টেকসই উন্নয়নের জন্য এলাকাভিত্তিক শিল্পোন্নয়নের বিকল্প নেই : বিসিআই সভাপতি

456

রংপুর, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাষ্ট্রিজ (বিসিআই)-’র সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেছেন, টেকসই জাতীয় উন্নয়নের জন্য এলাকাভিত্তিক ধারাবাহিক শিল্পোন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিকল্প নেই।
বিসিআই ও রংপুর চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি (আরসিসিআই)’র যৌথ উদ্যোগে শনিবার বিকেলে নগরীর আরসিসিআই অডিটরিয়ামে রংপুর বিভাগে ধারাবাহিক শিল্প উন্নয়ন কার্যক্রম প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
আরসিসিআই’র সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই’র সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিসিআই এর সাবেক সভাপতি আলহাজ¦ মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, বিসিআই এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রীতি চক্রবর্তী এবং পরিচালক দেলোয়ার হোসেন রাজা ও আবুল কালাম ভূইয়া, দিনাজপুর, নীলফামারী, রংপুর মেট্রোপলিটন, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, রংপুর উইমেন, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম এবং লালমনিরহাট চেম্বারের নেতৃবৃন্দ, রংপুর চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজতোবা হোসেন রিপন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা’র সিনিয়র রিপোর্টার মো: মামুন ইসলাম, নারী উদ্যোক্তা স্বপ্না রানী সেন ও নাফিসা সুলতানা।
রংপুর চেম্বারের পরিচালক মো. আশরাফুল আলম আল আমিনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর বিভাগের দশটি চেম্বারের নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিবৃন্দ ও সাংবাদিকবৃন্দ।
মুক্ত আলোচনা পর্বে ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাগন বলেন, ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা ও উন্নয়ন বৈষম্যের কারণে রংপুর অঞ্চলে শিল্পায়ন হচ্ছেনা। ফলে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়ায় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় রংপুর অঞ্চলে দারিদ্র্যের হার বাড়ছে।
তারা বলেন, গ্যাস সরবরাহ করা না হলে কোনভাবেই রংপুর অঞ্চলে শিল্পায়ন সম্ভব নয়। রংপুর বিভাগে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি এ অঞ্চলের জন্য আলাদা শিল্প ও ঋণনীতি, ভ্যাট ও কর নীতি প্রণয়ন, রংপুরে প্রস্তাবিত হাইটেক পার্ক দ্রুত স্থাপন, ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু, অঞ্চল ও জেলা ভিত্তিক শিল্পায়নের উদ্যোগ গ্রহণ, দক্ষ শ্রমিক তৈরিতে কারিগরি বিশ^বিদ্যালয় ও সার কারখানা স্থাপনসহ ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত ট্যাক্স হলিডে, ভ্যাট হলিডে এবং অতি অল্প সুদে ঋণ প্রদান চালু করা উচিত।
বক্তারা পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলের শিল্পায়নের গতি ত্বরান্বিত করতে বিভিন্ন সমস্যা নিরসন ও নীতিগত সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান।
উদ্যোক্তারা বলেন, রংপুর বিভাগে কৃষিভিত্তিক এবং তৈরি পোশাকশিল্প স্থাপনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও প্রতি জেলায় স্ব স্ব পণ্যের ওপর ভিত্তি করে শিল্প গড়ে তোলার ওপর তারা গুরুত্বারোপ করেন।
নারী উদ্যোক্তাগণ এসএমই প্রতিষ্ঠায় সরকার প্রদত্ত ঋণ প্রদান নীতিমালা যথাযথভাবে পরিপালন এবং হয়রানি ও জামানত-গ্যারান্টি ছাড়া ঋণ প্রদান নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ দাবি জানান।
তরুণ উদ্যোক্তারাও পুঁজির যোগানে স্বল্পসুদে ঋণ প্রদানের দাবি জানান।
শিল্পোদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কগুলোকে ছয় লেনে উন্নীতকরণের পাশাপাশি আকাশ পথসহ এ অঞ্চলের জেলাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বিসিআই-এর সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, এ অঞ্চলের জন্য জেলা ভিত্তিক শিল্পায়নের উদ্যোগ গ্রহণ, আলাদা শিল্প ও ঋণনীতি, ভ্যাট ও করনীতি প্রণয়নসহ স্বল্পসুদে ব্যাংকঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বিসিআই যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কার্যকর উদ্যোগ নেবে।
তিনি বলেন, সভায় যেসব প্রস্তাবনা-সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়, তা বিসিআই’র পক্ষ থেকে সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলে তুলে ধরে প্রয়োজনীয় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নেয়ার হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আরসিসিআই’র সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু বলেন, পিছিয়ে পড়া রংপুর অঞ্চলের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হলে শিল্পায়নের কোনো বিকল্প নেই। তিনি ২০৩০ সালের মধ্যে শিল্প সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে রংপুর বিভাগে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও আইটি পার্ক দ্রুত স্থাপনের জন্য বিসিআই’র সহযোগিতা কামনা করেন।