কুড়িগ্রামে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে রোগ প্রতিরোধক বিটি বেগুনের চাষ

754

কুড়িগ্রাম, ২২ মার্চ, ২০১৮ (বাসস) : কুড়িগ্রামে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিটি বেগুনের চাষ। রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাসম্পন্ন ও অধিক উৎপাদনশীল বিটি বেগুন স্বাদে-গুণে অতুলনীয়। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ রাজস্ব অর্থায়নে জেলায় ৭০টি প্রদর্শনী ক্ষেতে এ বেগুন চাষ করে এখন সাড়া ফেলেছে। বৃহস্পতিবার সকালে কৃষি বিভাগের আয়োজনে সদর উপজেলার খামার হলোখানা গ্রামে মাঠ দিবসে এসব তথ্য জানায় কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, স্থানীয় জাতের বেগুনে অনিয়ন্ত্রিতভাবে দিনে ২ বার কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। মানুষ শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব বেগুনের মানও হয় নি¤œমানের। বেগুনের সবচেয়ে ক্ষতিকর পোকা হলো ডগা ছিদ্রকারী পোকা। এ পোকার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এবং কীটনাশক প্রয়োগ না করে আদর্শ প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রামে কৃষি বিভাগ বিটি বেগুনের চাষ পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করে। এবার ৭০টি প্রদর্শনী প্লটে ৩০ একর জমিতে এই বেগুন চাষ করা হয়েছে। এই বেগুন চাষ করে কৃষককে আর ডগা ছিদ্রকারী পোকার জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে না। অন্যান্য সুষম সার প্রয়োগ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং স্বল্প খরচে অধিক উৎপাদন হচ্ছে। এতে কৃষকরা উৎসাহী হয়ে উঠছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ আরো জানায় চলতি বছর কুড়িগ্রাম জেলায় ৮৯২ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ করা হয়েছে।
প্রদর্শনী ক্ষেতের মালিক আব্দুল মোত্তালেব জানান, ৩০ শতক জমিতে বেগুন লাগিয়েছি। বিশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উৎপাদন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ৭ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। আশা করছি ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে।
রাজস্ব অর্থায়নে চলতি মৌসুমে নতুন জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণে স্থাপিত প্রদর্শনীর মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুর রশিদ সরকার। স্থানীয় কৃষক আব্দুস ছাত্তারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ার সদরুল আলম, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুজ্জামান, উপ-সহকারি কৃষি অফিসার আব্দুল মজিদ সরকার, সিদ্দিকুর রহমান, আব্দুল গফ্ফার প্রমুখ।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুর রশিদ সরকার জানান, বিটি বেগুন পরিবেশ সম্মত উন্নতজাতের সুস্বাদু বেগুন। এই বেগুন ডগা ছিদ্রকারী পোকা সহনশীল। এতে সুষম সার প্রয়োগ করলেই হয়। কীটনাশক সার প্রয়োগ করতে হয় না। সরকারিভাবে চলতি বছর ৭০টি ক্ষেতে বীজ, সুষমসার প্রয়োগ করে প্রদর্শনী বাগান তৈরি করা হয়েছে। যা কৃষক ও ভোক্তাদের আগ্রহী করে তুলেছে।