মেহেরপুরের কৃষকরা রূপবান জাতের শিম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন

526

মেহেরপুর, ২১ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : প্রায় ১৫ বছর ধরে রূপবান নামের জাতের শিমের আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন মেহেরপুরের কৃষকরা। বাজার দাম ভালো পাওয়ায় লাভবানও হচ্ছেন তারা। গাছ, গাছের পাতা সবুজ, ফুল ও ফল রঙিন। স্থানীয়ভাবে এটি রঙির ‘রূপবান শিম’ নামে পরিচিত। অনেকেই অল্প পুঁজিতে অল্প জায়গায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ রঙিন শিমচাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। রুপবান জাতের শিমচাষে কৃষকদের সুফল দেখে অনেক কৃষক উৎসাহিত হচ্ছেন এ জাতের শিমচাষে। জেলার মাঠে মাঠে এ রূপবান রঙিন শিমের আবাদ বেড়েই চলেছে। চোখ জুড়ানো এ রঙিন শিমসহ বিভিন্ন জাতের শিমের সমারোহ চোখে পড়ে মেহেরপুরের মাঠে মাঠে ও বিভিন্ন বাড়ির আঙ্গিনায়। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে অন্যান্য জেলায়।
সরেজমিনে মেহেরপুরের আমঝুপি গ্রামের মাঠে দেখা গেছে রঙিন শিম গাছ। ছোট-বড় মেঠোপথ ও বাড়ির আঙিনায় লাগানো হয়েছে রঙিন শিম।
শিমচাষী মোনাজাত আলী জানান দেশী শিমের চেয়ে রূপবান জাতের শিমের ফলন বেশী এবং বাজারে এর চাহিদাও ব্যাপক। তবে এ শিমে অনেক রোগ দেখা দিচ্ছে। নিয়মিত পরিচর্যা না করলে রাতের মধ্যেই শিম রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। এজন্য নিয়মিত কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। আরেক শিমচাষী আকতার আলী জানান তার একবিঘা জমিতে নয় হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ১০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছে সে। রোগ-বালায় দেখা না দিলে এখনও ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন ।
ইতোমধ্যেই ক্ষেত থেকে শিম তোলা শুরু করেছে চাষীরা। বাজারজাত করে ভোক্তদের মধ্যে শিমের চাহিদা দেখে আরও উৎসাহিত হচ্ছে শিমচাষীরা। এ রুপবান জাতের শিম বাজারে পেয়ে ভোক্তারাও বেশ আনন্দিত।
মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জের সিরাজুল ইসলাম জানান তিনি ৩ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে রঙিন রূপবান জাতের শিমচাষ করেছেন। রঙিন হবার কারণে বাজারে এ শিমের ব্যাপক চাহিদা। সবুজ শিমের চেয়ে প্রতি কেজিতে এক দুই টাকা বেশী দামে এ শিম বিক্রি করা যায়। এ পর্যন্ত সিরাজুলের উৎপাদন খরচ তুলে ৫ হাজার টাকা লাভ করেছেন। এখনও ৬০ হাজার টাকার বেচাকেনা হবে বলে তিনি আশা পোষন করছেন।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. মো. আক্তারুজ্জামান জানান গত ১৫ বছর ধরে মেহেরপুরে রঙিন রূপবান জাতের শিমচাষ হচ্ছে। এ রঙিন শিম সাধারণ শিমের চাষের পদ্ধতিতে চাষ হয়। বর্তমানে মেহেরপুর জেলায় প্রায় ২ হাজার বিঘা জমিতে রঙিন রূপবান জাতের শিমচাষ হচ্ছে।