জয়পুরহাটে ভুট্টা প্রদর্শনীর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

411

জয়পুরহাট, ১৪ মার্চ, ২০১৮ (বাসস) : কৃষি মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে বাস্তবায়িত ২০১৭-১৮ মৌসুমে সুপারসাইন ২৭৬০ হাইব্রিড জাতের ভুট্টা প্রদর্শণীর মাঠ দিবস আজ বুধবার অনুষ্ঠিত হয়।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে জামালপুর ইউনিয়নের দাদড়া ব্লকের ক্ষেতুপাড়া গ্রামে আয়োজিত মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হাসানুজ্জামান মিঠু সভাপতিত্ব করেন। কারিগরী সহায়তা সম্পর্কিত বক্তব্য রাখেন জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ সেরাজুল ইসলাম সাজু। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসবে বক্তব্য রাখেন জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুধেন্দ্র নাথ রায়। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার স্মৃতি রানী সরকার, প্রদর্শনী ভুট্টা চাষি দীলিপ কুমার , আজাহার আলী সরদার ও সবুজ হোসেন প্রমুখ। জয়পুরহাটে সুপারসাইন-২৭৬০ জাতের ভুট্টার নতুন জাত প্রবর্তনে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নেয়।
কৃষি বিভাগ জানায়, ৫০ শতাংশ একটি জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করার জন্য সরকারের রাজস্ব খাতের আওতায় প্রতিজন ভুট্টা চাষিকে ৪ কেজি বীজ, একশ’ কেজি ইউরিয়া সার, ৪০ কেজি এমওপি সার, ৫০ কেজি টিএসপি সার, ৫০ কেজি জিপসাম সার, আড়াই কেজি বোরণ সার, আড়াই কেজি দস্তা সার ও ১০ কেজি ম্যাগনেশিয়াম সালফেট সার দেয়া হয়েছে। আগাছাদমন ও বালাইনাশকের জন্য এক হাজার টাকা ও কৃষক ব্রিফিং বাবদ ৫শ’ টাকাসহ মোট ১ হাজার ৫শ’ টাকা চেকের মাধ্যমে কৃষকের নিজ ১০ টাকার ব্যাংক একাউন্টে প্রদান করা হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে প্রযুক্তিগত কলাকৌশল ও পরামর্শ পেয়ে চাষাবাদ করতে পেরে অত্যান্ত খুশী বলে জানান ভুট্টা চাষিরা । কৃষকরা আগামীতে এলাকায় ভুট্টা চাষ আরো বৃদ্ধি করবেন বলে সভায় মতামত ব্যক্ত করেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেরাজুল ইসলাম বাসস’কে জানান, ভুট্টা স্বল্প পানির চাহিদা সম্পন্ন ফসল হিসেবে জনপ্রিয়। ভুট্টা আবাদে বীজ বপনের ২৫-৩০দিন পর ১ম বার সেচ প্রয়োগ ও আগাছা দমন, ৫০-৫৫দিন পর ২য় বার, ৭০-৭৫দিন পরে ৩য় বার হালকা সেচ প্রয়োগ করলে বাম্পার ফলণ পাওয়া যায়। রোগ বালাই, পোকা মাকড়ের আক্রমণ খুবই কম হওয়ায় সদর উপজেলায় ৩ শ’ হেক্টর সহ জেলায় ৬৯০ হেক্টর জমিতে এবার ভুট্টার চাষ হয়েছে এবং দিন দিন ভুট্টার চাষ আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে । এ ছাড়াও ভুট্টা ফসলের মোচা বা কব সংগ্রহের পরে গাছের অবশিষ্ট অংশ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়, ভুট্টা হতে আটা, ময়দা, গো খাদ্য তৈরিতে দেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। জয়পুরহাটের ফিডমিল গুলোতে মুরগীর ও গো-খাদ্য সরবরাহে ফিডমিলগুলোকে জয়পুরহাটের বাইরের জেলা হতে ভুট্টা আমদানী করতে হয়। আমদানীরোধে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধিতে জয়পুরহাট জেলায় বিশেষভাবে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন কৃষকদের ৯ মেট্রিক টনের অধিক ফলণ সম্পন্ন উন্নত জাত সরবরাহ, চাষিদের উদ্ধুদ্ধকরণ ও পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে কৃষক ও কৃষাণীদের ভুট্টা ফসল ছাড়াও বিষমুক্ত সবজি ফসল উৎপাদনে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার, গম ও বোরো ধানে ব্লাস্ট, বিএলবি রোগ প্রতিরোধে করণীয়, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে, ডিজিটাল কৃষি সেবা ব্যবহার, ১৬১২৩, ৩৩৩১ কৃষক বন্ধু ফোন সেবার ব্যবহার, ডিজিটাল এ্যাপস ব্যবহার সম্পর্কে অবহিত করা হয়। অনুষ্ঠানে কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আঃ গণি, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার-অমল চন্দ্র মন্ডল সহ জামালপুর ইউনিয়নের ৩টি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এবং ১৫০ জন কৃষক-কৃষানী উপস্থিত ছিলেন।