সুস্থ শিশুর জন্য দরকার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন আবাস

854

ঢাকা, ২৪ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস): আঠার মাস বয়সী প্রান্ত’র প্রায় সময়ই অসুখ লেগে থাকে। বিশেষ করে সর্দি আর কাশি। এজন্য মাসের প্রায় দিনই তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হয় আর ওষুধ খেতে হয়। ওষুধ খাওয়ানোর সময় যেন যুদ্ধ করতে হয় প্রাš’Íর মা লাভলী আক্তারকে। ছেলে কোনভাবেই ওষুধ খেতে চায় না। ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন নিয়মিত যেন নেবুলাইজ করা হয় প্রান্তকে। তাও নিতে চায় না ছেলে। খুব কান্নাকাটি করে সে।
পরপর কয়েকবার প্রান্তকে দেখে ডাক্তার জানতে চান তাদের বাসা কোন জায়গায়। সেখানে ধুলো-বালি বেশি কিনা? ইত্যাদি। সব শুনে ডাক্তার বুঝলেন মূলত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকার কারনে প্রান্ত বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তিনি পরামর্শ দিলেন বাসায় যেন প্রতিদিন ধুলোবালি পরিষ্কার করা হয়। আর জীবানুমুক্ত রাখা হয়।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাইদুর রহমান বলেন, শিশুদের প্রতিটি বিষয়ই খুব স্পর্শকাতর। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম। আর তাই শিশুদের অতিরিক্ত যতœ নিতে হয়। বাসা-বাড়ি সব সময় পরিষ্কার করে রাখতে হয় যেন কোন ধুলোবালি জমে না থাকে। তাদের কাপড়ও পরিষ্কার করে রাখতে হবে। আর বাসা-বাড়ি সব সময় জীবানুমুক্ত রাখতে হবে। বাচ্চাদের পাশাপাশি বড়রাও যেন সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। অন্যথায় বড়দের জীবানু সহজে ছোট বাচ্চাদের সংক্রমন করতে পারে।
তিনি বলেন, যাদের বাচ্চা রয়েছে তাদের বাতাস চলাচল করতে পারে এমন ঘরেই থাকা উচিত। কারন বাতাসের কারনে জীবানুগুলো স্থির হতে পারেনা। তাই ঘরে অবশ্যই বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়াও বাইরের অতিথি আসলে তাদের সরাসরি নবজাতক বাচ্চার রুমে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। কারন বাইরে থেকে আসা অনেকের শরীরে বিভিন্ন জীবানু থাকে। আর তাই তাদের অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং জীবানুমুক্ত হয়ে শিশুর রুমে প্রবেশ করা উচিত।
ডা. সোহাগ বলেন, ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জিনিসগুলো এবং ওষুধ অবশ্যই শিশুদের হাতের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। এছাড়া বাথরুম পরিষ্কার করার সামগ্রী এবং ঘরের মেঝে পরিষ্কার করার জীবানুনাশক লিকুইড অবশ্যই শিশুদের হাতের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। বাইরে ব্যবহৃত জুতা, স্যান্ডেল ঘরের বাইরে রাখাই ভালো।
তিনি বলেন, বাসার রান্না ঘর অবশ্যই সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অন্যথায় মাছির উপদ্রব হতে পারে। আর মাছি হাড়ি-পাতিল, বাসন অথবা খাবারে বসতে পারে, যা শিশুদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতির কারন হতে পারে। কারন মাছির অনেক ধরনের জীবানু থাকতে পারে।
এছাড়াও বাথরুম অবশ্যই সব সময় জীবানুমুক্ত রাখতে হবে। বাথরুমে অনেক ধরনের জীবানু থাকে। এসব জীবানু থেকে ছোটরা যেমন আক্রান্ত হতে পারে তেমনি বড়রাও আক্রান্ত হতে পারে। তাই অবশ্যই বাথরুম জীবানুনাশক ব্যবহার করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
তিনি বলেন, অনেকইে বাড়ির মধ্যেই যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে রাখে। এটা কখনোই উচিত নয়। আর যে সব বাসা-বাড়িতে নবযাতক শিশু বা বড় শিশু রয়েছে সেসব বাসা-বাড়ি অবশ্যই পরিষ্কার রাখতে হবে। এজন্য প্রায় প্রতিদিনই বাসার মেঝে জীবানুনাশক দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। এছাড়াও বাসার আসবাবপত্র নিয়মিতভাবে ঝাড়– দিয়ে পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন।