শিল্প বর্জ্য পরিশোধন না করে নদীতে ফেললে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে : এলজিআরডি মন্ত্রী

697

নারায়ণগঞ্জ, ২৭ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম বলেছেন, কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান বর্জ্য পরিশোধন না করে তা নদীতে ফেললে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নদীর জায়গা কেউ দখল করলে বা অবৈধভাবে অবকাঠানো নির্মাণ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, মেঘনা নদী যাতে নতুন করে কেউ দখল, দূষণ না করতে পারে সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। শিল্পবর্জ্য, বাসাবাড়ির বর্জ্য এবং পরিবহন বর্জ্য কোনো অবস্থাতেই নদীতে ফেলা যাবেনা।
আজ শনিবার দুপুরে জেলার আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নদী দূষণ ও দখল রোধে নৌ পরিবহন, পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়, বিআইডব্লিউটিএ এবং মেঘনা নদীর তীরবর্তী জেলার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ইউএনও)সহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় শেষে এলজিআরডি মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব আব্দুস সামাদ, বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের সচিব আব্দুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরি, জার্মানীর রাষ্ট্রদূত এইচ ই পিটার ফারেন হোল্টজ, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন এ খানসহ অনেকে।
পরে মন্ত্রী নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের বিষনন্দী ফেরীঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে ঢাকা ওয়াসার বাস্তবায়নাধীন ঢাকা এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প এবং সায়দাবাদ পানি শোধনাগার ফেইজ-৩ পরিদর্শন করেন।
মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ওয়াসার সায়দাবাদ ফেইজ-৩ এর কাজ শুরু হয়েছে। এই ফেইজে পানির উৎস হচ্ছে মেঘনা নদী। মেঘনা নদীর পানিকে যদি দূষণমুক্ত রাখতে না পারি তাহলে দীর্ঘ মেয়াদী এই প্রকল্প কোনো কাজে আসবেনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নদীগুলোকে দখল ও দূষণমুক্ত রাখতে এবং নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে অঙ্গিকারাবদ্ধ রয়েছেন। সেই লক্ষ্যে একটি মাষ্টার প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। সেই মাষ্টার প্ল্যানের আলোকে সারা দেশের সকল নদী নিয়ে পর্যায়ক্রমে কাজ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে ঢাকায় যে সুপেয় পানির চাহিদা রয়েছে তা পূরণ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, আগামীতে আমাদের দেশে যাতে পানির সংকট না হয় সে জন্য সরকার কাজ করছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে ঢাকার ৩৪ টি স্পট থেকে পানি সংগ্রহ করে গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৮টি স্থানের পানিতে কোন রকম দূষণ বা কন্টামিনেশন পাওয়া যায়নি। বাকি ৫-৬টি স্থানে যে জীবাণু পাওয়া গেছে তা মানবদেহের জন্য তেমন ক্ষতিকারক নয়। পানিকে সম্পূর্ণরুপে জীবাণুমুক্ত করার জন্য ওয়াসাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ২৩ হাজার কিলোমিটার ওয়াসার পানির সাপ্লাইয়ের পাইপ লাইন আছে। দীর্ঘ এই পাইপ লাইনের কোথাও লিক হতে পারে, কোথাও কোনো সমস্যা হতে পারে। তাৎক্ষণিক তা জানা গেলে ওয়াসা সেটি মেরামত করতে প্রস্তুত রয়েছে।
এডিস মশার উৎপত্তি স্থল চিহ্নিত করে সকলকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, যত দিন পর্যন্ত আমরা বাসা বাড়ি, বাড়ির আঙ্গিনা, ফুলের টব , বাথরুম , বেসিনসহ এডিস মশার উৎপত্তিস্থল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে না পারবো, ততদিন এই সমস্য রয়ে যাবে। তিনি সকলকে সচেতন হয়ে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করার আহবান জানান।
তিন বলেন, এখন এডিস মশার জন্ম মৌসুম । তাই এই সময় আমাদের সচেতন থাকতে হবে যাতে কোথাও স্বচ্ছ বা বৃষ্টির পানি ৪৮ ঘন্টার বেশী জমে থাকতে না পারে। কারণ এডিস মশার জন্ম হয় স্বচ্ছ জমে থাকা পানি থেকে।
এদিকে কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম আজ জেলার বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির ৫২তম বার্ষিক পরিকল্পনা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।একাডেমির মহাপরিচালক ড: এম মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো: আবুল ফজল মীর। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো: আবদুল কাদের।
একাডেমির ৫২তম বার্ষিক পরিকল্পনা সম্মেলনের ধারণাপত্র উপস্থাপনা করেন পরিচালক (পল্লী প্রশাসন) মিলন কান্তি ভট্টাচার্য্য। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল হোসাইন।
দুইদিন ব্যাপী আয়োজিত একাডেমির ৫২ তম বার্ষিক পরিকল্পনা সম্মেলনের ৬০ জন সরকারী এবং বেসরকারী সংস্থার ও প্রতিষ্ঠানের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।