পেরুকে হারিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর আগে এগিয়ে যেতে চায় ফ্রান্স

400

একাটেরিনবুর্গ (রাশিয়া), ২০ জুন, ২০১৮ (বাসস/এএফপি) : গ্রুপ পর্বে শিরোপা প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো যখন ব্যর্থ তখন নিজেদের দক্ষতা দিয়ে কিছুটা এগিয়ে গেছে ফ্রান্স। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সি গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের ধারাবাহিকতা দিয়ে সেটিকে সৃদৃঢ় করতে চায় লেস ব্লুসরা।
দিদিয়ের দেশ্যমের দলটি অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে সামর্থ্যের দিক থেকে কাগজে কলমে অনেক বেশী শক্তিশালী হলেও বাস্তবিক অর্থে তার প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি। সকারুসদেও বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেতে তাদের নির্ভর করতে হয়েছে ভিএআর প্রযুক্তি এবং পেনাল্টির উপর। শেষ ভাগে অত্মঘাতী গোলের সুবাদে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোন রকমে ২-১ গোলে জয়লাভ করে ফ্রান্স।
কিন্তু পেরুর বিপক্ষে তারকা খচিত আতোয়ান গ্রিজম্যান, কিলিয়ান এমবাপে এবং ওসমানে ডেম্বেলের সমন্বয়ে গড়া শক্তিশালী আক্রমনভাগকে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে অন্তত বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে।
এদিকে শিরোপা ফেভারিটের তালিকায় থাকা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানি গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচেই হেরে গেছে মেক্সিকোর কাছে। স্পেন, আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল ড্র করে পয়েন্ট খুঁইয়েছে নিজ নিজ ম্যাচে। এখন পেরুর বিপক্ষে ম্যাচটি ফ্রান্সের জন্য দারুন এক সুযোগ এনে দিয়েছে, যে ম্যাচ দিয়ে তারা নিজেদেরকে রাশিয়া বিশ্বকাপের সেরা ফেভারিট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
দলের সহ-অধিনায়ক ও রিয়াল মাদ্রিদের ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানে বলেন, ‘আগের ম্যাচে আমরা ভাল করেছি, নাকি বেশী ভালো করেছি সে বিতর্ক রেখে আমরা সবাই অন্তত এই বিষয়ে একমত হয়েছি যে, আমাদের মানসিকতা এবং শারিরিক দক্ষতা আরো বাড়াতে হবে। হয়তো ফেভারিটের তালিকায় থাকা অন্য দলগুলো হেরেছে বা ড্র করেছে। আর আমরা জয়লাভ করেছি। কিন্তু আমরা জানি আমাদের অনেক বিষয়ে উন্নতি করতে হবে। এগিয়ে যেতে হলে আমাদের কোন পন্থা অবলম্বন করতে হবে সেটি আমরা জানি।’
আসন্ন ম্যাচের মুল একাদশে চমক হিসেবে অলিভার গিরুদকে সুযোগ দিতে পারেন ফ্রান্সের হয়ে ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য দেশ্যম। ২৫ বছর বয়সি ফরাসি ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানে বলেন, ‘মাত্র ১৯ বছর বয়সে গ্রিজম্যান যা করতে পারছেন বা পারবেন এমন দক্ষতা এর আগে খুব কম সংখ্যক খেলোয়াড় দেখাতে পেরেছেন। খুব কম বয়সেই তিনি ফ্রান্স দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।’
নিজেদের প্রথম ম্যাচে ডেনমার্কের কাছে ১-০ গোলে হেরে যাওয়া পেরুর তুলনায় ফ্রান্সের তারুন্য নির্ভর মেধাবিদের নিয়ে গড়া দলটি অনেক বেশী ফেভারিট। যদিও পেরুর সমর্থকরা ডেনমার্কের তুলনায় তাদের দলটিকেই এগিয়ে রেখেছে। তাদের মতে দলটি তুলনামুলকভাবে বেশী সময় ধরে বলের দখল বজায় রেখেছে এবং বেশ কটি গোলের সুবর্ণ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এখন আরেকটি পরাজয় দীর্ঘ বিরতির পর বিশ্বকাপে ফেরা পেরুর নকআউট পর্বে খেলার স্বপ্নকে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিতে পারে। এর আগে ১৯৮২ সালে প্রথম বিশ্বকাপের চূড়ান্ত আসরে খেলার সুযোগ হয়েছিল দলটির।
নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত হয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলার অনুমতি পাওয়া পেরুর ৩৪ বছর বয়সি সর্বকালের সর্বাধিক গোলদাতা পাওলো গুয়েরোরো ডেনমার্কের বিপক্ষে বদলী হিসেবে শেষ ৩০ মিনিট খেললেও ফ্রান্সের বিপক্ষে আসন্ন ম্যাচের প্রথম একাদশের হয়ে মাঠে নামবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ফ্রান্স :
গোলরক্ষক : হুগো লরিস(১), স্টিভ মন্দান্দা (১৬), আলফোনসে আরেওলা (২৩)
রক্ষণ ভাগ : লুকাস হার্নান্দেজ (২১). প্রেসনেল কিমপেম্বে (৩), বেঞ্জামিন মেন্ডি (২২), বেঞ্জামিন পাভার্ড (২), আদিল রামি (১৭), দিবরিল সিদিবে (১৯), স্যামুয়েল উমিতিতি (৫), রাফায়েল ভারানে (৪)।
মধ্যমাঠ : এনগোলা কন্টে (১৩), ব্লাইস মাতুইদি (১৪), স্টেভেন এন’জঞ্জি (১৫), পল পগবা (৬), কোরেনটিন তোলিসো (১২), টমাস লেমার (৮)।
আক্রমন ভাগ : ওসমানে ডেম্বেলে (১১), নাবিল ফেকির (১৮), অলিভার গিরুদ (৯), আতোয়োন গ্রিজম্যান (৭), কিলিয়ান এমবাপে (১০), ফ্লোরিয়ান তাউভিন (২০)।
কোচ: দিদিয়ের দেশ্যম
পেরু :
গোলরক্ষক : পেড্রো গালেসে (১), জোসে কারভালো (২১), কার্লোস কাসেডা (১২)।
রক্ষনভাগ : লুইস এডভিনকুলা (১৭), মিগুয়েল আরাউজো (৫), আল্ডো কোরজো (৩), নিলসন লয়োলা (২২), ক্রিস্টিয়ান রামোস (১৫), আলবার্তো রড্রিগুয়েজ (২), এন্ডারসন সান্টামারিয়া (৪), মিগুয়েল ট্রাউসো (৬)।
মধ্যমাঠ : পেড্রো একুইনো (২৩), উইলমার কার্টাজেনা (১৬), ক্রিস্টিয়ান কুয়েভা (৮), এডিসন ফ্লোরেস (২০), পাওলো হার্টাডো (৭), রেনাটো তাপিয়া (১৩), ইওশিমার ইওটুন (১৯)।
আক্রমণ ভাগ : পাওলো গুয়েরোরো (৯), আন্দ্রে ক্যারিলো (১৮), রাউল রুইডিয়াজ (১১), এন্ডি পোলো (১৪), জেফারসন ফারফান (১০)।
কোচ : রিকার্ডো গ্যারেচা