সীমান্তে অনাকাংখিত মৃত্যু শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে উভয় দেশ সম্মত : ডিজি বিজিবি

531

ঢাকা, ২ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বলেছেন, সীমান্তে অনাকাংখিত মৃত্যু শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে ভারত ও বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে।
সম্প্রতি ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবি’র ডিজি সীমান্ত হত্যার সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর (বিএসএফ) প্রধানকে অনুরোধ করেন। এ বিষয়ে সম্মেলনে আলোচনার পর সীমান্তে হত্যাকান্ড শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে উভয় দেশ এক মত পোষন করে বলে জানান বিজিবি প্রধান।
বিজিবি’র ডিজি আজ রাজধানীর পিলখানাস্থ সদর দফতরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে একথা বলেন।
সম্মেলনে বিজিবি-মহাপরিচালক গভীর উদ্বেগের সাথে উল্লে¬খ করেন, এই বছরে সীমান্তে নিহতের সংখ্যা বিগত ৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছর সীমান্তে ৩৫ জনের আনাকাংখিত মৃত্যু হয়েছে। তবে এ হিসেব আমাদের। বিএসএফ’র হিসেবে এ সংখ্যা অনেক কম। বিএসএফ মহাপরিচালক জানান, সশস্ত্র সীমান্ত অপরাধীদের বিপজ্জনক হামলার শিকার হয়েও বিএসএফ সর্বোচ্চ সহিষ্ণুতা প্রদর্শন ও ন্যুনতম শক্তি প্রয়োগের নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে উভয়পক্ষ সীমান্ত অপরাধীদের দ্বারা অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম বন্ধ করাসহ তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করার ব্যাপারে একমত হন।
সাংবাদিকদের এক প্রশেরœ জবাবে বিজিবি ডিজি জানান, গত ২৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বর ৫ দিনব্যাপী ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এর মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সমন্বয় সম্মেলন অত্যন্ত আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে শেষ হয়েছে।
বিজিবি ডিজি বলেন, বর্তমান সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় বিজিবিকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বরেন, বিজিবি সেন্টমার্টিন দ্বীপের সীমান্ত এবং মিয়ানমারের সীমান্ত সুরক্ষার জন্য কিছু আধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেনার পরিকল্পনা করেছে।
এই বাহিনী দু’টি স্পিডবোট কেনারও পরিকল্পনা করেছে যা পদ্মা ও নাফ নদী এবং সুন্দরবন বরাবর ভারত-বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে টহল দেবে। এ ছাড়াও দুটি হেলিকপ্টারও ক্রয় করা হচ্ছে – এরমধ্যে একটি এ মাসে দেশে পৌঁছে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী কোন গোষ্ঠীর অস্থিত্ব নেই উল্লেখ করে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের ভূমি কোন অপরাধী অথবা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ব্যবহারের সুযোগ দেয়া হবে না।
সীমান্তে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ক্যাম্প বা আস্তানা থাকলে তা ধ্বংসের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে উভয় পক্ষই সম্মত হন।
বিজিবি মহাপরিচালক বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতের অভ্যন্তরে ফেনসিডিল এবং ইয়াবার কারখানা পরিচালনার বিষয়টি উত্থাপন করেন। বিএসএফ মহাপরিচালক জানান, এ ধরনের তথ্য বিএসএফকে জানানো হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাদক, অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক দ্রব্য চোরাচালান প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপগুলো আরও জোরদার করতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চলে একযোগে সমন্বিত টহল জোরদার করতে উভয় দেশ সম্মত হয়।
ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) নিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে কোনো উদ্বেগ নেই বলে জানিয়েছেন বিজিবি মহাপরিচালক।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, সম্প্রতি ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত সীমান্ত সম্মেলনে ভারতের এনআরসি ও সিএএ নিয়ে কোন ধরনের আলোচনা হয়নি।