ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবকে ‘কনস্যুলার অ্যাকসেস’ দিতে সম্মত পাকিস্তান

264

নয়াদিল্লি, ১৯ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : অবশেষে ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবকে ‘কনস্যুলার অ্যাকসেস’ দিতে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ,পাকিস্তান তার আইন অনুযায়ী কুলভূষণ যাদবকে কনস্যুলার এক্সেস দেবে।
ভারতীয় টিভি চ্যানেল এনডিটিভি আজ সকালে ইসলামাবাদ থেকে এক রিপোর্টে জানায়, মন্ত্রণালয় কুলভূষণকে ভিয়েনা কনভেনশন অন কনস্যুলার রিলেশন আইন অনুযায়ী তার অধিকার সম্পর্কে জানিয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আ্্ইসিজে)-এর আর্টিকেল ৩৬-এর, ভিয়েনা কনভেনশন অর কনস্যুলার রিলেশন-এর প্যারাগ্রাফ ১ (বি) অনুসারে কুলভুষন তার অধিকারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, ‘পাকিস্তান একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র। পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী কুলভূষণ যাদবকে কনস্যুলার এক্সেস দেবে।’
তবে ভারত বৃহস্পতিবার কুলভূষণ যাদবকে মুক্তি দেয়ায় পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কুলভূণ যাদবকে গুপ্তচর বৃত্তির দায়ে পাকিস্তান গ্রেফতার করে ও পাকিস্তানি সামরিক আদালতে মৃত্যুদন্ড দিলে ভারতের আবেদনের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক আদালত এ রায়কে পুনর্বিবেচনার নির্দেশ প্রদান করে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর গতকাল পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের এক বিবৃতিতে বলেন, যাদবের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি নির্দোষ। তার কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেয়া হয় ও তাকে কোনো প্রকার আইনী সুবিধা দেয়া হয় নাই।
তিনি আরো বলেন, যাদককে ‘মিথ্যে মামলায়’ অবৈধভাবে পাকিস্তানের কারাগারে রাখা হয়। আইসিজে-এর রায় ভারত,যাদব ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী সকলের কাছে যথাযথ।
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার গতকাল এক নিউজ ব্রিফিং-এ বলেন, ভারত আশা করছে পাকিস্তান অবিলম্বে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় মেনে নেবে।
তিনি বলেন, আইসিজে-এর রায় ভারতের পক্ষে গেছে। ১৬ জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে সংখ্যা গরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে সর্বসম্মতিক্রমে এর সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
২০১৭সালের এপ্রিলে ভারতের অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ৪৯ বছর বয়সী কুলভূষণকে পাকিস্তানী সামরিক আদালত মৃত্যুদন্ড দেয়। তাকে ভারতের গুপ্তচর হিসেবে চিহ্নিত করে পাকিস্তান। ভারতের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক আদালতের কাছে তার মৃত্যুদন্ডের প্রতিকার চাওয়া হয়।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়,১৬ সদস্য বিশিষ্ট ব্রাঞ্চটি কোর্ট জজ প্রেসিডেন্ট আব্দুলকাভি আহমেদ ইউসুফ পরিচালনা করেন। বুধবার (১৫-১ ভোটে) পাকিস্তানকে কুলভূষনের মৃত্যুদন্ডের ‘কার্যকর পর্যালোচনা ও পুনর্বিবেচনা’ এবং তাকে অবিলম্বে ভারতের কনস্যুলার অ্যাকসেস প্রদানের নির্দেশ প্রদান করে।
খবরে আরো বলা হয়, এটি ছিল ৪২ পৃষ্ঠার রায়। মামলা নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে পাকিস্তান আপত্তি তুললে আন্তর্জাতিক আদালত তা নাকচ করে দেয়।