সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ালে সার্ভিস প্রোভাইডারের জরিমানা : তথ্যমন্ত্রী

644

চট্টগ্রাম, ২২ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ালে সার্ভিস প্রোভাইডারের বিরুদ্ধে জরিমানার বিধিমালা তৈরী করা হচ্ছে।
এছাড়াও বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র আগামী মাস থেকে ১২ ঘন্টা সম্প্রচারে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র শুধু ক্যাবল টেলিভিশন হিসেবে সারাদেশে ও বিদেশে দেখা যায়। কিন্তু আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এটিকে টেরিস্টেরিয়াল চ্যানেল হিসেবেও উন্নীত করা হবে।
হাছান মাহমুদ আজ চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে “বিশ্ব টেলিভিশন দিবস” উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র, চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে।
বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক নিতাই কুমার ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ মহাপরিচালক (বার্তা) অনুপ কুমার খাস্তগীর।
বিশ্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি, চরিত্রহনন ও গুজব ছড়ানো এখন বড় সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্প্রচার নীতিমালা ইতিমধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। সম্প্রচার আইনও পাস হবে। সেটি হলে সম্প্রচার মাধ্যমের সাংবাদিকদের আইনি সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।
মন্ত্রী বলেন, যেহেতু সম্প্রচার নীতিমালা বিদ্যমান আছে, এই নীতিমালার আলোকে কিভাবে আইনি সুরক্ষা দেওয়া যায়, সেটি নিয়েও আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে বেসরকারি টিভির যাত্রা শুরু হয় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। এখন ৩৪টি চ্যানেল সম্প্রচার করছে। আরও ১১টি সম্প্রচারে আসার অপেক্ষায় আছে। ১১ বছরে বেসরকারি টিভির সংখ্যা সাড়ে তিন গুণ বেড়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এই খাতে। টেলিভিশন নতুন প্রজন্মের মনন তৈরিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কৃষ্টি-সংস্কৃতি লালনের পাশাপাশি দেশ- জাতি গঠনেও ভূমিকা রাখতে হবে।
টেলিভিশন যেন ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যবহার না হয়, সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে হাছান মাহমুদ বলেন, শিশু-কিশোরসহ আমাদের পুরো জনগোষ্ঠীর ওপর টেলিভিশনের প্রভাব ব্যাপক। যে মাধ্যমের এতবড় প্রভাব, সেটিকে আমরা জাতিগঠনের বিশাল কাজে লাগাতে পারি।
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের মনন তৈরি এবং একইসাথে ভবিষ্যতের স্বপ্নের ঠিকানায় দেশকে পৌঁছানোর জন্য মেধা, মূল্যবোধ ও দেশাত্মবোধসম্পন্ন জনগোষ্ঠী তৈরির সক্ষমতা আমাদের টেলিভিশনের রয়েছে।
ক্যাবল অপারেটরদের জন্য টিভিগুলোর সিরিয়াল করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ছয় দশকে ভারতে কখনো আমাদের টেলিভিশন দেখা যেত না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে এ কাজটি সম্পন্ন করেছি। টিভি বাড়ায় বিজ্ঞাপন ভাগ হয়ে যাচ্ছে। আগে ৪০০-৫০০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন বিদেশে চলে যেত, যা বন্ধ করা হয়েছে।
মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, এখন টিভির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। আগামী দিনের টিভি চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে এখনই ভাবতে হবে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংবাদ পরিবেশন করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাহলে দর্শকের আস্থা বাড়বে।
মো. আবদুল মান্নান বলেন, মিডিয়া মুক্তিযুদ্ধের সরকারের অনুকূলে কাজ করছে। যেসব তরুণ টিভিতে কাজ করছে তাদের উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে হবে। তাদের ঝুঁকি বেশি। তাদের ব্যাপারে সরকারের দিক থেকে অনেক কিছু করার আছে।
ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান অনুপম শীলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন বিএফইউজের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বাসসের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান কলিম সরওয়ার, একুশে পত্রিকার সম্পাদক আজাদ তালুকদার, চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির উদ্দিন তোতা, সাধারণ সম্পাদক লতিফা আনসারী রানা ও টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিক আহমেদ সাজিব।