শুধুমাত্র নেপালি শিক্ষার্থীদের জন্যই বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা দেয় : রাষ্ট্রপতি

517

কাঠমান্ডু (নেপাল), ১৩ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, শুধুমাত্র নেপালি শিক্ষার্থীদেরকে চারবছর অথবা কোর্সের সময়কালের জন্য দীর্ঘমেয়াদী মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা প্রদানের সুবিধা দিয়ে থাকে বাংলাদেশ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির সহ-সভাপতি পুষ্প কামাল দাহাল (প্রচন্ড) আজ দুপুরে মেরিয়ট হোটেলে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে রাষ্ট্রপতি তাকে এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতির বরাত দিয়ে তাঁর প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন বলেন- ‘নেপাল সরকারের অনুরোধ বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশ ২০১৯ সালের জুন থেকেই নেপালি শিক্ষার্থীদেরকে দীর্ঘ চারবছর বা কোর্সের সময়কালের জন্য দীর্ঘমেয়াদী মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা প্রদান করছে।’
ঐতিহাসিক ও অনেক অভিন্ন বিষয়ের যোগসূত্রের ভিত্তিতে নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্ববহন করে বিষয়টি উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বহুপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে রূপান্তরিত করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি মনে করেন, ‘ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।’ তিনি বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সড়ক-নদী-আকাশ পথে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপরেও গুরুত্বারোপ করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, নেপালকে তৃতীয় দেশ হিসেবে ট্রানজিটসহ সমুদ্র সুবিধা নিয়ে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য নেপালের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি দু’টি বন্দরের সুবিধাসমূহ বাড়ানো হয়েছে এবং ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের দিকগুলোকে অনেক উন্নত করা হয়েছে।
আবদুল হামিদ বাংলাদেশ ও নেপালে বিদ্যুৎ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা, বিশেষ করে আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের ইস্যুতেও গুরুত্বরোপ করেন।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ ও নেপাল ঐতিহ্যগতভাবে বহুপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক ফোরামে তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে এবং দু’দেশের অভিন্ন আশা-আকাংখা পূরণে একসাথে কাজ চালিয়ে যাবে।
এর আগে, নেপালের জাতীয় পরিষদের (আপার হাউস) চেয়ারম্যান গণেশ প্রসাদ টিমিলসিনা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে এখানে এসে সাক্ষাৎ করেছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর সঙ্গে আলাপকালে ও দু’দেশের ঐতিহ্যগত ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আবদুল হামিদ গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করে বলেন, উভয় দেশকে বঙ্গোপসাগর বিষয়ক উদ্যোগের জন্য আগ্রহ সহকারে বিমসটেক-এর পাশাপাশি সার্কের প্ল্যাটফর্মের আওতাধীন ক্ষেত্রগুলোতে নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করা দরকার।
তিনি নেপালি জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে তাদের গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে তিনটি নির্বাচন (স্থানীয়, প্রাদেশিক এবং সংসদীয়) সফলভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে ২০১৫ সালে গৃহীত সংবিধানের প্রয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় অভিনন্দন জানিয়েছেন।
পরে বিরোধীদলীয় নেতা এবং নেপালি কংগ্রেস দলের সভাপতি শের বাহাদুর দেউবাও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সব দলের নেপালি নেতৃবৃন্দ তাঁর (রাষ্ট্রপতি) সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সুখ এবং বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষের জন্য, অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার কামনা করেছেন।
বৈঠকগুলোতে হুইপ আতিউর রহমান আতিক, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক, রাষ্ট্রপতির সচিব সম্পদ বাড়ূয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল শামীম-উজ-জামান ও প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।