রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো মহামারী রোধে ডব্লিউএইচও’র প্রস্তুতি গ্রহণ

799

॥ তানজিম আনোয়ার ॥
ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০১৮ (বাসস) : আসছে বর্ষা মৌসুমে মহামারী ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করতে পারে এই আশঙ্কায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক টিকাদান কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর দূরাবস্থা পরিদর্শনের একদিন পর এক সাক্ষাতকারে ডব্লিউএইচও’র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বাসসকে বলেন, ‘এটি (বর্ষা মৌসুম) আমাদের জন্য ভয়ানক উদ্বেগের বিষয়।’
তিনি বলেন, কলেরা মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় মহামারী প্রতিরোধে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোসহ আশপাশের স্থানীয় লোকদের মধ্যে চতুর্থ পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পরিকল্পনা করেছে ডব্লিউটিও।
ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক প্রধান স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘বর্তমানে এটি সামাল দেয়া সম্ভব হলেও বর্ষা শুরু হলে স্যানিটেশন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’
ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ডিপথেরিয়া, হাম এবং কলেরার জন্য তিন দফায় টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। ‘আমি মনে করি, এই টিকাদান কার্যক্রম অত্যন্ত ফলপ্রসূ। কারণ, বর্ষা মৌসুমের এটি একটি ভয়ানক আতঙ্কের বিষয়।’
তিনি বলেন চতুর্থ রাউন্ডের পরে আমরা আরো এক দফা টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করবো এবং আমাদের ক্যাম্পগুলোর জন্য পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন রয়েছে। ডব্লিউএইচও ঝুঁকির মাত্রা নিরুপণ করেছে এবং প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন সংগ্রহ করেছে।
ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, পানিবাহিত এই রোগ প্রতিরোধে যাতে কেউ টিকাদানের বাইরে না থাকে সে জন্য বার বার টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য বিষয়ক উদ্বেগ নিরসনে ওয়ার্ল্ড হেলথ ইমার্জেন্সির (ডব্লিউএইচএ) অধীনে ডব্লিউএইচও বর্তমানে বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতি রাউন্ডে ক্যাম্পের আশপাশের স্থানীয় কমিউনিটিকে এর আওতায় আনা হযেছে। পরবর্তীতে আমরা যখন টিকাদান কার্যক্রম চালাবো তখন পুরো এলাকায় এর আওতায় নিয়ে আসবো।
ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া মায়ানমারের নাগরিকদের বর্ষা মৌসুমে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশংকা প্রকাশ করে ডব্লিউএইচও মৌমুস শুরুর প্রাক্কালে রোহিঙ্গাদের জন্য আরো সহযোগিতা দিতে সম্প্রতি দ্বিতীয়বার দাতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংক সংস্থার আঞ্চলিক প্রধান মায়ানমারের সামরিক অভিযানে বাস্তুচ্যুত হয়ে পালিয়ে আসা রোাহিঙ্গাদের সংকট পর্যবেক্ষণে ৪ দিনের সফর বাংলাদেশে এসেছেন।
ক্ষেত্রপাল সিং গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দাতা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।