বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪ (২য় ও শেষ কিস্তি) : চেইন অব কমান্ড সশস্ত্র বাহিনীতে লক্ষ্য অর্জনে মুখ্য ভূমিকা রাখে : প্রধানমন্ত্রী

358

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪ (২য় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-পিজিআর-ভাষণ
চেইন অব কমান্ড সশস্ত্র বাহিনীতে লক্ষ্য অর্জনে মুখ্য ভূমিকা রাখে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে দেশের উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমরা দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণ ঘটেছে।
তাঁর সরকার পৃথিবীতে ৫৭তম দেশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মহাকাশকেও জয় করেছি। অর্থাৎ মহাকাশেও বাংলাদেশের পতাকা পৌঁছে গেছে।’
দেশের সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবকিছুই পর্যায়ক্রমে আমরা করে যাচ্ছি, বলেন তিনি।
জাতির পিতা ১৯৭৪ সালের ১৪ জুলাই বেতবুনিয়াতে ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেই এর বীজ বপন করে যান বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই একটা সিদ্ধান্তের পর বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তিত হয়ে একে একটি সম্মানজনক অবস্থায় নিয়ে গেছে। আজকে পদ্মাসেতু দৃশ্যমান’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা এ সময় ’৯৬ পরবর্তীতে সরকারে আসার পর পার্বত্য শান্তিচুক্তি করে ৬৪ হাজার শরণার্থীকে ভারত থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা, ভারতের কাছ থেকে গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়। পাশাপাশি স্থল সীমানা চুক্তির আওতায় ভারতের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ছিটমহল বিনিময়, আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে সমুদ্র সীমান্ত সমস্যার সমাধানসহ ২০০৮ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন কূটনৈতিক সাফল্য তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় পিজিআর সদস্যদের কল্যাণে তাঁর সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার সর্বপ্রথম ১৯৯৮ সালে গার্ডস সদস্যদের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে গার্ডস ভাতার প্রচলন করে। আপনাদের আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই রেজিমেন্টের সাংগঠনিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন করে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টকে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকরী ও শক্তিশালীরূপে পুনর্গঠিত করা হয়।
২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টকে স্বতন্ত্র ফরমেশন হিসাবে ঘোষণা করা হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে গণভবন সংলগ্ন ব্যারাক নির্মাণ করে আবাসন সমস্যার অনেকটাই সমাধান করা হয়েছে। এছাড়াও সেনানিবাসে গার্ডস পরিবারের জন্য ১৪-তলা বিশিষ্ট পারিবারিক বাসস্থানের নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আশা করি, এই ভবনটির নির্মাণ কাজ অল্প দিনেই সমাপ্ত হবে।
সার্বিক জাতীয় উন্নয়নের পাশাপাশি তাঁর সরকার সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নেও কাজ করে যাচ্ছে এবং সশস্ত্র বাহিনীর যত উন্নয়ন তা তাঁর সরকারের সময়েই হয়েছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী মানবিককারণে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় এক কোটি শরণার্থীর ভারতে আশ্রয় গ্রহণের বিষয়টিও স্মরণ করেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর তিনি এবং তাঁ ছোট বোন শেখ রেহানার রিফ্যুজি হিসেবে দেশের বাইরে দিন কাটানোরও উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে সশ¯্রবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসারসহ সংশ্লিষ্টদের দিনরাতের পরিশ্রম বিদেশে দেশের ভাবমূর্তিকে আরো উজ্জ্বল করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে যদি বাংলাদেশের জনগণ ভোট দেয়, আল্লাহর ইচ্ছা থাকেতো আমরা সরকার গঠন করবো। আর যদি না হয়, তাহলেতো আর সরকার গঠন করবো না। তবে, চিরদিন আপনাদের কথা মনে থাকবে যে, আপনারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরাপত্তার জন্য দিনরাত রোদ, বৃষ্টি, ঝড়কে উপেক্ষা করে যে দায়িত্ব কর্তব্য পালন করেছেন। কারণ, আমার জীবনের সঙ্গেই ঝুঁকি জড়িয়ে আছে। সেটা আমার সবসময় মনে থাকবে এবং সব সময় আপনাদের জন্য আমি দোয়া করি।
বাসস/এএসজি-এফএন/২০০০/আরজি