নিউজিল্যান্ডকে দ্বিতীয়বারের মত হোয়াইটওয়াশ করতে চায় অস্ট্রেলিয়া

222

সিডনি, ১ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে চলতি সিরিজ বাদে এ পর্যন্ত ২৪টি দ্বিপাক্ষিক টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। এরমধ্যে একবার নিউজিল্যান্ডকে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে অস্ট্রেলিয়া। সেটি ২০০০ সালে। দ্বিতীয়বারের মত নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের সুযোগ পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। চলমান টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে অসিরা। সিরিজের তৃতীয় টেস্ট জিতলেই কিউইদের দ্বিতীয়বারের মত হোয়াইটওয়াশ করবে অস্ট্রেলিয়া। সেই লক্ষ্য নিয়েই সিরিজের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামবে স্বাগতিকরা। তবে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়ে জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করার জন্য মুখিয়ে আছে নিউজিল্যান্ড। আগামী ৩ জানুয়ারি ভোর ৬টায় সিডনিতে শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। ২০২০ সালের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয় চাইছে উভয় দলই।
গত ২৪দি দ্বিপাক্ষিক সিরিজের ১৪টিতে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। ৩টিতে জয় পায় কিউইরা। ৭টি হয় ড্র। ২০০০ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে অসিরা। কিউইদের দ্বিতীয়বারের মত হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ পেয়েছে অসিরা। প্রথম ম্যাচে পার্থে দিবা-রাত্রির টেস্টে ২৯৬ রানে এবং মেলবোর্নে পরের টেস্টে ২৪৭ রানে জয় পায় অসিরা। ফলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে সিরিজ জয় ইতোমধ্যে নিশ্চিত করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া।
অ্যাশেজ দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ শুরু করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের সাথে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ২-২ সমতায় শেষ করে তারা। এরপর দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে অসিরা। আর এবার নিউজিল্যান্ডকে নাস্তানাবুদ করে এক ম্যাচ বাকী রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া।
সিডনির স্পিন সহায়ক কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখে তৃতীয় টেস্টের জন্য অতিরিক্ত একজন স্পিনার মিচেল সুইপসনকে দলে ফিরিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দেশের হয়ে ১টি টি-২০ খেললেও, টেস্ট খেলা হয়নি ৩৯টি প্রথম শ্রেনির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সুইপসনের। ১১০টি উইকেট ঝুলিতে রয়েছে তার। তাই সিডনিতে অফ-স্পিনার নাথান লিঁওর সাথে আক্রমণে থাকতে পারেন সুইপসন।
সিরিজের প্রথম দুই টেস্টে পেসারদের সাথে সমানতালে লড়েছেন লিঁও। ১০টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। তবে উইকেট শিকারে এগিয়ে দু’দলের পেসাররাই। নিউজিল্যান্ডের নিল ওয়াগনার ১৪টি, টিম সাউদি ১২টি ও অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ১১টি উইকেট নিয়েছেন। মেলবোর্নে সিরিজে প্রথমবারের মত খেলতে নেমেই চমক দিয়েছেন পেসার জেমস প্যাটিনসন। ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
এদিকে, সিরিজের শেষ টেস্টে দলের সেরা পেস তারকা ট্রেন্ট বোল্টকে ছাড়া খেলতে নামবে নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাটিংএ ডান হাতে ব্যাথা পান তিনি। তার হাতে চিড় ধরা পড়েছে। কন্ডিশন বিবেচেনায় বোল্টের পরিবর্তে স্পিনার উইলিয়াম সমারভিলকে দলে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। এছাড়া সিডনির পিচ সর্ম্পকে ব্যাপক ধারনা রয়েছে সমারভিলের। কারণ অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া লিগে নিউ সাউথ ওয়েলস ও বিগ ব্যাশে সিডনি সিক্সার্সের হয়ে খেলে থাকেন তিনি। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আবু ধাবিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় সমারভিলের। প্রথম টেস্টেই ৭ উইকেট নেন তিনি। এরপর শ্রীলংকার মাটিতে দুই টেস্টেও ৭ উইকেট শিকার করেন ৩৫ বছর বয়সী সমারভিল।
সমারভিলের ব্যাপারে নিউজিল্যান্ড কোচ গ্যারি স্টিড বলেন, ‘সিডনি গ্রাউন্ডে সমারভিল অনেক ম্যাচ খেলেছে। তাই এখানকার কন্ডিশন ও পিচ সর্ম্পকে অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তাই তাকে দলে নেয়া।’
কন্ডিশন যেমনই হোক না কেন, শেষ টেস্টে জয় দিয়ে বছর শুরু ও সিরিজ শেষ করতে চান স্টিড, ‘বছরের শেষটা ভালো হয়নি আমাদের। অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম দুই টেস্টেই হেরেছি আমরা। এখন হোয়াইটওয়াশের মুখে দল। তবে আমাদের চিন্তায় হোয়াইটওয়াশ নেই। আমরা ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। নতুন বছরের প্রথম টেস্ট, নতুনভাবে সবকিছু শুরু করছি। জয় দিয়ে বছর শুরু করতে চাই আমরা। পাশাপাশি জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করতে চাই।’
নতুন বছরের প্রথম ম্যাচেও জয় ছাড়া কিছুই ভাবছেন না অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টিম পাইন। নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্যে তিনি বলেন, ‘আমরা নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করতে চাই। প্রথম দুই ম্যাচে দারুন পারফরমেন্স করেছে দল। এখন ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের সুযোগ আমাদের। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে মরিয়া সকলে। গেল বছরের শেষটার মত নতুন বছরের শুরুটা জয় দিয়ে করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদি।’