আইনের স্বার্থেই তারেককে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা : ড. হাছান মাহমুদ

351

ঢাকা, ৯ এপ্রিল ২০১৯ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আইন ও আদালতকে সমুন্নত রাখার স্বার্থেই তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে সরকার, এখানে প্রতিহিংসার কোনো কারণ নেই।
তিনি বলেন, তারেক রহমান যদি মনে করেন তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন, তাহলে তো তার নিজেরই দেশে চলে এসে আদালতে আত্মসমর্পণ করার কথা। কিন্তু তার দুর্নীতি ও হত্যা মামলার অপরাধ এত সুস্পষ্ট যে, তার সে সৎসাহস নেই।’
তথ্যমন্ত্রী আজ বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের প্রচার উপকমিটির সভার শুরুতে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা‘ এমন মন্তব্যের জবাবে একথা বলেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, প্রচার উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ও দৈনিক সংবাদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ুন, সুভাষ সিংহ রায়, সদস্য আকতার হোসেন, শাহ মোস্তফা আলমগীর ও সুজাদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও দলের অন্যতম মুখপাত্র বলেন, ‘তারেক রহমানের দুর্নীতি বাংলাদেশ সরকার উদঘাটন করেনি, করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই। আর একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তার অপরাধ সাক্ষ্য-প্রমাণে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে তিনি একজন দন্ডপ্রাপ্ত আসামী। বিএনপি’রই উচিত ছিলো তাকে বাদ দেয়া। কিন্তু তা না করে তারা একজন দুর্নীতি ও ফৌজদারী হত্যা মামলার দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে রাজনৈতিক সুরক্ষা দেবার অপচেষ্টা করছে।’
বিএনপি এখনও তাকে রাজনৈতিক সুরক্ষা দেয়ার চেষ্টা করছে অভিযোগ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের রাজনীতির জন্য বিএনপির এ ধরনের কর্মকান্ড যেমন দু:খজনক, তেমনি দেশের সুশাসনের জন্যও তা বড় অন্তরায়।
‘দুর্নীতি বা ফৌজদারী মামলায় দন্ড হলে যেসব দেশের সাথে চুক্তি আছে, সেখান থেকে আসামীদের ফিরিয়ে আনা হয়, কিন্তু যুক্তরাজ্যের সাথে চুক্তি নেই বলে সরকার সেদেশে চিঠি দিয়েছে’ ব্যাখ্যা করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এখানে প্রতিহিংসার কোনো কারণ নেই, আইন ও আদালতকে সমুন্নত রাখার স্বার্থেই তা করা হয়েছে।’
‘সরকার দেশে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছে’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে হাছান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদেরসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ও দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে দেশে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তারা (বিএনপি) বিরোধীদলে থাকার সময় সরকার পতনের আন্দোলনের নামে নিরীহ মানুষকে পেট্রলবোমা মেরে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছেল। তারাই দেশের রাজনীতিতে ভয়ের রাজনীতির সংযোজন করেছিলেন। বন্দুকের নলে জন্ম নেয়া বিএনপিই এ উপমহাদেশে ভীতিসঞ্চারের রাজনীতি প্রচলন করেছিল বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
দেশে বাক-স্বাধীনতা নেই, বিএনপির নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে হাছান বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা রয়েছে বলেই তারা সকালে বিকেলে নির্লজ্জ মিথ্যাচারের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে পারছেন।
‘বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের জন্য বিএনপি তার সহগযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণের জন্য বৈঠক করছে’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণ করতে বিএনপির দশ বছর কেটে গেছে। এ কৌশল নির্ধারণে তাদের আরো কত বছর লাগে সেটাই দেখার বিষয়।
মির্জা ফখরুলের দায়িত্ব কমিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে পাঁচ সদস্যকে যৌথ দায়িত্ব দেয়া হলেও সেখানে সিনিয়র নেতারা স্থান পাননি- এ বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি’র মধ্যে যে প্রচন্ড দ্বন্দ্ব-সন্দেহ-অবিশ্বাস বিরাজ করছে, এ থেকে সেটাই প্রমাণিত হয়। মহাসচিবের ক্ষমতা খর্ব করা এবং ঐক্যফ্রন্টের কোনো বৈঠকে তার একা অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞাই নিজেদের এই অবিশ্বাসের বহি:প্রকাশ।’
পরে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটিরও সদস্য সচিব ড. হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে উপ-কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।