বাসস ক্রীড়া-১৫ : বঙ্গবন্ধু বিপিএলের প্রথম সুপার ওভারের ম্যাচে সিলেটকে হারালো কুমিল্লা

461

বাসস ক্রীড়া-১৫
ক্রিকেট-বঙ্গবন্ধু বিপিএল
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের প্রথম সুপার ওভারের ম্যাচে সিলেটকে হারালো কুমিল্লা
ঢাকা, ২ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের প্রথম সুপার ওভার ম্যাচে সিলেট থান্ডারকে হারালো কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। তবে বিপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সুপার ওভার ম্যাচ ছিলো এটি।
সিলেট পর্বের দ্বিতীয় ও বঙ্গবন্ধু ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ৩০তম ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ১৪০ রান করে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। জবাবে ২০ ওভারে ১৪০ রানে অলআউট হয় সিলেট। এতে সুপার ওভারে গড়ায় ম্যাচটি। সেখানে জয় তুলে নেয় কুমিল্লা।
এই জয়ে প্লে-অফের দৌঁড়ে টিকে থাকলো কুমিল্লা। ৯ খেলায় ৪ জয় ও ৫ হারে ৮ পয়েন্ট কুমিল্লার। আর এই হারে প্লে-অফের আশা শেষ হয়ে গেল সিলেটের। ৯ খেলায় ১ জয় ও ৮ হারে ২ পয়েন্ট তাদের। শেষ তিন ম্যাচে জিতলেও প্লে-অফে খেলার কোন সুযোগ নেই সিলেটের।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেয় সিলেট থান্ডার। ব্যাট হাতে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন সিলেটের শ্রীলংকার বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান উপুল থারাঙ্গা। দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যান জাইলকে নিয়ে ৪ ওভারে ৪২ রান যোগ করেন থারাঙ্গা। এরমধ্যে মাত্র ১০ রান অবদান রেখে এবাদত হোসেনের শিকার হয়ে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে প্যাভিলিয়নে ফিরেন জাইল।
এরপর এ ম্যাচে অধিনায়ক সৌম্য সরকারকে নিয়ে ইনিংসের ভিত গড়েন থারাঙ্গা। কিন্তু বড় জুটি গড়তে ব্যর্থ হন তারা। সিলেটের অফ-স্পিনার সোহাগ গাজীর ডাবল আঘাতে থারাঙ্গা ও সৌম্য ফিরেন। ৫ রান করে ফিরেন সৌম্য। আর ৯টি চারে ৩১ বলে ৪৫ রান করেন এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা থারাঙ্গা।
থারাঙ্গার পর সিলেটের দুই বোলার এবাদত-রাদারফোর্ডের তোপে কুমিল্লার হয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রানের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। সাত নম্বরে নামা উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ১৪ বলে অপরাজিত ১৯ রানের কল্যাণে সম্মানজনক স্কোর পায় কুমিল্লা। সিলেটের এবাদত-রাদারফোর্ড ৩টি করে ও গাজী ২টি উইকেট নেন।
১৪১ রানের সহজ লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সিলেট। ৫ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জনসন চালর্স শুন্য ও রনি তালুকদার ২ রান করে ফিরেন।
এরপর শুরুর ধাক্কা সামাল দিলেও বেশি দূর যেতে পারেননি উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ মিথুন ও রাদারফোর্ড। ২৭ রানের জুটি গড়েন তারা। এই জুটি ভেঙ্গে যাবার পর ৩৩ রানে পাঁচ উইকেট হারায় সিলেট। ফলে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে তারা। মিথুন ১৩, রাদারফোর্ড ১৫ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে ফ্লেচার ১ রান করে ফিরেন।
এ অবস্থা থেকে দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করে সফল হন নাজমুল হোসেন মিলন ও সোহাগ গাজী। গাজীর ঝড়ো ব্যাটিং-এ লাইন-লেন্থহীন হয়ে পড়ে কুমিল্লার বোলিং। ২৯ বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন গাজী। এতে দলও পৌঁছায় তিন অংকে। কিন্তু এরপরই মিনি ধস নামে সিলেটের লোয়ার-অর্ডারে। ১৭তম ওভারে ৩ উইকেট তুলে নেন কুমিল্লার আফগানিস্তানের স্পিনার মুজিব উর রহমান। মিলন ১৩, নাইম হাসান শুন্য ও গাজী ৩১ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫২ রান করেন। ষষ্ঠ উইকেটে ৫২ বলে ৭০ রান যোগ করেন গাজী-মিলন।
১০৪ রানে সিলেটের অষ্টম উইকেট পতনের পর কুমিল্লার জয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাড়ায়। কিন্তু হাল ছাড়েনি সিলেটের নবম ও দশম ব্যাটসম্যান যথাক্রমে আফগানিস্তানের নবীন উল হক ও মনির হোসেন। নবম উইকেটে ১৬ বলে ৩১ রান যোগ করেন তারা।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৫ রানের সমীকরন দাঁড়ায় সিলেটের সামনে । আল-আমিনের প্রথম দুই ডেলিভারিতে দুই চারে ৮ রান নেন নবীন। তৃতীয় বলে আউট হন তিনি। এরপরের দুই বলে চার (ওয়াইডসহ) রান পায় সিলেট। ফলে শেষ বলে ২ রান দরকার পড়ে সিলেটের। কিন্তু ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন মনির। ফলে ১৪০ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচ টাই করে সিলেট। এতে ম্যাচটি সুপার ওভারে গড়ায়। নকীন ৭ বলে ৩টি চারে ১৫ ও মনির ১টি করে চার-ছক্কায় ১০ বলে ১৬ রান করেন। কুমিল্লার মুজিব ১২ রানে ৪ উইকেট নেন।
সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করে ৭ রান করে সিলেট। জবাবে ১ বল বাকী রেখে ১ উইকেট হারিয়ে ৮ রান তুলে ম্যাচ জিতে কুমিল্লা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স : ১৪০/৯, ২০ ওভার (থারাঙ্গা ৪৫, অঙ্কন ১৯*, রাদারফোর্ড ৩/১৯)।
সিলেট থান্ডার : ১৪০/৯, ২০ ওভার (গাজী ৫২, নাভিন ১৫, মুজিব ৪/১২)।
ফল : সুপার ওভারে জিতলো কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স।
ম্যাচ সেরা : মুজিব উর রহমান (কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স)।
বাসস/এএসজি/এএমটি/২৩০৫/-স্বব