বাসস প্রধানমন্ত্রী-৫ (প্রথম কিস্তি) : জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

620

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৫ (প্রথম কিস্তি)
হাসিনা-জলবায়ু পরিবর্তন
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
ঢাকা, ৮ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনকে পৃথিবীর অস্তিত্বের জন্য ‘নিরাপত্তা হুমকি’ উল্লেখ করে এই হুমকি মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
২৬ মার্চ ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করার এখনই সময়। জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারে কারো বিন্দুমাত্রও সন্দেহ থাকলে, তাকে আমি বাংলাদেশে এসে দেখে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানাই। আমি তার সাথে হেঁটে হেঁটে জলবায়ু পরিবর্তন কিভাবে নীরবে এখানকার লাখো মানুষের জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে তা দেখাতে প্রস্তুত আছি।’
ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) সুইজারল্যান্ডের কলোগনি-জেনেভা ভিত্তিক একটি অলাভজনক সংস্থা। ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থার মিশন হলো- ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও সমাজের অন্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও শিল্প সংক্রান্ত এজেন্ডা নিয়ে সম্পৃক্ততার মাধ্যমে বিশ্বের অবস্থার উন্নয়ন।
নিচে প্রধানমন্ত্রীর নিবন্ধের অনুবাদ তুলে ধরা হলো-
পর পর তিন বছর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈশ্বিক ঝুঁকি প্রতিবেদন জলবায়ু পরিবর্তনকে বৈশ্বিক ব্যবসায় ও শিল্পের সবচেয়ে মারাত্মক হুমকি হিসেবে সনাক্ত করেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘জলবায়ু পরিবর্তন, পানি সংকট, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রশমন ও অভিযোজনে ব্যর্থতা বিশ্বব্যাপী ব্যবসায় ও শিল্পের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশের মত এত কাছ থেকে আর কোথাও কেউ দেখেনি। আমি জন্মেছি প্রাচীন নদীবাহিত গ্রামবাংলায়। বিগত শতাব্দীর পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে আমি যখন গ্রামাঞ্চলে বেড়ে উঠি, তখন আমাদের পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ ও রাস্তাঘাট ছিল না। নদী ও বর্ষাকালীন বন্যা ছিল আমাদের জীবনেরই অংশ। বাংলাদেশ মানুষের জীবন ও জীবিকা কিভাবে ভূমি, নদ-নদী, জলাশয় ও সমুদ্রের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি জড়িয়ে আছে তা আমার পিতা প্রায়ই বর্ণনা করতেন।
তখনো আমাদের জীবন বর্তমানের মতই আরামদায়ক ছিল। কিন্তু প্রকৃতি তখন এখনকার মত এত চ্যালেঞ্জিং ও অপূর্বাভাসযোগ্য ছিল না। চরম হতাশার বিষয় হলো পরিবেশ ধ্বংসে ভূমিকা না রেখেও আমরা এমন এক পরিস্থিতির সম্মুখীন যেখানে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ু-অসহায় দেশগুলোর অন্যতম।
বিশ্ব স্বীকার করছে যে, ক্রমবর্ধমান ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও মৌসুমি ও বন্যায় কিভাবে বাংলাদেশের মানুষের জীবিকাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। আমাদের দক্ষিণ সীমান্তে বঙ্গোপসাগর ক্রমেই এসিডিক হয়ে উঠছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার ফলে আমাদের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ফলে প্রতিবছর আমাদের ২%-৩% জিডিপি হারানোর ঝুঁকি থাকে-
চলবে-বাসস/এসএইচ/অনুবাদ-এইচএন/২২৫৫/গিউ/-এবিএইচ