বাসস ক্রীড়া-৯ : বাংলাদেশকে নতুন পথ দেখানোর পাশাপাশি বোলিং ফিটনেস বাড়ানোই ডোমিঙ্গোর মূল লক্ষ্য

131

বাসস ক্রীড়া-৯
ক্রিকেট-বাংলাদেশ-ডোমিঙ্গো
বাংলাদেশকে নতুন পথ দেখানোর পাশাপাশি বোলিং ফিটনেস বাড়ানোই ডোমিঙ্গোর মূল লক্ষ্য
ঢাকা, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস): প্রশিক্ষন সংস্কৃতিতে পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের। দলটি নেটের সংক্ষিপ্ত সেশন পরিহার করে আরো বেশী দীর্ঘমেয়াদি ভার্সনে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। রাসেল ডোমিঙ্গো যোগ দেয়ার পর অনুশীলন কার্যক্রমে ব্যাপক সংস্কার করা হচ্ছে। অনুশীলনের ব্যপ্তিকালেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এর আগে খেলোয়াড়রা অনুশীলনে ব্যয় করতো তিন ঘন্টা। ফুটবল দিয়ে ওয়ার্মআপ, শারিরিক অনুশীলন, বোলিং, ব্যাটিং এর পাশাপাশি ফিল্ডিং ও ক্যাচ অনুশীলনের জন্য এই সময়টি ছিল খুবই আটশাট।
যে কারণে মাত্র ২০ থেকে ৩০ মিনিট ব্যাটিংয়ের সময় পেত একজন ক্রিকেটার। পেস বোলাররাও অনুশীলনের জন্য ৩০ মিনিটের বেশি সময় খুব একটা পেত না। এই সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩০টি বল করার সুযোগ রয়েছে। এই প্রক্রিয়ার কারণ হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট বেশি মনোযোগ দিত খেলোয়াড়রা যাতে বেশি ক্লান্ত না হয়। মাঠের লড়াইয়ে যাতে তরতাজা থেকে দীর্ঘ সময় বল করতে পারে।
ডোমিঙ্গোর অধীনে এসে একজন বোলার দীর্ঘ সময় ধরে অন্তত ৬০বার বল করার সুযোগ পাচ্ছে। ব্যাটিংয়েও বাড়ানো হয়েছে সময়। ক্রিক বাজকে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের এই প্রধান কোচ বলেন,‘ আপনি যত বেশি ব্যাট করবেন, তত বেশী ভাল বোধ করবেন। এটি ছাড়া জাতীয় ক্রিকেট দলের নতুন প্রশিক্ষন ছক তৈরী করার কোন মানে হয় না। নেট অনুশীলন শেষে একজন ব্যাটসম্যান বিশ্রামের সুযোগ পাবেন। যেটি সচরাচর এক থেকে দুই ঘন্টা দেয়া যায়।
বোলাররাও তাদের স্পেল শেষ করে অনুরূপ বিশ্রাম করতে পারবেন। তবে তাদেরকে অবশ্যই দীর্ঘ সময় ধরে বোলিং করতে হবে।’
বাংলাদেশে পৌছানোর দুই দিন পর ডোমিঙ্গো তার অনুশীরনের ক্ষেত্র তৈরী করার কাজে নেমে পড়েন। যেখানে যোগ দিয়েছিলেন আফগানিস্তান টেস্টের জন্য ঘোষিত প্রথমিক স্কোয়াডের ৩৫ খেলোয়াড়। বোলিং কোচ চার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ড ও ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকও প্রধান কোচের সঙ্গে একই ভাবে কাজে নেমে পড়েন। অনুশীলনে ফিটনেসের মান বাড়ানোর দিকেও বাড়তি নজর দেয়া হয়।
নিজের প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে টাইগার দলের প্রধান কোচ বলেন,‘ আমি বাংলাদেশ দলের আগের কোচদের প্রশিক্ষনের মান সম্পর্কে কিছু জানিনা। আপনারা কি বলতে চাইছেন তাও জানিনা। তবে রায়ান বেশ সক্রিয়ভাবেই তার কাজ করেন। আর বোলারদে প্রত্যাশা পুরণের জন্য চার্ল-এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আমরা অনুশীলন সেশনে সর্বোচ্চ তীক্ষèতা অবলম্বন করতে চাই। খেলোয়াড়দের কাছ থেকেই কাজের চাপ নেয়ার বিষয়টি পেতে চাই। আমরা এটি নিশ্চিত করতে চাই, যেকোন প্রতিকুল পরিবেশে তাদের ফিটনেস যেন ঠিক থাকে। আমার মনে হয় বোলিং ফিটনেসের লেবেলের উন্নতির মাধ্যমে আমরা নতুন মাত্রায় প্রবেশ করতে পারব।’
নবনিযুক্ত কোচ এটি স্পস্ট করতে চান, যখন খেলোয়াড় কোন সুনির্দিষ্ট একটি বিষয়ে অনুশীলন করবে তখন সেটিতে বেশী করে সময় দিতে হবে। যাতে ওই সেশন থেকেই তার উন্নতি ফুটে উঠে। কোন পেস বোলার যখন অনুশীলনে যাবেন তখন এটি নিশ্চিত করতে হবে সে যেন গ্যাস মুক্ত থাকে। ডোমিঙ্গো বলেন, ‘ফিটনেসের বেলায় বিষয়টি নিয়ে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে ফাস্ট বোলারদের ক্ষেত্রে। যে সব বিষয়গুলো আমাদের কাছে উদ্বেগের সেগুলো নিয়ে কোন রকম আপোষ করা যাবে না।
বিশ্ব সেরা ফাস্ট বোলাররা একই পিচে দিনে ১৮ থেকে ২২ ওভার বল করতে সক্ষম। তরুন কোন ফাস্ট বোলারের সেই যোগ্যতা আছে কিনা আমি নিশ্চিত নই। এই বিষয়ে এখনো কাজ চলছে। তবে গত দুই সপ্তাহে এই কাজে অনেকটাই অগ্রগতি হয়েছে। আমি চাই তারা একই পিচে এবং সুনির্দিস্ট একটি জায়গাতেই দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্পেলের বোলিং করুক। এটি নিয়েই গত দুই সপ্তাহ ধরে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
রাসেল ডোমিঙ্গোর সঙ্গে বাংলাদেশ নিশ্চিত একটি নতুন যাত্রা শুরু করেছে। দক্ষিন আফ্রিকার এই কোচ একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। তার আমলে খেলোয়ড়রা যাতে দীর্ঘ সময় কাজ করার চাপ নিতে পারে সেভাবে গড়ে তুলতে চান। তারা যেন মানষষিক ও শারিরিক উভয় চাপই সহ্য করতে পারে। অনেক খেলোয়াড়ই ইতোমধ্যে স্বীকার করেছেন যে এই প্রশিক্ষন প্রক্রিযায় তারা উপকৃত হচ্ছেন। যা ভবিষ্যতে তাদের কাজে লাগবে।
বাসস/ওয়েবসাইট/এমএইচসি/১৯১৫/স্বব