বাসস ক্রীড়া-৬ : নিজেদের মাঠে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় চট্টগ্রাম; প্রথম সাফল্যের সন্ধানে সিলেট

250

বাসস ক্রীড়া-৬
ক্রিকেট-বঙ্গবন্ধু বিপিএল
নিজেদের মাঠে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় চট্টগ্রাম; প্রথম সাফল্যের সন্ধানে সিলেট
চট্টগ্রাম, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : ঢাকায় প্রথম পর্ব শেষে আগামীকাল থেকে নিজ মাঠে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেটের লড়াই শুরু করছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ঢাকায় ৩ খেলায় ২ জয় নিয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শুরু করবে স্বাগতিকরা। নিজেদের মাঠে চট্টগ্রামের প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ ঢাকা প্রথম পর্বে তিন ম্যাচের সবক’টিতে পরাজিত হওয়া সিলেট থান্ডার। তাই চট্টগ্রামের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ নিতে মরিয়া সিলেট। অপরদিকে, ঢাকায় শেষ ম্যাচ জিতে চট্টগ্রামে আসে মাহমুদুল্লাহ’র দল। তাই চট্টগ্রামেও জয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চায় মাহমুদুল্লাহ-ইমরুলরা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও সিলেট থান্ডার।
বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলো চট্টগ্রাম ও সিলেট। ৫ উইকেটে সিলেটকে হারিয়ে বিপিএল শুরু করে চট্টগ্রাম। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৬২ রান করে সিলেট। ৪৮ বল খেলে ৪টি চার ও ৫টি ছক্কায় অপরাজিত ৮৪ রান করেন সিলেটের মোহাম্মদ মিঠুন। জবাবে ইমরুল কায়েসের ৩৮ বলে ৬১ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাঁদউইক ওয়ালটনের ৩০ বলে অপরাজিত ৪৯ রানে ৬ বল বাকী রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে চট্টগ্রাম।
জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও, পরের ম্যাচেই খুলনা টাইগার্সের কাছে হোচট খায় চট্টগ্রাম। খুলনা টাইগার্সের কাছে ৮ উইকটে বিধ্বস্ত হয় চট্টগ্রাম। প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৪৪ রান করে চট্টগ্রাম। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার রিলি রুশোর ৩৮ বলে অপরাজিত ৬৪ ও আফগানিস্তানের রহমনউল্লাহ গুরবাজের ১৯ বলে ৫০ রানে সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে খুলনা।
প্রথম দুই ম্যাচ শেষে ১টি করে জয় ও হার সঙ্গী হলেও, তৃতীয় ম্যাচে ঘুড়ে দাঁড়ায় চট্টগ্রাম। রংপুর রেঞ্জার্সকে ৬ উইকেটে হারের লজ্জা দেয় চট্টগ্রাম। প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৫৭ রান করে রংপুর। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাঁদউইকেট ওয়ালটনের ৫০ ও ইমরুল কায়েসের অপরাজিত ৪৪ রানের সুবাদে ১০ বল বাকী থাকতে জয়ের স্বাদ নেয় চট্টগ্রাম। তাই ঢাকায় শেষ ম্যাচে জয় নিজের মাঠে আসে চট্টগ্রাম।
এবার নিজেদের মাঠে চারটি ম্যাচ খেলবে চট্টগ্রাম। নিজেদের কন্ডিশনের সুবিধা কাজ লাগিয়ে জয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চান চট্টগ্রামের ইংলিশ কোচ পল নিক্সন। তিনি বলেন, ‘এটি বিপিএলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে বড় ধরনের পরীক্ষা আমাদের। চারটি খেলা রয়েছে এখানে। আমরা সবগুলো ম্যাচই জিততে চাই। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মোট ছয়টি ম্যাচ জিততে চাই। নয়তো পরের রাউন্ডে যাওয়া আমাদের জন্য কঠিনই হবে।’
চট্টগ্রামের উইকেট ও কন্ডিশন নিয়ে খুশী নিক্সন, ‘উইকেট খুবই ভালো এবং তাপমাত্রাও ভালো আছে। আগামীকালের ম্যাচের জন্য আমরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা আজ অনেক পরিশ্রম করেছি এবং মাঠে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।’
চট্টগ্রামের উইকেট বোলারদের সহায়তা করবে বলে মনে করেন নিক্সন, ‘এই উইকেটও বোলারদেরও সহায়তা করবে। তবে ভালো করতে হলে বোলারাদের সেরাটা দিতে হবে। আমি মনে করি, এখানেও হাই-স্কোরিং ম্যাচ হবে। এজন্য ব্যাটসম্যানদের জ্বলে উঠতে হবে। পাশাপাশি বোলারদেরও ভালো করতে হবে।’
টি-২০ ক্রিকেটে ছোট মার্জিনের বলে দলের খেলোয়াড়দের আরও সর্তক হবার পরামর্শ নিক্সনের। তিনি বলেন, ‘টি-২০ ক্রিকেট ছোট পরিসরের। এখানে সবসময়ই সজাগ থাকতে হয়। আমরা উন্নতির জন্য ভালোভাবে কাজ করেছি। আমরা ফিল্ডিং উন্নতি ও তরুণদের নিয়ে বেশি করে কাজ করেছি। শেষ দিকে এসে আমাদের ব্যাটসম্যানদের ১৬৫ থেকে ১৭০ রান করতে হবে। আমি মনে করি, ঢাকার চেয়ে এখানকার পিচ অনেক ভালো হতে পারে। আমাদের বোলাররা আরও উইকেট নিতে মরিয়া।’
আগামীকালের ম্যাচকে সামনে রেখে আজ অনুশীলনের মাঝে চমক দেখায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুশীলনের ফাঁকে বিয়োৎসব করে দলটি। বাংলাদেশের পতাকা হাতে আনন্দ উল্লাস করে দলের সকল সদস্য। এমন উল্লাসে নিজেদের গুটিয়ে রাখতে পারেনি বিদেশী খেলোয়াড়রাও। নিক্সনও বাংলাদেশের পতাকা হাতে বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপভোগ করেছেন।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের কাছে হার দিয়ে আসর শুরু করে সিলেট। চট্টগ্রামের বিপক্ষে ব্যাটসম্যানরা লড়াই করার পুঁজি দাড় করাতে পারলেও, পরের ম্যাচে মুখ থুবড়ে পড়ে তাদের। রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে ৯১ রানেই অলআউট হয় মোহাম্মদ মিঠুন-মোসাদ্দেকদের নিয়ে গড়া ব্যাটিং লাইন-আপ। ফলে ৮ উইকেটে ম্যাচ হারে তারা।
টানা দুই হার নিয়ে এবারের আসরের অন্যতম শক্তিশালী দল মাশরাফি-তামিমের ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামে সিলেট। ঐ ম্যাচে বোলাররা আশানুরুপ ফল করতে পারেনি। তাই ৭ উইকেটে ১৮০ রানের বড় স্কোর পায় ঢাকা। জবাবে ৭ উইকেটে ১৫৮ রান করে সিলেট। টানা তিন ম্যাচ হারের পর জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে তারা। চট্টগ্রামের মাটিতেই স্বাগতিকদের হারিয়ে এবারের আসরে প্রথম জয়ের স্বাদ নিতে চায় সিলেট।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স দল : মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েস, নাসির হোসেন, রুবেল হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, এনামুল হক জুনিয়র, মুক্তার আলি, পিনাক ঘোষ, নাসুম আহমেদ, জুনায়েদ সিদ্দিকি, ক্রিস গেইল, কেসরিক উইলিয়ামস, আভিস্কা ফার্নান্দো, রায়াদ এমরিট, রায়ান বার্ল, ইমাদ ওয়াসিম।
সিলেট থান্ডার দল : মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ মিঠুন, নাজমুল ইসলাম অপু, সোহাগ গাজী, রনি তালুকদার, নাঈম হাসান, দেলোয়ার হোসেন, মনির হোসেন, রুবেল মিয়া, শেরফেইন রাদারফোর্ড, শফিকউল্লাহ শাফাক, নাভিন-উল-হক, জনসন চার্লস, জীবন মেন্ডিস।
বাসস/এএসজি/এএমটি/১৮১৫/স্বব