বাংলাদেশে নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহের কভারেজ শতকরা ৮৮ ভাগ : এলজিআরডি মন্ত্রী

402

ঢাকা, ১৭ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহে শতকরা ৮৮ ভাগ কভারেজ অর্জন করেছে।
মন্ত্রী আজ সকালে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই) আয়োজিত ‘বিশ্ব পানি দিবস ২০১৯’-এর সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন একটি নিরাপদ টেকসই পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির জন্য জোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। বর্তমানে আমরা ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারে অগ্রাধিকার প্রদান করছি। ভূ-গর্ভস্থ পানি সম্পদের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি বিবেচনা করে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে বিভিন্ন নীতিমালা ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান। মূল নিবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মুজিবুর রহমান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত চ্যারিওট্টা স্কি¬টার।
মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ পানীয় জল মানুষের একটি মৌলিক অধিকার এবং জীবন ধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় পানি সম্পর্কিত লক্ষ্য অর্জনে সবার জন্য পর্যাপ্ত ও সমতাভিত্তিক পানি নিশ্চিত করা, প্রত্যেক নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং অন্যান্য পানি সম্পর্কিত পরিবেশে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণকে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। নিরাপদ পানির গুরুত্ব উপলব্ধি করে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৬ প্রণয়ন করা হয়েছে। এর অধীনে ছয়টি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন সন্তোষজনক।
তাজুল ইসলাম বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীলতা কমানো, শিল্পায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, পানি ও স্যানিটেশনজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকিহ্রাস, দেশব্যাপী স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রসার, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি মোকাবেলা প্রভৃতিকে কেন্দ্র করে এই পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকার সীমিত সম্পদ নিয়ে লক্ষ্য অর্জনের ঝুঁকিসমূহ মোকাবেলার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকারের কর্মকা-ে এদেশের জনগণের পূর্ণ সমর্থনের জন্যই দেশ আজ উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি লাভ করছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিরাপদ পানির ব্যবস্থাসহ ৩০ হাজার ওয়াশ ব্লক স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উক্ত কার্যক্রম নিশ্চিত করা হবে।
এছাড় মন্ত্রী আজ সচিবালয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরি সংক্রান্ত কমিটির ৬ষ্ঠ সভায় অংশ নেন।
সভায় শেষে তিনি বলেন, ঢাকার চারপাশের নদীগুলো ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর দূষণ ও দখলরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণীত খসড়া ২ টি মাস্টারপ্ল্যান চুড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, পদ্মা, মেঘনা নদীসহ ঢাকার তুরাগ ও পুংলী নদীর দখল, দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধিকল্পে ভিন্ন আরেকটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুক, পানি সম্পদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, নদী বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখেন।
মন্ত্রী বলেন, নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং সেখানে চলাচলের রাস্তা ও পার্ক নির্মাণ ছাড়াও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলবে।