বাসস ক্রীড়া-১২ : সারিকে নিয়েই আরেকটি সিরি এ শিরোপা জয়ের বাজিতে নেমেছ জুভেন্টাস

243

বাসস ক্রীড়া-১২
ফুটবল-সিরি এ-জুভেন্টাস-প্রিভিউ
সারিকে নিয়েই আরেকটি সিরি এ শিরোপা জয়ের বাজিতে নেমেছ জুভেন্টাস
মিলান, ২০ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস/এএফপি) : নতুন কোচ মরিজিও সারির অধীনে সপ্তাহের শেষভাগে আরেকটি সিরি এ শিরোপা জয়ের মিশনে নামছে ইতালীর বহু শিরোপা জয়ী ক্লাব জুভেন্টাস।
শনিবার পারমায় গিয়ে টানা নবম শিরোপা জয়ের মিশন শুরু করবে তুরিন জায়ান্টরা। তবে ওই ম্যাচে হয়তো সারিকে ছাড়াই লড়তে হবে জুভেন্টাসের। কারণ ৬০ বছর বয়সি এই কোচ সোমবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাই ম্যাচ চলাকালে তিনি হয়তো সাইড বেঞ্চেই থাকবেন।
চেলসির হয়ে প্রিমিয়ার লীগে অদম্য একটি মৌসুম কাটানোর পর ইতালীতে ফিরেছেন সারি। এর আগে নিজ শহরে নাপোলির কোচ হিসেবে তিনটি মৌসুম কাটিয়েছেন তিনি। বিরামহীন ধুমপায়ী সারি ম্যাসিমিলিয়ানো আলেগ্রির পরিবর্তিত কোচ হিসেবে জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছেন। যার অধীনে ক্লাবটি সর্বশেষ পাঁচটি লীগ শিরোপা জয় করেছে। ঐতিহ্যগতভাবেই তাকে বিরতি দিয়েছে ক্লাবটি।
গত মৌসুমে ঐতিহ্যবাহী সাদাকালো ডোরাকাটা জার্সিতে লড়াই করা জুভেন্টাসের জার্সির পরিবর্তন আনার অপেক্ষায় রয়েছে কর্তারা। ঘরোয়া লীগে ধারাবাহিক সফলতা সত্ত্বেও ক্লাবটির বিরক্তিকর রক্ষণাত্মক খেলা নিয়েও সমালোচনার শেষ নেই।
চোখ-ধাঁধানো স্টাইলের ফুটবল দিয়ে ক্লাব কর্তারা চান ইতালীর বাইরেও তাদের সমর্থক সৃষ্টি করতে। গত মৌসুমে চেলসির হয়ে সারির মেজর শিরোপা হচ্ছে ইউরোপা লীগ। জুভেন্টাসের খেলার স্টাইলকে আরো গতিশীল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন সারি।
এদিকে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) এক বছর কাটানোর পর তুরিনে ফিরে এসেছেন গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফনও। ৪১ বছর বয়সি এই কিংবদন্তী বলেন, ‘যারা একই পন্থা অবলম্বন করে তারা সব সময় একই ফলাফলই লাভ করে। সুতরাং জুভেন্টাস চায় চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা। নির্দিষ্ট গন্ডি ছেড়ে নতুন জায়াগায় পৌঁছাতে চাই। সারি বিপ্লবীও নন, বাজিকরও নন। তিনি শুধু দলকে না পাওয়া স্বাদ এনে দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব করতে চান। নতুন একটি গল্প রচনা করতে চান।’
এবারের মৌসুমে জুভেন্টাসের বড় প্রতিদ্বন্দ্বি কার্লো আনচেলোত্তির নাপোলি ও এ্যান্টনিও কন্টের ইন্টার মিলান। কন্টে এক সময় জুভেন্টাসেরও কোচ ছিলেন। তবে ৩৬তম স্কুদেত্তো এবং ১৯৯৬ সালের পর প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে মোটা অর্থ ব্যয়ে সারিকে ক্লাবে এনেছে জুভেন্টাস।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ব্যবধান গড়ে দেয়া একজন খেলোয়াড় বলে মনে করেন সারি। তাকে বেস্টন করে দলীয় আক্রমনকে শানিত করার মিশনে থাকবেন নবাগত ডাচ তারকা মাত্তিজস ডি লাইট। আর রক্ষনভাগে থাকবেন অভিজ্ঞ জিওর্জিও চিল্লিয়ানি ও লিওনার্দো বনুচ্চি।
গত মৌসুমে ডি লাইটের আয়াক্স চ্যাম্পিয়ন্স লীগ থেকে বিদায় করে দিয়েছিল জুভেন্টাসকে। এবার ইতালীয় জায়ান্টদের মধ্যমাঠের সামর্থ্য বাড়াবেন প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) থেকে দলভুক্ত আদ্রিয়েন র‌্যাবিয়ট ও আর্সেনালের সাবেক তারকা এ্যারন রামসে। দুইজনকেই বিনা ট্রান্সফার ফী’তে হলেও মোটা বেতনে দলে ভিড়িয়েছে জুভেন্টাস।
ক্লাবটির ক্রীড়া পরিচালক ফ্যাবিও প্যারাটিসির মতে এই সব আয়োজনই সারির অধীনে অন্য রকম স্টাইলের ফুটবলের জন্য। তিনি বলেন,‘ যা কিছু ঘটেছে তার জন্য আমরা আনন্দিত। আমরা ডি লাইটকে পেয়েছি, যাকে পেতে চেয়েছিল সবগুলো শীর্ষ ক্লাব। তবে আমরা তাকে দলভুক্ত করতে পেরেছি। সঙ্গে বিনা ট্রান্সফার ফিতে পেয়েছি র‌্যাবিয়ট ও রামসেকে। এদেরকেও পেতে চেয়েছিল অনেকে। সব বিভাগেই জুভেন্টাসে রয়েছে উচ্চ মান সম্পন্ন খেলোয়াড়রা। নিখাঁদ মানের একটি স্কোয়াড।’

সংশয়বাদকে সরিয়ে ফেলা:
এই খেলোয়াড় ও নতুন কোচকে নিয়েই জুভেন্টাস একটি ‘সারিময়’ ফুটবল দর্শন প্রবর্তন করতে বলে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ব্রাজিলীয় লেফট ব্যাক অ্যালেক্স সান্দ্রোঁ মনে করেন, সারি ইতোমধ্যেই একটি প্রভাব ফেলেছেন। তিনি বলেন, ‘এই মৌসুম শুরু করার জন্য আমাদের আর তর সইছে না। আমরা ইতোমধ্যে সারির মানষিকতা আয়ত্ব করে ফেলেছি। জানি কি করতে হবে। আমাদের সবারই স্বাভাবিক উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। তবে আমরা সঠিক পথেই আছি।’
ডি লাইটও সারির প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে যোগ দেয়ার অন্যতম কারণের একটি হচ্ছেন তিনি। তার সম্পর্কে আমি অনেক ভাল কথা শুনেছি। তার ফুটবল দর্শন আমার পছন্দ। তার নেপথ্যের প্রস্তুতিও।’
৩০ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারের আলোকে জুভেন্টাসের কোচিং ‘শিরোপা কেন্দ্রিক’ করার কথা জানিয়েছেন সারি। তিনি বলেন, ‘সংশয়বাদকে বেস্টন করেই আমি এসেছি। তবে আমি সব সময় আমিই। এম্পলি, নাপোলি ও চেলসিতেও আমি একই পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছি। আমি জানি, ফুটবলে শুধুমাত্র একটি পন্থা রয়েছে মানুষের মন থেকে সংশয়কে মুছে ফেলার। সেটি হচ্ছে প্রত্যায়ের সঙ্গে জয়লাভ করা। আমি খুব বেশী শিরোপা জয় করিনি। তবে বিশ্বাস করি, মাঠে মজার মধ্যে থাকলে জয়কে কেউ রুখতে পারে না।’
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/২০৩০/-স্বব