্রে প্রতিবছর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিনা ওয়ারেন্টে অনেককে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেশে যেই পরিস্থিতি সেটিও বিশ্ববাসীর জানার অধিকার রয়েছে এবং জানা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নানা সময় এধরণের রিপোর্ট প্রকাশ করে এবং অনেক ক্ষেত্রে তাদের রিপোর্টে মোটিভেটেড রিপোর্ট থাকে। সুতরাও এবারও যেই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে এটি একপেশে এবং অগ্রহণযোগ্য। আমরা কোনভাবেই এই রিপোর্টকে গ্রহণ করতে পারি না।
ইদানিংকালে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একপেশে রিপোর্ট দেখতে পাচ্ছেন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। বাংলাদেশের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একসাথে কাজ করছে। ভবিষ্যতেও আমরা এইক্ষেত্রে একসাথে কাজ করতে চাই। আমাদের এই কার্যক্রম আরও দৃঢ় করতে চাই।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারের পরিচালনায় বর্ধিত সভায় অতিথি ছিলেন পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, মুহাম্মাদ আলী শাহ, আসলাম খান, স্বজন কুমার তালুকদার, আবুল কাশেম চিশতি, আক্তার কামাল চৌধুরী, ডা. মোহাম্মদ সেলিম, লোকমানুল হক তালুকদার, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, ইদ্রিছ আজগর, শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, ফজলুল কবির গিয়াসু, গিয়াস উদ্দিন খাঁন স্বপন।
সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষক লীগ সভাপতি আব্দুল মান্নান তালুকদার, যুবলীগের সভাপতি শামসুদ্দোহা সিকদার আরজু, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন রিয়াজ, তাঁতীলীগ আহবায়ক মোরশেদ তালুকদার, ছাত্রলীগ সভাপতি নুরুল আলম, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পলাশী মুৎসুদ্দী, যুব মহিলা লীগের আহবায়ক এডভোকেট রাহেলা চৌধুরী রেখা।