বাসস দেশ-২৭ : ১০ম সংসদ নিয়ে টিআইবি’র প্রতিবেদন একপেশে ও উদ্দেশ্যমূলক : তথ্যমন্ত্রী

255

বাসস দেশ-২৭
হাছান-টিআইবি-প্রতিবেদন
১০ম সংসদ নিয়ে টিআইবি’র প্রতিবেদন একপেশে ও উদ্দেশ্যমূলক : তথ্যমন্ত্রী
ঢাকা, ২৯ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস) : ১০ম সংসদের ওপর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’এর প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ একে একপেশে ও অসৎ উদ্দেশ্যমূলক বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রতিবেদনটিতে টিআইবি অসংখ্য ভুল তথ্য ও উপাত্ত দিয়েছে। তারা এর আগে পদ্মা সেতুর ওপরও এমন উদ্দেশ্যমূলক প্রতিবেদন দিয়েছিল।
মন্ত্রী আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তৃণমূল বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনায় এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা।
ড. হাছান বলেন, টিআইবি এর আগে অনেক ভুল তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদন করেছে। এর আগে টিআইবি ২০১০ সুন্দরবনের সঙ্গে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কেলেঙ্কারির বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিয়েছিল। প্রতিবেদন তৈরিতে তারা ২০০৭ ও ২০০৮ সালের উপাত্ত ব্যবহার করেছিল, যখন কিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল।
তিনি বলেন, কিন্তু তারা সময়টি উল্লেখ করেনি, সুতরাং দেখে মনে হয়েছিল যে আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতি করছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের প্রতিবেদন জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি করে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা গণতান্ত্রিক দেশের জন্য সহায়ক হবে না। এজন্য টিআইবি’র জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। কিন্তু তারা তা করছে না।
এসময় তিনি জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় এবং দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক প্রতিবেদন না করার জন্য টিআইবি’র সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
হাছান বলেন, আমরা গঠনমূলক সমালোচনা চাই, যা একটি গণতান্ত্রিক দেশকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলক ও অন্ধ সমালচনা জনগণকে বিভ্রান্ত করে।
রোহিঙ্গা বিষয়ে বিএনপি’র এক সভা সম্পর্কে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন তাদের উদ্দেশ্য নয়। তাদের উদ্দেশ্য পানি ঘোলা করা।
তিনি এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এ ধরণের অপরাজনীতি না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার রোহিঙ্গা বিষয়ে সঠিক পথেই এগোচ্ছে। সরকার এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে জড়িত। প্রত্যাবাসনের তারিখও ঠিক করা ছিল। কিন্তু কিছু এনজিও আর রাজনীতিক দল এটি নিয়ে খেলায় তা হতে পারেনি। আমি আশা করি প্রত্যাবাসন শিগগিরই শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ড একটি নারকীয় ঘটনা উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আইনমন্ত্রী এরই মধ্যে এই হত্যাকান্ডের পেছনে যারা কলকাঠি নেড়েছেন তাদের চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ভয়াবহ ওই ঘটনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপ-প্রধান জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন। তার বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে তিনি তা প্রমাণ করেছেন। ড. হাছান আরো বলেন, “জিয়াসহ সব মাস্টারমাইন্ডকে বিচারের আওতায় আনা হবে।”
আওয়ামী লীগ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কখনও রাজনীতি করেনি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকে জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অন্যান্য দিবস পালন করতে পারেন। যদি কেউ সহযোগিতা চায়, আওয়ামী লীগ তাদেরকে সহযোগিতা করবে। তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগান নিয়েও কখনও রাজনীতি করেনি।’
ড. হাছান বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গেছেন ও দৃঢ়তার সাথে তাঁর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এগিয়ে চলছেন।
নাজমুল হুদা সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনকে জাতীয় শোক দিবস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী পালনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকব এবং আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তৃণমুল বিএনপি’র কো-চেয়ারম্যান কে এ জাহাঙ্গীর মজুমদার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল এ্যালায়েন্স (বিএনএ)’র মহাসচিব ড. শেখ হাবিবুর রহমান ও তৃণমুল বিএনপি’র মহাসচিব ব্যারিস্টার আকবর করিম প্রমুখ।
পরে, এক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
বাসস/পিএসবি/অনুবাদ-এএএ/এসই/১৯৪৮/-এইচএন