বাসস সংসদ-১০ (প্রধানমন্ত্রী) (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : শেয়ার বাজার নিয়ে কারসাজী করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী

350

বাসস সংসদ-১০ (প্রধানমন্ত্রী) (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-সংসদ-ভাষণ
শেয়ার বাজার নিয়ে কারসাজী করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দেবাসীকে পুণরায় ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে নিজ নিজ এলাকায় অস্বাভাবিক কিছু দেখলেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর স্মরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শান্তি ও সমৃদ্ধি চাই। আমার দুঃখ হচ্ছ ধর্মের অপব্যাখা দিয়ে কিছু মানুষকে ধর্মান্ধ করে ব্যবহার করা হয়। তাদের ব্যবহার করে মানুষ হত্যা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন জাগে যারা নিরীহ মানুষ হত্যা করে বেহেশতে যাওয়ার কথা কীভাবে তারা চিন্তা করে? মানুষ হত্যা মহাপাপ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবাক লাগে কিছু সম্পদশালী ধনী ও উচ্চ শিক্ষিত পরিবার ব্যবহার হচ্ছে। আমি জানি না যারা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়, তারা কীভাবে এভাবে ধর্মান্ধ হয়ে যায়।’তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এই ধর্মান্ধতা থেকে মানুষ মুক্তি পাক।’ ধর্মান্ধতার শিক্ষা প্রদানকারীদের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা কিন্তু আত্মঘাতী হয় না, অন্যকে উপদেশ দেয়।
তিনি বলেন, এভাবে মানুষ হত্যা করলে কেউ যদি বেহেশতে যেতে পারতো তাহলে যারা এই পরামর্শ দিচ্ছে তারা আগে কেন যাচ্ছে না। শেখ হাসিনা বলেন, ‘ আমাদের সর্তক থাকতে হবে। দেশবাসীকে সর্তক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবি করা হচ্ছে। ৩৫ বছরে যদি কেউ পিএসসিতে পরীক্ষা দেয়, ওই পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্ট হয়ে চাকরিতে ঢুকতে ঢুকতে ৩৮ বছর হবে। ৩৮ বছর বয়সে একজন চাকরিতে ঢুকবে আবার কেউ কেউ ২২ বছর বয়সে একই চাকরিতে ঢুকবে। কত বছর ডিফারেন্সে দুইজন একসঙ্গে চাকরিতে ঢুকবে? এটা কি তারা চিন্তা করেছে?’
বিরোধীদলীয় উপনেতা বেগম রওশন এরশাদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা অন্তত ৩২ করার সুপারিশ করার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেখা যায় কেউ হয়তো ২৪-২৫ বছরেই চাকরিতে ঢুকছে। তারা অবসরে চলে যাচ্ছে। আমরাতো ইতোমধ্যে অবসরে যাওয়ার বয়স ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ করেছি। যে ৩৮ বছরে চাকরিতে ঢুকবে সে ২২ অথবা ২৩ বছর চাকরি করতে পারবে। সে কিন্তু পূর্ণ পেনশন পাবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের জন্ম থেকে মেধা বা উদ্যম বা তারুণ্য বা সৃজনশীলতাটা সবচেয়ে বেশি থাকে ২৪ কিংবা ২৫ বছর বয়সে। ২১ বছরেই একজন মানুষ পূর্ণতা পায়। ২১ থেকে ২৫ বছরই সবচেয়ে বেশি কর্মদক্ষতা থাকে। এই সময়টা কোথায় যাবে। একটা মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সময়টায় ওরা কী করবে?’
তিনি বলেন, ‘আমাদের তো ৩০ বছর পর্যন্ত চাকরির বয়স। ৩৮ বছর হলে আরও ৮ বছর চলে যাবে। এ সময় চাকরিতে ঢুকে তারা কী কাজ করতে পারবে? তারপর আবার বলা হবে অবসরের বয়স বাড়ানো হোক। অবসরের বয়সসীমা বড়ানো হলে নতুন চাকরি দেয়া যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন কেউ আর অবসরে যাবে না, পদখালি হবে না, আর চাকরিও দেয়া যাবে না। তাহলে আমরা যাব কোনদিকে? চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করলে অবসরের বয়স ৬২ বা ৬৫ করতে হবে। তখন নতুন চাকরিই দেয়া যাবে না। শুধু একটা দাবি তুললেই হবেনা, সবকিছু বিবেচনা করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘চাকরির বয়স বাড়ানো নিয়ে যারা আন্দোলন করে তাদেরকে এগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। আমাদের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খুব কম খরচে পড়ানো হয়। সুতরাং ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাওয়া যায় সেটাই ভালো। সেটার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। আমরা সরকার গঠন করার পর কোনোবারই পিএসসির পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়নি। নিয়মিত পরীক্ষা হচ্ছে এবং সবাই চাকরিতে ঢুকতে পারছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সেশনজট অনেকটাই কমিয়ে এনেছি। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু সেশনজট রয়েছে; সেটাও যাতে না হয় সে ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি।’
নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে সংসদে যোগ দেয়া বিএনপির সংসদ সদস্যদের স্বাগত জানান সংসদ নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি তাদের কাছে গঠনমূলক সমালোচনাও প্রত্যাশা করেন। সংসদের প্রতি মানুষের আস্থা যেন আরও বাড়ে সে ব্যাপারে সবাইকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ টুর্মামেন্টে মঙ্গোলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে উন্নীত হওয়ায় বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দলকে অভিনন্দনও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি দলটির ফাইনালের জন্য শুভকামনাও করেন।
বাসস/এএসজি-এফএন/০০১৫/-এবিএইচ