বাসস দেশ-৪০ : রংপুরের পল্লী নিবাসে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দাফন সম্পন্ন

498

বাসস দেশ-৪০
এরশাদ-দাফন
রংপুরের পল্লী নিবাসে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দাফন সম্পন্ন
রংপুর, ১৬ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : রংপুরের পল্লী নিবাসে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
আজ বাদ আসর ৫টা ৪৫ মিনিটে রংপুরের পল্লী নিবাসে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে তাঁকে দাফন করা হয়।
রংপুরবাসীসহ নেতা-কর্মীদের আবেগ, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর কৃতজ্ঞতাবোধের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এরশাদকে রংপুরে এরশাদকে সমাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবরের পাশে বেগম রওশন এরশাদের জন্য কবরের জন্য জায়গা রাখার জন্যও অনুরোধ জানিয়েছেন রওশন এরশাদ। এরশাদের মরদেহ পল্লী নিবাসে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়।
এর আগে মঙ্গলবার বাদ জোহর বেলা আড়াইটায় রংপুরের কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে মরদেহ বহনকারী গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। এ সময় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে এরশাদকে রংপুরে দাফনের দাবি জানান।
সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পািির্টর চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে রংপুরের পল্লী নিবাসে চিরনিদ্রায় শায়িত করার আগে কবরের পাশে তার মরদেহকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অনার প্রদান করা হয়।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক এমপি, এরশাদের ছোটভাই ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এবং দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, জিয়া উদ্দিন আহমদ বাবলু এমপি, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সেনাবাহিনীর রংপুর এরিয়া কমান্ডার এবং ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং মো. নজরুল ইসলামসহ জাতীয় পার্টির বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া নামাজে জানাজায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাসদ, জাকের পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো. ইদ্রিস আলী জানাজা নামাজে ইমামতি করেন।
মঙ্গলবার বেলা ২টা ২৯ মিনিটে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় এরশাদের জানাজা।
জানাজা শেষে সর্বস্ততরের নেতাকর্মীরা এরশাদের মরদেহে শ্রদ্ধা জানান। প্রিয় নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সমবেত হন।
জানাজার আগে এরশাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া চেয়ে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের, এরশাদের ছেলে রাহগির আল মাহি সাদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোসফা।
এর আগে এরশাদকে বহনকারী বিমানবাহিনীর বিশেষ হেলিকপ্টার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে অবতরণ করে। পরে ১২টা ১৫ মিনিটে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে কালেক্টরেট মাঠে এরশাদের মরদেহ নেয়া হয়। সেখানে এরশাদের লাশ গ্রহণ করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাসহ নেতাকর্মীরা।
সেখানে এরশাদের কফিন পৌঁছলে তাকে ঘিরে কান্নায় ভেঙে পড়েন দলের নেতাকর্মীরা। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
প্রসঙ্গত গত রোববার সকাল পৌনে ৮টায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্র্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তিনি রক্তে সংক্রমণসহ লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন। রোববার বাদ জোহর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদে দ্বিতীয় এবং বাদ আসর বায়তুল মোকাররম মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রংপুরে চতুর্থ জানাজা অনু্ষ্ঠিত হয়।
বাসস/এমআই/এমএআর/২১১৩/-জেজেড