রিয়ালকে ঘরের মাঠে জিততে দিলনা ম্যান সিটি

205

মাদ্রিদ, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ (বাসস) : সান্তিয়াগো বার্নব্যুতে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬’র প্রথম লেগের ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদকে ২-১ গোলে পরাজিত করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। কেভিন ডি ব্রুইনার ৮৩ মিনিটের গোলে সিটির জয় নিশ্চিত হয়।
এর আগে ইসকোর গোলে ৬০ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল স্বাগতিক মাদ্রিদ। কিন্তু ৭৮ মিনিটে ডি ব্রুইনা প্রথমে গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে দিয়ে গোল করানের পাঁচ মিনিট পর পেনাল্টি থেকে নিজে গোল করে সিটিজেনদের জয় উপহার দিয়েছেন। ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে জেসুসকে গোল করতে বাঁধা দেয়ায় সার্জিও রামোস লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে চলে যান। এর অর্থ হচ্ছে আগামী ১৭ মার্চ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে মাদ্রিদ তাদের অধিনায়ককে দলে পাচ্ছেনা।
দুই এ্যাওয়ে গোলে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে সিটিকেই ফেবারিট হিসেবে মানা হচ্ছে। যদিও কোচ পেপ গার্দিওলা এখনই আত্মতুষ্টিতে ভুগতে নারাজ। ম্যাচ শেষে গার্দিওলা বলেছেন, ‘এখনো কোন কিছুই শেষ হয়ে যায়নি। অভিজ্ঞতা ও ইতিহাস দিয়ে কোন একটি ক্লাব যদি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফিরে আসতে পারে তবে সেটা অবশ্যই রিয়াল মাদ্রিদ।’
রিয়াল মাদ্রিদ ম্যানেজার জিনেদিন জিদান বলেছেন, ‘আমরা পরিস্থিতি বুঝতে পারছি। আমাদের এখন ওদের মাঠে গিয়ে জয় নিয়ে ফিরতে হবে।’
শেষ পাঁচটি ম্যাচে মাদ্রিদ মাত্র একটিতে জয়ী হয়েছে। রোববার সান্তিয়াগোতে বার্সেলোনার বিপক্ষে মৌসুমের দ্বিতীয় এল ক্লাসিকোতে তারা মুখোমুখি হবে। জিদান বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের সময়টা ভাল যাচ্ছেনা। তবে এর থেকে বেরিয়ে আসার পথ আমাদের জানা আছে। রোববারের ম্যাচটি সবকিছু পাল্টে দিতে পারে।’
রাহিম স্টার্লিং, সার্জিও আগুয়েরো ও ফার্নান্দিনহোকে বেঞ্চে বসিয়ে তাদের পরিবর্তে মূল একাদশে ডি ব্রুইনাকে অন্তর্ভূক্ত করে সকলকে বিস্মিত করেছিলেন গার্দিওলা। এ সম্পর্কে গার্দিওলা বলেছেন, ‘আমরা একজন স্বীকৃত স্ট্রাইকার ছাড়া মাঠে নেমেছি, কারন রিয়ালের রক্ষনভাগ সম্পর্কে আমাদের পরিপূর্ণ ধারনা আছে। মধ্যমাঠে তারা এতটাই আগ্রাসী যে আমরা কৌশল পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছি।’
গার্দিওলার এই কৌশল দলের সাফল্যে বেশ ভালই কাজে লেগেছে। যদিও নিকোলাস ওটামেন্ডির একটি ভুলে ইসকো রিয়ালকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। এদিকে অমারিক লাপোর্তের ইনজুরিতে ৩৩ মিনিটে ফার্নান্দিনহোকে মাঠে নামাতে বাধ্য হন সিটি বস। রোববার সুপার লিগের কাপ ফাইনালে এ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে এখন লাপোর্তের খেলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আর্থিক অনিয়মের কারনে উয়েফা কর্তৃক আগামী দুই বছরের জন্য ম্যানচেস্টার সিটিকে সব ধরনের ইউরোপীয়ান আসর থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিষয়টি খেলোয়াড়দের মধ্যে আপাতত কোন কাজ না করলেও সমর্থকরা এ ব্যপারে দারুন সড়ব ছিল। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সফরকারী সমর্থকরা ইউরোপীয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার বিপক্ষে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়েছে।
প্রথমার্ধটা উভয় দলের জন্য অনেকটা একইরকম কাটলেও বল পজিশনের দিক থেকে সিটি খানিকটা এগিয়ে ছিল। বিরতির আগে জেসুস ও রিয়াদ মাহারেজ দুটি সুযোগ নষ্ট করেছেন। রাফায়েল ভারানেকে কাটিয়ে জেসুসের শট সরাসরি মাদ্রিদ গোলরক্ষক থিবাট কুর্তোয়ার হাতে ধরা পড়ে। করিম বেনজেমার হেড দারুন দক্ষতায় এডারসন আটকে দেন। কিন্তু মাত্র পাঁচ গজ দুর থেকে ভিনসিয়াস জুনিয়রের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে হতাশ হতে হয় স্বাগতিকদের।
বিরতির পর সিটি তাদের সময়টা দারুন উপভোগ করেছে। ক্যাসেমিরোর ভুলে বল পেয়ে ডি ব্রুইনা মাহারেজকে পাস করেন। কিন্তু মাহারেজের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। জেসুসের আরেকটি শট কুর্তোয়া আটকে দেন। রড্রির পাসে ওটামেন্ডি বল নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ হলে সুযোগ সন্ধানী ভিনসিয়াস জুনিয়র কাইল ওয়াকার ও ফার্নান্দিনহোকে কাটিয়ে ইসকোর কাছে বাড়িয়ে দেন। সহজ ফিনিশিংয়ে মাদ্রিদকে ৬০ মিনিটে এগিয়ে দেন এই স্প্যানিয়ার্ড। ডানি কারভাহালের ব্যর্থতায় ব্যবধান বাড়াতে পারেনি মাদ্রিদ। ৭৫ মিনিটে ভিনসিয়াস জুনিয়রের পরিবর্তে গ্যারেথ বেল ও তার দুই মিনিট আগে বার্নান্ডো সিলভার পরিবর্তে স্টার্লিং মাঠে নামেন। ৭৮ মিনিটে ডি ব্রুইনার ক্রস থেকে জেসুসের হেড কুর্তোয়া ধরতে ব্যর্থ হলে সমতায় ফিরে সিটি। পাঁচ মিনিট পর ডি বক্সের ভিতর স্টার্লিংকে ফাউল করে বসেন কারভাহাল। স্পট কিক থেকে দলকে জয় উপহার দেন ডি ব্রুইনা।