নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৪৪ রান

648

লন্ডন, ৫ জুন, ২০১৯ (বাসস) : ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের নবম ও নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯.২ ওভারে ২৪৪ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। ফলে ম্যাচ জয়ের জন্য ২৪৫ রান করতে হবে নিউজিল্যান্ডকে।
এই কেনিংটন ওভালেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। ঐ ম্যাচে টস জিততে পারেনি টাইগাররা। এবারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও নয়। তাই টস হেরে প্রথমে ব্যাট হাতে নামতে হয় বাংলাদেশকে।
আগের দিনই প্রথম দশ ওভারে উইকেট না হারানোর ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন ওপেনার সৌম্য সরকার। নিজের ইচ্ছা পূরণের পথেই হাটছিলেন তিনি। সাথে তার সঙ্গী ছিলেন আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল। তবে দ্রুত রান তোলায় ব্যস্ত ছিলেন সৌম্য। ৩টি বাউন্ডারিতে আজও বড় ইনিংসের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তিনি।
কিন্তু আজও পারলেন না সৌম্য। সেই সাথে নিজের ইচ্ছাকে বলিও দিয়েছেন তিনি। নবম ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ৪৫ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান সৌম্য। নিউজিল্যান্ডের পেসার ম্যাট হেনরির বলে আউট হওয়া এই বাঁ-হাতি ২৫ বলে সমান ২৫ রান করেন।
এরপর জুটি বাঁধেন তামিম ও আগের ম্যাচের সেরা সাকিব আল হাসান। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেনি এই জুটি। দলীয় ৬০ রানে থামেন তামিম। ৩টি চারে ৩৮ বলে ২৪ রান করে নিউজিল্যান্ড পেসার পেসার লুকি ফার্গুসনের শিকার হন তিনি। তামিমকে আউট করে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের ২৯তম ম্যাচে ৫০ উইকেট পূর্ণ করেন ফার্গুসন।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের মত এবারও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন তামিম-সৌম্য। তাই আবারো দলের হাল ধরেন ২শতম ম্যাচ খেলতে নামা সাকিব ও মুশফিকুর। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন সাকিব-মুশফিক। এবারও সেই পথেই হাটছিলেন তারা। কিন্তু জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি আসার পরই বিচ্ছিন্ন হয়ে যান তারা। সাকিবের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হন ২টি চাওে ৩৫ বলে ১৯ রান করা মুশফিক।
মুশফিক ফিরে গেলেও, রান তোলার কাজটা ভালোভাবেই করছিলেন সাকিব। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের উপর চড়া হন তিনি। তাতে ৩০ ওভার শেষে দেড়শ রানের সংগ্রহ পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ততক্ষণে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৪তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়েছেন সাকিব। তবে এবারও নিজের ইনিংসটিকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারেননি এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। ৭টি চারে ৬৮ বলে ৬৪ রান করেন কলিন ডি গ্র্যন্ডিহোমের শিকার হন সাকিব। আগের ম্যাচে ৭৫ রান করেছিলেন তিনি।
সাকিবের বিদায়ের পর নিউজিল্যান্ড বোলারদের উপর আক্রমণ করার চেষ্টা করেন পাঁচ নম্বরে নামা মোহাম্মদ মিঠুন। এবারও ভালো শুরু করেন তিনি। সাবলীলভাবে ৩টি চারও হাকাঁন মিঠুন। কিন্তু বেশি দূর যাওয়া হলো না তার। হেনরির দ্বিতীয় শিকার হবার আগে ৩৩ বলে ২৬ রান করেন মিঠুন।
৩৮তম ওভারের প্রথম বলে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে দলীয় ১৭৯ রানে আউট হন মিথুন। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে ভালো সংগ্রহ এনে দেয়ার দায়িত্ব বর্তায় শেষ দুই স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেনের। কিন্তু দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। ধীরলয়ে খেলে ৪১ বলে কোন বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারি ছাড়া ২০ রান করে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ। এতে ১৯৭ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। শেষ হয়ে যায় দলের বড় সংগ্রহের আশা।
তারপরও শেষ ৪৫ বলে দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেয়ার চেষ্টা করেন লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। মোসাদ্দেক ১১ রানে ফিরলেও, ব্যাট হাতে মারমুখী ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তার ২৩ বলে ২৯ রানের সুবাদে ২৪৪ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন সাইফউদ্দিন। তার ইনিংসে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। নিউজিল্যান্ডের হেনরি ৪৭ রানে ৪টি উইকেট নেন।
স্কোর কার্ড :
বাংলাদেশ ইনিংস :
তামিম ইকবাল ক বোল্ট ব ফার্গুসন ২৪
সৌম্য সরকার বোল্ড ব হেনরি ২৫
সাকিব আল হাসান ক লাথাম ব ডি গ্র্যান্ডহোম ৬৪
মুশফিকুর রহিম রান আউট (গাপটিল/লাথাম) ১৯
মোহাম্মদ মিথুন ক ডি গ্র্যান্ডহোম ব হেনরি ২৬
মাহমুদুল্লাহ ক উইলিয়ামসন ব স্যান্টানার ২০
মোসাদ্দেক হোসেন ক গাপটিল ব বোল্ট ১১
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন বোল্ড ব হেনরি ২৯
মেহেদি হাসান মিরাজ ক লাথাম ব বোল্ট ৮
মাশরাফি বিন মর্তুজা ক বোল্ট ব হেনরি ১
মুস্তাফিজুর রহমান অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-১, লে বা-৮, ও-৯) ১৮
মোট (অলআউট, ৪৯.২ ওভার) ২৪৪
উইকেট পতন : ১/৪৫ (সৌম্য), ২/৬০ (তামিম), ৩/১১০ (মুশফিকুর), ৪/১৫১ (সাকিব), ৫/১৭৯ (মিঠুন), ৬/১৯৭ (মাহমুদুল্লাহ), ৭/২২৪ (মোসাদ্দেক), ৮/২৩৫ (মিরাজ), ৯/২৪৪ (মাশরাফি), ১০/২৪৪ (সাইফউদ্দিন)।
নিউজিল্যান্ড বোলিং :
হেনরি : ৯.২-০-৪৮-৩ (ও-১),
বোল্ট : ১০-০-৪৪-২ (ও-১),
ফার্গুসন : ১০-০-৪০-১ (ও-৫),
ডি গ্র্যান্ডহোম : ৮-০-৩৯-১ (ও-১),
নিশাম : ২-০-২৪-০ (ও-১),
স্যান্টনার : ১০-১-৪১-১।