ঈদে সারা দেশে নিরাপত্তায় থাকছে লক্ষাধিক পুলিশ

378

ঢাকা, ১ জুন, ২০১৯ (বাসস) : আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ।
ঈদে রাজধানীতে ১০ হাজারসহ সারা দেশে জননিরাপত্তায় থাকছে লক্ষাধিক পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। মসজিদ, ঈদগাহ, গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও স্থাপনায় থাকবে পুলিশি নজরদারি।
পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে শনিবার বিকেলে এসব তথ্য জানা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপনের জন্য পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব) ও গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লক্ষাধিক সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে এবং সন্দেহজনক মনে হলে চেকপোস্টে তল্লাশী চলছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, রাজধানী ঢাকাতেই তিন স্তরের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে ১০ হাজারের বেশী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বাসস’কে বলেন, ‘ঈদে ঢাকা শহর ফাঁকা হয়ে যাবে। এই ফাঁকা ঢাকা শহরে পুলিশের পাহাড়া থাকবে, বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ড থাকবে আমরাও থাকবো। সবাই মিলে একটা নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবো। থাকবে নিরাপত্তা তল্লাাশি ও রাস্তায় বেরিকেড ব্যবস্থা।’
তিনি বলেন, নাগরিকদের নিরাপত্তায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্নস্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করা হচ্ছে। ঈদে রাজধানীর ৪৯ থানা এলাকায় টহল দিবে টহল পুলিশ দল।
এদিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপনের জন্য ইতোমধ্যেই পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে সব মেট্রোপলিটন ও রেঞ্জের পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশনা দিয়েছেন।
আইজিপি বলেন, সাধারণ মানুষের ঈদের কেনাকাটা নির্বিঘœ করার লক্ষ্যে মার্কেট ও শপিংমলে ভোররাত পর্যন্ত পোশাকে ও সাদা পোশাকে বিশেষ নিরাপত্তা দিতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণের নিরাপত্তার জন্য মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসমূহে সিসিটিভি স্থাপন করতে হবে। এছাড়া ট্রাক, পিকআপ এবং পণ্যবাহী ট্রাকে যাত্রী পরিবহন রোধ এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া মহাসড়কে কোন যানবাহন থামানো যাবে না।
তিনি বলেন, টার্মিনাল হতে বাস ছাড়ার আগেই চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স, অন্যান্য কাগজপত্র ও ফিটনেস পরীক্ষা করতে হবে।
আইজিপি বাসের ছাদে যাত্রী পরিবহণ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে বলেন, নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ রোধ এবং নৌপথে অন্য কোন স্থান হতে নৌকা দিয়ে যাত্রী উঠনো বন্ধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকবে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঈদের ছুটিতে আবাসিক এলাকা, ব্যাংক ও অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান, স্বর্ণেও দোকান ইত্যাদির নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ। এছাড়া ঈদের সময় বিদেশী কূটনৈতিক মিশন ও স্থাপনা এবং বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তা বাড়ানো হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঈদকে ঘিরে মার্কেট, শপিং মল, বাস টর্মিনাল, লঞ্চ ঘাট ও রেল স্টেশনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন এবং পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন বিপণী-বিতানে নগরবাসী যাতে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটা করে নিরাপদে বাসায় ফিরতে পারে সেজন্য পোশাকে ও সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি অজ্ঞান পার্টি, চোর ও ছিনতাইকারী ধরতে গোয়েন্দা নজরদারীও করা হচ্ছে।
এদিকে দেশের বৃহত্তর ঈদের জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ আজ বিকেলে বাসস’কে বলেন, ঈদের দিন যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবার প্রথম বারের মতো চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। মুসল্লিদের নিরাপত্তায় এখানে এক হাজার ২শ’ পুলিশ ও শতাধিক র‌্যাব সদস্য ছাড়াও থাকবে আইনশৃংখলা বাহিনীর গোয়েন্দা নজরদারী।
এছাড়া ৩২টি নিরাপত্তা চৌকি থাকবে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে মুসল্লিদের ঈদগাহ মাঠে প্রবেশ করতে হবে। এ ছাড়া মাঠের চারপাশে বিভিন্ন গেটে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহ তল্লাশী করা হবে। থাকবে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা। নামাজের সময় শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের আকাশে নজরদারি করবে শক্তিশালী ড্রোন ক্যামেরা।