বাসস দেশ-১
আজাদ-এসডিজি
সার্বিকভাবে এসডিজি বাস্তবায়ন ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে : মুখ্য সমন্বয়ক
॥ মোহাম্মদ আবু সাঈদ ॥
ঢাকা, ১ নভেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কারী মো. আবুল কালাম আজাদ এসডিজি বাস্তবায়নে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, সারা পৃথিবীতে এফডিআই যেখানে কমেছে, সেখানে এ বছর বাংলাদেশে শতকরা ৬৮ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে জিডিপি বাড়ছে, মাথাপিছু আয়ও বাড়ছে। সর্বোপরি, এসডিজি বাস্তবায়ন ভালভাবেই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আবুল কালাম আজাদ গতকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়স্থ নিজ কার্যালয়ে টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়ন নিয়ে বাসসের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে একথা বলেন।
এসডিজি বাস্তবায়নে আয় বৈষম্য নিয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, সারা পৃথিবীতেই আয় বৈষম্য বাড়ছে। বাংলাদেশের অবস্থাও তার বাইরে নয়। তবে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশের আয় বৈষম্য ততটা প্রকট নয়।
তিনি বলেন, এর বড় কারণ হচ্ছে, বর্তমান যুগ তথ্য-প্রযুক্তির যুগ। তথ্য-প্রযুক্তি সারাবিশ্বে এতটাই শক্তিশালী যে যার হাতে যত তথ্য-প্রযুক্তি আছে, সে তত শক্তিশালী। কারণ, তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোন দেশ যদি ১৫০ টি রোবট তৈরি কর, তাহলে সে দেশটি ১৫০ জন মানুষের বিকল্প তৈরি করল। এতে তাদের আয় বৃদ্ধি পায় এবং বৈষম্য তৈরি হয়।
আজাদ বলেন, যাদের কাছে অর্থ নাই, তাদের কাছে তথ্য-প্রযুক্তিও নেই। তারা ১৫০টি রোবট তৈরি করতে পারবে না, ১৫০ ব্যক্তির বিকল্পও তৈরি করতে পারবে না।
তিনি বলেন, কিন্তু বাংলাদেশের গ্রামীন অর্থনীতিতে যে মানি ফ্লো (টাকার প্রবাহ) রয়েছে, বিভিন্ন সোস্যাল সেফটি নেটের কারণে আমাদের দেশে আয় বৈষম্য ততটা প্রকট নয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আয় বন্টন যথার্থ হওয়ায় আয় বৈষম্য তেমনটা হচ্ছে না। দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে বিশেষ করে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, এমনকি জামালপুরের একটি অংশে যে মঙ্গা ছিল, এখন আর সেই মঙ্গা নেই।
আজাদ বলেন, বাংলাদেশের ফুড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম যেভাবে করা আছে, তাতে করে মানুষ না খেয়ে মারা যাওয়ার সিচুয়েশন তৈরি করা খুব ডিফিক্যাল্ট হবে। এর কারণ হলো, বাংলাদেশের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং তৈরি হয়েছে। সর্বোপরি বাংলাদেশের এসডিজি বাস্তবায়নের মান তা খুবই ভাল।
আজাদ বলেন, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ফাইন্যানসিয়াল একটি গ্যাপ আছে। সেই গ্যাপ পূরণ করার জন্য নানা ভাবে কাজ করা হচ্ছে। আমরা বিদেশী বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছি। দেশের ইকোনমিক জোনের অনেকগুলোতে জয়েন্ট ভেঞ্চারে বিনিয়োগ হচ্ছে। ফলে, দেশে এফডিআই বাড়ছে, এ বছরও অনেক বেড়েছে। সারা পৃথিবীতে এফডিআই যেখানে কমছে, সেখানে এবছর বাংলাদেশে শতকরা ৬৮ ভাগ বেড়েছে।
তিনি বলেন, সব কিছু মিলিয়ে দেশে জিডিপির পরিমানও যেমন বেড়েছে তেমনি মাথাপিছু আয়ও বাড়ছে, সার্বিকভাবে এসডিজির বাস্তবায়নটা অনেক ভাল।
এসডিজি বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, বেসরকারি খাত হলো বিশ্বের প্রতিটি দেশের জন্য উন্নয়নের ইঞ্জিন। আমরা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, পরিবেশ সহায়ক কর্মকান্ড, নারী বান্ধব, এনার্জি ইফিসিয়েনসিসহ প্রতিটি বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই, ডিসিসিআই, সিসিআই, তারাও কাজ করছে।
তিনি বলেন, তারা প্রত্যেকে নিজেদের প্যারামিটার ঠিক করবে। ভলান্টিয়ারলি প্যারামিটারগুলো ঠিক করার জন্য আমরা তাদের আহবান জানিয়েছি। তারা তাদের কাজ করছে।
আজাদ বলেন, এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো থেকে কোন এনজিও কোন কাজ করছে, তার ম্যাপিং করা হয়েছে। কোন এনজিও কোন এসডিজি বাস্তবায়নে কাজ করছে, তারও ম্যাপিং করা হয়েছে। যাতে করে কোন গ্যাপ থাকলে তা যাতে আইডেনটিফাই করা যায়।
তিনি বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে আমরা হোল সোসাইটকে ইনভলব করেছি। শিক্ষার্থীদের পাঠ্য-পুস্তকে এসডিজিকে অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে যুবকদের নিয়ে আমরা ওয়ার্কসপের আয়োজন করেছি।
তিনি বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, পর্যটন নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। অর্থাৎ হোল অব দ্যা সোসাইটিকে এসডিজির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
এসডিজি বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে আজাদ বলেন, ফাইন্যানসিং বড় চ্যালেঞ্জ, বাইরের দেশের সাহায্য ছাড়া এসডিজি বাস্তবায়ন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে, চ্যালেঞ্জ থাকবেই। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলোর সাহায্য পাওয়া কঠিন হবে।
তিনি বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে আর একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করা। পৃথিবীর উন্নত যে দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক ভূমিকা পালন করে, তারা সচেতনভাবে পরিবেশকে কম দূষিত করবে, তাদের সে উদ্যোগের অভাব রয়েছে। এছাড়া এসডিজি বাস্তবায়নে অন্যান্য যে অভীষ্টগুলো রয়েছে, তা বাস্তবায়নে তেমন কোন সমস্যা হবে না।
বাসস/এএসজি/এমএএস/০৯১৫/-আরজি
Home 0সকল সংবাদ বাসস দেশ বাসস দেশ-১ সার্বিকভাবে এসডিজি বাস্তবায়ন ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে : মুখ্য সমন্বয়ক