নাটোরে মাছের উৎপাদন বাড়ছে

206

নাটোর, ১৭ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : জেলায় মাছের উৎপাদন ক্রমশঃ বাড়ছে-সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আজ নাটোরে মৎস্য সপ্তাহ ২০১৯ উদযাপন শুরু হয়েছে। ‘মৎস্য সেক্টরের সমৃদ্ধি, সুনীল অর্থনীতির অগ্রগতি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে মৎস্য সপ্তাহের অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে মৎস্য পোনা অবমুক্তকরণ, মূল্যায়ন সভা,শ্রেষ্ঠ খামারীদের পুরষ্কার প্রদান, মৎস্য আইনের বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা,বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রমাণ্য চিত্র প্রদর্শন এবং তিনদিনের মৎস্য মেলা।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, নাটোরে মাছের উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে। প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর আয়োজন এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে মৎস্য বিভাগের সাথে মৎস্য চাষীদের তৈরী হয়েছে মেলবন্ধন, বেড়েছে সচেতনতা, বেড়েছে উৎপাদন। শস্য ভান্ডারের মত নাটোর পরিচিতি পাচ্ছে মৎস্য ভান্ডার হিসেবে ও।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১১-২০১২ সালে জেলায় মাছের মোট উৎপাদন ছিলো ৩৩ হাজার ৮৮৬ টন। এর পরবর্তী পাঁচ বছরে উৎপাদনের পরিমান ক্রমশ বেড়ে হয়েছিল যথাক্রমে ৩৭ হাজার ৬৫৬ টন, ৩৮ হাজার ২৭৫ টন, ৩৯ হাজার ১০৪ টন, ৪০ হাজার ৫২১ টন এবং ৪২ হাজার ৫৪৭ টন। গত ২০১৮-২০১৯ বছরে জেলার উৎপাদন হয়েছিল ৫০ হাজার ৯৯৭ টন।
জনসংখ্যার আনুপাতিক হিসেবে জেলায় বাৎসরিক মাছের মোট চাহিদা ৩৭ হাজার ২৩০ টন। এর বিপরীতে ৫০ হাজার ৯৯৭ টন উৎপাদনের ফলে উদ্বৃত্ত থাকছে ১৩ হাজার ৭৬৭ টন। উদ্বৃত্ত এ মাছ যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের ঘাটতি এলাকার চাহিদা পূরণের জন্যে। বিশেষ করে চলনবিল এবং হালতিবিলের দেশীয় প্রজাতির সুস্বাদু মাছ সারা দেশেই আদরনীয়।
জেলার চার হাজার ৭২২ হেক্টর নদী এবং দুই হাজার ২৪৪ হেক্টর বিল এলাকা দেশীয় রকমারী প্রজাতির মাছের মূল উৎস। এর বাইরে সাত হাজার ৭১২ হেক্টর পুকুর-দীঘি এবং ৪২ হাজার ৪৭৪ হেক্টর প্লাবন ভ’ুমিতে মাছ চাষ করা হচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় মৎস্য সপ্তাহের বিস্তারিত কর্মসূচী তুলে ধরা হয়। আগামীকাল উদ্বোধনী শোভাযাত্রা ও সমাবেশ শেষে কালেক্টরেট ভবন সংলগ্ন পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হবে। সমাপনী দিনে ২৩ জুলাই জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে মৎস্য চাষের অগ্রগতি সম্পর্কে মূল্যায়ন সভা শেষে জেলার শ্রেষ্ঠ তিন খামারীকে পুরষ্কার প্রদান করা হবে। ১৯ জুলাই বনবেলঘড়িয়া মৎস্য খামার প্রাঙ্গনে তিনদিনের মৎস্য মেলা শুরু হবে। সপ্তাহব্যাপী মৎস্য আইনের বাস্তবায়নে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এছাড়া দিঘাপতিয়া এম কে ডিগ্রি কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে এবং হাট-বাজারে উদ্বুদ্ধকরণ সভা ও প্রমাণ্য চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। মৎস্য সপ্তাহে মৎস্যজীবী, মৎস্য খামারী এবং মৎস্য বিভাগ ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের মধ্য দিয়ে নাটোরে মাছ উৎপাদনের পরিধি আরো বাড়বে বলে মত বিনিময় সভায় আশা করা হয়।
সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক গোলাম রাব্বি এবং সভা প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোছাঃ শরীফুন্নেছা। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। জেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা ছাড়াও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা মত বিনিময়সভায় উপস্থিত ছিলেন।