রাষ্ট্রপতির কাছে তুরস্ক ও অস্ট্রেলিয়ার দূতের পরিচয়পত্র পেশ

593

ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের আবাসিক রাষ্ট্রদূত এবং অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার আজ বিকেলে এখানে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে পৃথকভাবে তাদের পরিচয়পত্র পেশ করেছেন। দূতদ্বয় হলেন, তুরস্কের মুস্তফা ওসমান তুরান এবং অস্ট্রেলিয়ার জেরেমি ক্রিস্টোফার কুর্টনায় ব্রুয়ার।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন বাসসকে জানান, রাষ্ট্রপতি দূতদের স্বাগত জানিয়ে ঢাকায় তাদের স্ব স্ব দায়িত্ব পালনকালে দেশ দুটির সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপতি তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ঐতিহাসিক এবং খুবই প্রাচীন বলে উল্লেখ করেন। তিনি এই সম্পর্ককে অত্যন্ত চমৎকার বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, দুটি দেশের সাংস্কৃতিক ও অনেক ক্ষেত্রে ঐতিহ্যগত বিষয়ে অনেক মিল রয়েছে। তিনি বলেন, দুটি দেশের মধ্যকার বিরাজমান এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পযার্য়ক্রমে আরো জোরদার হবে।
রাষ্ট্রপতি বৈঠকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যার উল্লেখ করে এ বিষয়ে সমর্থন প্রদানের জন্য তুরস্ক সরকারের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপতি ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রন জানান।
বৈঠকে রাষ্ট্রপতি বলেন, দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্ভাবনা খুঁজে বের করা এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এর কোন প্রতিফলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে কাজ করতে নতুন রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহবান জানান।
ঢাকায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকালে দু’দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছুবে বলে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, তুরস্ক সর্বদা বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়। তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এ দিকে অষ্ট্রেলীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠককালে আব্দুল হামিদ বলেন, অষ্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার।
বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করার জন্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ অষ্ট্রেলীয় সরকার ও সেদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
অষ্ট্রেলিয়ায় শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্তভাবে বাংলাদেশী পণ্য প্রবেশের সুযোগ দেওয়ায় তিনি বিশেষভাবে সেদেশের সরকারকে ধন্যবাদ জানান যা বাংলাদেশ ও অষ্ট্রেলিয়ায় মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্প্রসারণে সহায়ক হয়েছে।
আগামীতে এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো সম্প্রসারিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিদ্যমান রোহিঙ্গা সমস্যাকে বড় সংকট হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন যে, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে রাখাইন রাজ্যে অনুকুল পরিবেশ তৈরির জন্য অষ্ট্রেলিয়া সহায়তা করবে।
হাইকমিশনার বলেন, তার দেশ সর্বদা বাংলাদেশের সঙ্গে চমৎকার দ্বিক্ষীয় সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে অগ্রধিকার প্রদান করে এবং এদেশে তার দায়িত্ব পালনকালে দু’দেশের বন্ধন দৃঢ় করতে তার দেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
উভয় দূত বাংলাদেশে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সহায়তা কামনা করেন। এসময় রাষ্ট্রপতিও তাঁর পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
স্বাক্ষাতকালে রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে তাঁরা বঙ্গভবনে পৌঁছলে রাষ্ট্রপতির গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) একটি অশ্বারোহী চৌকস দল দূতদের গার্ড অব অনার প্রদান করে।