মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ সনাক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

539

সংসদ ভবন, ১৯ জুন ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ সনাক্ত করার লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
তিনি বলেন,‘১৯৭১ সালে ৯ মাসব্যাপী স্বাধীনতা যুদ্ধে সারাদেশে ত্রিশ লাখ গণশহিদদের সনাক্ত করা এখনও সম্ভব হয়নি। ভবিষ্যতে এ লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা আজ জাতীয় সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের এক তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় সংসদকে একথা জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় স্পীকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার তথ্য সংগ্রহ করত, ডাটাবেইজ প্রস্তুত করে ওয়েব সাইটে প্রকাশ করেছে।’
তিনি বলেন,‘ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার বাইরে যদি কোন মুক্তিযোদ্ধা থেকে থাকেন তা চিহ্নিত করে উক্ত তালিকায় অন্তর্ভূক্তির জন্য আমরা সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।’
উক্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উক্ত তালিকার অংশ হিসেবে বর্তমানে মোট ৫ হাজার ৭৯৫ জন বীর শহিদ মুক্তিযোদ্ধার নাম,ঠিকানা সম্বলিত পূর্ণাঙ্গ তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েক সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এরমধ্যে গেজেটভুক্ত বেসামরিক শহীদ ২ হাজার ৯২২ জন, গেজেটভুক্ত সশ্র¯্র বাহিনীর শহিদ ১ হাজার ৬২৮ জন, গেজেটভুক্ত বিজিবি শহিদ ৮৩২ জন এবং গেজেটভুক্ত পুলিশ শহিদ ৪১৩ জন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতীয় সংসদে দেশের সর্বত্র মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষা,ইতিহাস বিকৃতি রোধ এবং আগামী প্রজন্মের কাছে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার জন্য তাঁর সরকার যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা ও সবিস্তারে তুলে ধরেন।
যার মধ্যে রয়েছে- মুজিব নগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, মুক্তিযুদ্ধকালিন সম্মুখ সমরের স্থানগুলো সংরক্ষণও উন্নয়ন, সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্প, ৩৫টি জেলার ৬৫টি স্থানে মুক্তিযুদ্ধেও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ,মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্প, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্থাপনাসমূহ সংরক্ষণ ও পুণ:নির্মাণ প্রকল্প, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণ প্রকল্প মিত্রবাহিনীর শহিদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণ এবং স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ এবং শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রভৃতি।
এছাড়া ইতিহাস বিকৃতি রোধে তাঁর সরকার গৃহীত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যক্রমে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার উদ্যোগ, সারাদেশে ভ্রাম্যমান যাদুঘরের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন, ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্যানোরমা নির্মাণ এবং পাকিস্তানী বাহিনীর ভয়াবহতা প্রদর্শনের জন্য ঢাকায় একটি ঘৃণাস্তম্ভ ও টর্চার সেলের রেপ্লিকা নির্মানের উদ্যোগও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।