মাগুরায় পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে

607

মাগুরা , ১১ মার্চ ,২০২০(বাসস) : জেলায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার চার উপজেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে কিন্তু চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে শ্রীপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এ উপজেলায় ৫ হাজার ৮৯৫ হোক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলায় ১ হাজার ১৫০ হেক্টর, মহম্মদপুরে ১ হাজার ৪০০ হেক্টর এবং শালিখা উপজেলায় ৮৭০হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। যা থেকে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। এ ছাড়া জেলায় পেঁয়াজের আবাদ সফল করতে কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করায় পেঁয়াজের ফলন অনেক ভালো হয়েছে ।
ইতিমধ্যে জেলার কিছু এলাকায় কৃষকরা ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ ওঠাতে শুরু করেছেন। নতুন ওঠা এসব পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,উচ্চ ফলনশীল জাতের লাল তীর কিং, বারি পেঁয়াজ-১(তাহেরপুরি), স্থানীয় জাতের রাজশাহী কিং, ফরিদপুরীসহ বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ বেশি চাষ হয়েছে। এসব জাতের পেঁয়াজ কৃষক ও জনসাধারণের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। এ জাতের পেঁয়াজের সাদ গন্ধ হুবহু দেশী পেঁয়াজের মত। এ ছাড়া কৃষকরা এটির বাজার মূল্য ভালো পায় ও সংরক্ষণ ক্ষমতা বেশি। এ কারণে এ জাতের পেঁয়াজ চাষ বেশি হয়। এ বছর এসব জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়ে প্রায় ৮৫ শতাংশ জমিতে। বাকি ১৫ শতাংশ জমিতে কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল বারি পেঁয়াজ-৪সহ বিভিন্ন স্থানীয় জাতের পেঁয়াজের আবাদ করেছে । এ ছাড়া অনেক কৃষক উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁয়াজের কন্দ বা ওনিয়ন বাল্ব লাগিয়ে এর জীব সংরক্ষণ করছেন। কৃষি বিভাগের ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণের ফলে উচ্চ ফলনশীল এসব জাতের ঁেপয়াজ চাষে কৃষকরদের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক শরফুল ইসলাম জানান- আমি কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ১০ বিঘা জমিতে লাল তীর জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছি। চাষকৃত জমি থেকে প্রায় প্রায় ৮০০ মণ ঁেপয়াজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। বর্তমানে ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ ওঠা শুরু হয়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে। যা থেকে তিনি লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।
দূর্গাপুর গ্রামের কৃষক বিপ্লব মন্ডল জানান, তিনি এ বছর প্রায় ১৮ বিঘা জমিতে বারি পেঁয়াজ-১ জাত চাষ করেছেন। যা থেকে তিনি প্রায় ১ হাজার ২০০ মণ পেঁয়াজ পাওয়ার পাশপাশি ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাহিদুল আমিন জানান, চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। এ বছর জেলায় চাষ হওয়া মোট পেঁয়াজের প্রায় ৮৫ শতাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল লাল তীর কিং,বারি পেঁয়াজ-১সহ বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ চাষ করছেন কৃষকরা। এখন মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলে বাজারে মোটামুটি ভালো দামে বিক্রি হয়েছে। পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে আমরা বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁয়াজ বীজ সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি।