গ্রানকিভিস্টের গোলে বিশ্বকাপের প্রত্যাবর্তন ম্যাচে জিতলো সুইডেন

762

মস্কো (রাশিয়া), ১৮ জুন ২০১৮ (বাসস) : বিশ্বকাপের গেল দুই আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি সুইডেন। তাই ২০১০ ও ২০১৪ সালের পর আবারো রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েই নিজেদের প্রত্যাবর্তন ম্যাচে জয়ের স্বাদ পেল সুইডেন। বিশ্বকাপের ২১তম আসরের ১২তম ম্যাচে ও ‘এফ’ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে সুইডেন আন্দ্রেস গ্রানকিভিস্টের একমাত্র গোলে হারালো ২০০২ সালে সেমিফাইনাল খেলা দক্ষিণ কোরিয়াকে।
রাশিয়ার নিজনি নভগোরোদে প্রথম ১৫ মিনিট বল দখলেই ঘাম ঝড়িয়েছে সুইডেন ও দক্ষিণ কোরিয়া। সেখানে লড়াইয়ে কেউ কাউকে পেছনে ফেলতে পারেনি। তবে ম্যাচের ২০ মিনিটে প্রথম ফ্রি-কিক পায় সুইডেন। স্ট্রাইকার ওলা টোইভোনেনের ফ্রি-কিক থেকে বল পেয়েছিলেন আক্রমনভাগের আরেক খেলোয়াড় মার্কোস বার্গ। কিন্তু বাঁ-পায়ের শটে দলকে গোলের স্বাদ দিতে পারেননি বার্গ। ফলে এ যাত্রায় বেঁচে যায় দক্ষিণ কোরিয়া।
এক মিনিট পর আবারো মধ্য মাঠ থেকে আক্রমণ রচনা করে সুইডেন। রক্ষণভাগের খেলোয়াড় লুডউইগ আগাসটিনসনের ক্রস থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার বক্স থেকেই হেড নিয়েছিলেন পনটাস জানসন। কিন্তু সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
পরপর দু’টি আক্রমণে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়ে মধ্যমাঠের দখল নিয়ে নেয় সুইডেন। ৪-৪-২ ফরম্যাটে মধ্যমাঠ দিয়ে আক্রমণ শানায় তারা। সেই সুবাদে ২৯ মিনিটে আবারো গোল সুযোগ পেয়ে ব্যর্থ হন বার্গ।
এরমধ্যে দু’একটি পাল্টা আক্রমণও করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। ৩৭ মিনিটে মিডফিল্ডার কিং সুং ইউয়েং যোগান দেয়া বল ডান-প্রান্তে থাকা লী জায়ে সুং পেয়ে যান। সুইডেনের গোলবারে তীব্র শটও নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সুইডিশ গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় সেই সুযোগ ভেস্তে যায়।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে আরও দু’টি আক্রমণ রচিত করেছিলো সুইডেন। কিন্তু ভাগ্য সাথে না থাকায় গোলের স্বাদ প্রথমার্ধে নিতে পারেনি না তারা। ফলে গোলশূন্যভাবেই শেষ হয় ম্যাচের প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর আরও বেশি চাপ সৃষ্টি করে সুইডেন। এতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়া। এই সুযোগে ৬৫ মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় সুইডেন। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপদ সীমানায় রক্ষণভাগের খেলোয়াড় কিম মিন-উ অবৈধভাবে ফাউল করেন সুইডেনের মধ্যমাঠের খেলোয়াড় ভিক্টর ক্লাসেনকে। এতে ভিডিও রেফারির সহায়তায় পেনাল্টি পায় সুইডিশরা। অবশ্য অন-ফিল্ড রেফারি পেনাল্টি দেননি। পেনাল্টি থেকে গোল করেন রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ও অধিনায়ক আন্দ্রেস গ্রানকিভিস্ট। দেশের হয়ে ৭১ ম্যাচে সপ্তম গোল করলেন গ্রানকিভিস্ট।
গোল হজম করে জ্বলে উঠে দক্ষিণ কোরিয়া। এতে রক্ষণাত্মকভাবে খেলতে থাকে সুইডেন। এই সুযোগে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে দক্ষিণ কোরিয়া। প্রতিপক্ষের সীমানায় আক্রমণ করলেও সেগুলো গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।
৮২ মিনিটে সবচেয়ে ভালো সুযোগ পেয়েছিলো দক্ষিণ কোরিয়া। স্ট্রাইকার সন হিউং মিনের পাসে সুইডেনের বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান লী সিউং উ। তার বাঁ-পায়ের শটই গোলে প্রবেশ করতে দেননি সুইডেনের গোলরক্ষক রবিন ওলেসন।
শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি থেকে পাওয়া এক গোলেই ম্যাচ জিতে নেয় সুইডেন। দু’আসর পর বিশ্বকাপে নিজেদের প্রত্যাবর্তন জয় দিয়ে গ্রহণ করলো সুইডেন। ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বাছাইয়ে নেদারল্যান্ডস ও ইতালির মত শক্তিশালী দল দু’টিকে হটিয়ে রাশিয়া ফুটবলের মহাযজ্ঞে জায়গা করে নিয়েছিলো সুইডিশরা। তাই এ ম্যাচটি তাদের স্মরণীয়ই হয়ে থাকারই কথা।
আগামী ২৩ জুন ‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচে জার্মানির মুখোমুখি হবে সুইডেন। গতকাল মেক্সিকোর কাছে ১-০ গোলে হেরেছিলো জার্মানরা। একই দিন মেক্সিকোর বিপক্ষে লড়তে নামবে দক্ষিণ কোরিয়া।