বাজিস-১ : চাঁদপুরে আখের বাম্পার ফলন

257

বাজিস-১
চাঁদপুর- বাম্পার ফলন
চাঁদপুরে আখের বাম্পার ফলন
চাঁদপুর, ২৮ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস): জেলায় এবার আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকদের মুখে ও হাসি ফুটেছে। জেলার মতলব উত্তর উপজেলা ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আখ চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে আখের খুচরা ও পাইকারি বিক্রি। আগামি এক মাসের মধ্যে অধিকাংশ জমির আখ বিক্রি হয়ে যাবে।
চাঁদপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৮ উপজেলার আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৭৫ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৬৭০ হেক্টর। এর মধ্যে মতলব উত্তর উপজেলায় ২১০ হেক্টর।ফরিদগঞ্জ উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৩৩৫ হেক্টর, সদর উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৬৫ হেক্টর, মতলব দক্ষিণে ৫ হেক্টর,হাজীগঞ্জে ৮ হেক্টর, শাহরাস্তি ৩৫ হেক্টর, কচুয়া ৫ হেক্টর ও হাইমচর উপজেলায় ৭ হেক্টর।মতলব উত্তর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা সেচ প্রকল্পের আওতায় হওয়ায় জমিগুলো কৃষি উপযোগী থাকে বছর জুড়ে। তাই এখানে বেশি পরিমানে চাষ হয়ে থাকে।
জেলার ৮ টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,এবছর আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। আখ চাষিরা জমিতে কাজ করছেন। কেউ আখ তুলছেন, কেউ আঁটি বাঁধছেন। আবার অন্য শ্রমিক এসব আখ সড়কে নিয়ে স্তূপ করে রাখছেন।
চাঁদপুরের মতলব উত্তরের কলাকান্দা ইউনিয়নের দশানী এলাকার ইসহাক সিকদার জানান, তিনি এ বছর ৫৫ শতাংশ জমিতে আখের চাষ করেছেন। খরচ বাদ দিয়ে তার কমপক্ষে ৩৫ হাজার টাকার মতো লাভ হবে।
হানিরপাড় গ্রামের কৃষক জাইনুদ্দিন প্রধানিয়া জানান, ‘তারা দেড় যুগ ধরে আখের চাষ করে আসছেন, সেচ প্রকল্প হওয়ার কারণে তাদের আখের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। এ বছর তাদের জমিতে ২০৮ নম্বর যা ‘চাঁদপুর গ্যান্ডারি’ নামে পরিচিত। এটিই তারা আবাদ করেছেন। চাঁদপুরে গ্যান্ডারি স্থানীয়ভাবে খুচরা এবং পাইকারি দু’ভাবে বিক্রি হচ্ছে। কারণ এ আখ খুব সহজেই চিবিয়ে খাওয়া যায়।
মতলব দক্ষিণের নারায়নপুর এলাকার কৃষক লতিফ মিয়া জানান, আমাদের এলাকায় আখ বিক্রি শুরু হয়েছে। আগামি ১ মাসের মধ্যে সব আখ বিক্রি হয়ে যাবে। তবে কিছু উঁচু জমির আখ দেরিতে বিক্রি হয় এবং ওইসব কৃষক দামও ভালো পান। এখন পাইকাররা এসে পুরো জমির আখ একসঙ্গে ক্রয় করে নিচ্ছে। এবার দাম ও ভালো পাবো বলে আশা করেন তিনি।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও এলাকার কৃষক জসিম উদ্দিন জানান, তিনি বিগত কয়েক বছর যাবৎ আখের চাষ করে আসছেন, এবারো ৮০ শতক জমিতে আখ চাষ করেছেন, আখের গায়েব রং দেখতে ভালো হয়েছে এবং মোটা ও লম্বা সাইজের হয়েছে তাই এ আখের চাহিদা ও বেশি বলে তিনি জানান। তিনি এবার সব খরচ বাদ দিয়ে ৪৫/৫০ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন বলেও জানান।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি অফিসার মো.সালাউদ্দিন জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় মতলবেসহ চাঁদপুরে এবার আখের আবাদ খুবই ভালো হয়েছে। আখ লাভজনক হওয়ার কারণে কৃষকদেরও দিন দিন আখ আবাদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। চাঁদপুর গ্যান্ডারি নামক আখ এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রফতানি হচ্ছে। বিভিন্ন হাটে-বাজারে ও আখের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার আশিক জামিল জানান, এবছর ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ৩৩৫ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। আমরা নিয়মিত কৃষক ভাইদেরকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছি। আখের বাম্পার ফলনে কৃষক খুশি এবং আর্থিক ভাবে ও লাভবান হবে। আগামিতে আরো বেশি জমিতে আখ চাষের জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে। ফরিদগঞ্জ উপজেলার আখ জেলা ছাড়িয়ে পাশের জেলা লক্ষীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট ও ঢাকার বাজারে বিক্রি হয়, তাই কৃষকরা ভালো দাম ও পায়।
বাসস/সংবাদদাতা/১০-৩৫/নূসী