জুভেন্টাসকে ১-০ গোলে হারিয়েছে লিঁও

221

লিঁও, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ (বাসস) : চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬’র প্রথম লেগের ম্যাচে জুভেন্টাসকে ১-০ গোলে পরাজিত করেছে ফরাসি ক্লাব লিঁও। নিজেদের মাঠে ৩১ মিনিটে দলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন মিডফিল্ডার লুকাস টৌসার্ট। এই জয়ে আগামী ১৭ মার্চ ফিরতি লেগে কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকলো লিগ ওয়ানে সপ্তম স্থানে থাকা লিঁও।
এক গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধটা দারুন দাপটের সাথেই শেষ করেছে লিঁও। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে জুভেন্টাসের একের পর এক আক্রমন রুখে দিয়ে ইউরোপীয়ান আসরে তাদের সবচেয়ে সফল জয় নিশ্চিত করেছে। এর আগে গত মৌসুমের গ্রুপ পর্বে তারা ম্যানচেস্টার সিটিকে পরাজিত করেছিল।
ম্যাচ শেষে লিঁও কোচ রুডি গার্সিয়া বলেছেন, ‘আজ আমরা প্রথমার্ধে শীর্ষ পর্যায়ের পারফরমেন্স দেখিয়েছি। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচটা আরো কঠিন ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ায় আমি দারুন খুশী। আমি আগেই ছেলেদের বলেছিলাম ঘরের মাঠে প্রথম লেগে খেলতে নামলে একটি বিষয় গুরুত্ব দিতে হবে, কোন গোল হজম করা যাবেনা। তারা আমার কথা শুনেছে। আমাদের অবশ্যই মাটিতে পা রাখতে হবে, এখন শুধুমাত্র অর্ধেক কাজ শেষ হয়েছে।’
প্রায় ২৫ বছর যাবত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপার দেখা না পাওয়া জুভেন্টাসের কাছে এটি বহুল কাঙ্খিত শিরোপায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু সেই লক্ষ্যে গতকালকের ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ এ্যাওয়ে গোল তুলে নিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। পাওলো দিবালার শেষ মুহূর্তের গোলটিও বাতিল হয়ে যায়।
জুভেন্টাস কোচ মরিজিও সারি বলেছেন, ‘প্রথমার্ধে আমরা আসলে জুভকে দেখতে পাইনি। কোন আক্রমনই আমরা তখন গড়ে তুলতে পারিনি। আমাদের দুটি পেনাল্টির আবেদনও নাকচ হয়ে যায়। বিষয়গুলো আসলে আমি এখনো বুঝতে পারছিনা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে হলে যা করা দরকার তার কিছুই আমরা করতে পারিনি। কিন্তু এখনো ফিরে আসার জন্য আমাদের হাতে পুরো ৯০ মিনিট রয়েছে।
এই মুহূর্তে প্রতিযোগিতার সম্ভবত সবচেয়ে দূর্বল দল লিঁওর বিপক্ষে জুভেন্টাসকেই ফেবারিট ধরা হয়েছিল। কিন্তু গ্রুপামা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক হিসেবে যা কিছু করা সম্ভব ছিল তার পুরোটাই করে দেখিয়েছে ফরাসি ক্লাবটি। এ বছর অনুষ্ঠিত ৯টি ম্যাচেই গোল পাওয়া ৩৫ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর দিকেই অবশ্য তাকিয়ে ছিল জুভ সমর্থকরা। ডিসেম্বরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত রোনাল্ডো ১৯টি গোল করেছেন। ১৯৯৬ সালে সর্বশেষ শিরোপা জয়ের পর এ পর্যন্ত জুভেন্টাস পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পরাজিত হয়েছে। কিন্তু কোনদিক থেকেই তারা শিরোপা প্রত্যাশী দল হিসেবে কাল খেলতে পারেনি।
অন্যদিকে ছোট দল হিসেবে লিঁও সবদিক থেকে আধিপত্য দেখিয়েছে। বিশেষ করে মধ্যমাঠে নতুন চুক্তিভূক্ত ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ব্রুনো গুইমারায়েস ছিলেন দুর্দান্ত। হুসেম অরারের কর্ণার থেকে জানুয়ারিতে আরেক চুক্তিভূক্ত কার্ল টোকো-একাম্বির হেড ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। তখন থেকেই জুভেন্টাসকে সতর্ক হয়ে খেলতে দেখা গেছে।
লিঁওর রক্ষনভাগে সংঘর্ষে মাথিয়াস ডি লিটের মাথায় আঘাত লাগলে কিছুক্ষনের জন্য জুভেন্টাসকে ১০জন নিয়ে খেলতে হয়েছে। ঐ সময়ের মধ্যেই অরারের পাসে টৌসার্ট ছয় গজ দুর থেকে লিঁওকে এগিয়ে দেন। মাথায় ভারি ব্যান্ডেজ দিয়ে ডি লিট আবারো মাঠে ফিরে এসেছিলেন।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরে আসার তাগিদে গঞ্জালো হিগুয়েইন ও এ্যারন রামসেকে নামিয়েও সফল হয়নি তুরিনের জায়ান্টরা। গোলের সেই ধরনের কোন সুযোগই তারা কার্যত সৃষ্টি করতে পারেনি। রোনাল্ডোও তার বর্তমান ফর্মের কাছাকাছিও যেতে পারেনি। ডিবালার একটি প্রচেষ্টা অফ-সাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়।