বিদেশী কূটনীতিকদের কাছে বিএনপির নালিশ দেউলিয়াত্ব প্রকাশ পায় : তথ্যমন্ত্রী

650

চট্টগ্রাম, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানুষ রাজনীতি করে জনগণের জন্য। যদি তাদের কোন ওজর আপত্তি থাকে সেটা নালিশ দিবে বাংলাদেশের জনগণের কাছে। কিন্তু বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বিদেশী কূটনীতিকদের কাছে গিয়ে ঘনঘন নালিশ দিচ্ছে এটার মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বই প্রকাশ পায়।
তিনি বলেন, একজন নারী সাংবাদিককে হেনস্থা করার কারণে ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই নারী সাংবাদিক। ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন এফিলেড ডিভিশনে গিয়েছিলেন। এফিলেট ডিভিশন তাকে নিম্ম আদালতে হাজির হতে বলেছেন। নিম্ম আদালত তার জামিন বাতিল করেছেন। এটি সম্পূর্ণভাবে আদালতের বিষয়, রাজনৈতিক বিষয় নয়। এটাও তারা বিদেশীদের কাছে নালিশ দিয়েছেন।
অথচ ড. কামাল হোসেনের মতো মানুষ যিনি আইন এবং আদালতের কথা বলেন। আইনের শাসনের কথা বলেন। তিনি আবার আদালতের বিরুদ্ধে গিয়ে বিদেশীদের কাছে অভিযোগ দেন এটি সত্যিই দুঃখজনক। এটার মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বই প্রকাশ পাচ্ছে জনগণের কাছে।
তিনি আজ বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বাংলাদেশ-ভারত নজরুল সম্মেলন ২০১৯-এ প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে বিএনপি নেতা ড. আবদুল মঈন খাঁনের বাসায় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মার্কিন রাষ্ট্রদুতসহ কয়েকজন কুটনীতিকের সাথে বৈঠকের বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন।
নজরুল একাডেমি ঢাকার সভাপতি মিন্টু রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্টানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মোহীত উল আলম, নজরুল ইনস্টিটিউট এর উপ-পরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক নিতাই কুমার ভট্টাচার্য, নজরুল একাডেমি চট্টগ্রামের সাধারন সম্পাদক ফাহমিদা রহমান। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ ও ভারতের নজরুল সংগীতের বরেণ্য শিল্পীগণ, যার মধ্যে আছেন বাংলাদেশের ফেরদৌস আরা এবং ভারতের শিল্পী মঞ্জুষা চক্রবর্তী ও তুহিন পাল।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আদালত কর্তৃক দুর্নীতির দায়ে শাস্তি প্রাপ্ত আসামী। তাকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করা হয়নি। কারাগারে তিনি যেধরণের সুযোগ সুবিধা পান বৃটিশ ভারত থেকে শুরু করে বাংলাদেশ ও পাক ভারতের ইতিহাসে কোন বন্দি এরকম সুযোগ সুবিধা পায়নি। ভারতের বিখ্যাত রাজবন্দিদের অনেক বই পড়েছি কোন বন্দি তার পছন্দসই গৃহপরিচারিকা রাখার সুযোগ পেয়েছে কিনা জানা নাই।
কক্সবাজারে এক রোহিঙ্গা তরুণী পরিচয় গোপন করে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের স্কুল কলেজে পড়া শোনা করে বাংলাদেশের একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন প্রথম আলো বন্ধু সভাসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কক্সবাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছেন। কিন্তু তারা ধীরে ধীরে নানা অপরাধের সাথে যুক্ত হচ্ছে। এমনকি তারা সেখানে স্থানীয় জনগণের উপর হামলা করছে। কয়েকজন তাদের হাতে হত্যার শিকার হয়েছে। তারা ধীরে ধীরে যেভাবে বিধ্বংসী রূপ ধারণ করছে এটা অত্যন্ত ভাবার বিষয়।
বাংলাদেশের জনগোষ্ঠির সাথে মিশে যাওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের বেআইনিভাবে কোন ধরণের সহযোগিতা না করার অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশে কোনভাবে আইডি কার্ড ও পাসপোর্ট করতে না পারে, এব্যাপারে তাদের যাতে কেউ সহযোগিতা না করেন সে ব্যাপারে সরকারের স্পষ্ট নির্দেশনা আছে। তারা মায়ানমারের নাগরিক। তাদের অনেকেরই বাংলাদেশী নাগরিক বনে যাবার প্রচেষ্টা থাকে। এক্ষেত্রে যারা সহযোগিতা করেছেন তারা রাষ্ট্রের আইন ভঙ্গ করেছেন। অপরাধ করেছেন। প্রথম আলোর বন্ধু সভায় যদি তাকে সদস্য করা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে তারাও রাষ্ট্রের আইন ভঙ্গ করেছে। এখন তারা বহিষ্কার করলেও বন্ধু সভার সদস্য বানানোর সময় খতিয়ে দেখা উচিৎ ছিল কাকে বন্ধু সভার সদস্য করছেন। এই রোহিঙ্গা তরুণীকে নাগরিক হতে ও স্কুল-কলেজে ভর্তি হতে যারা সুযোগ করে দিয়েছেন তারা সবাই আইন ভঙ্গ করেছেন, অপরাধ করেছেন।
নজরুল সম্মেলনে উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের চাওয়া সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ রচনা করেছেন। বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা অর্জন করে তখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কাজী নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। কবি নজরুল লিখেছিলেন, মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও..। তিনি যখন মৃত্যুবরণ করেন, তার ইচ্ছা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশেই তাকে কবর দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিদ্রোহী কবি ছিলেন, দ্রোহের কবি ছিলেন। সেনাবাহিনীতে কাজী নজরুলের যোগ দেওয়ার অন্যতম একটা কারণ ছিল, তিনি মনে করেছিলেন সেনাবাহিনীতে গিয়ে যদি প্রশিক্ষণ নেয়া যায় তাহলে সে প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে দেশকে ব্রিটিশদের হাত থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে। সে কারণে তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন।