শিক্ষার গুণগতমানের সঙ্গে কোন আপোষ নয় : রাষ্ট্রপতি

721

ঢাকা, ২৮ মার্চ, ২০১৯ (বাসস) : রাষ্ট্রপতি এম আবদুল হামিদ শিক্ষার মানের সঙ্গে কোন আপোষ না করতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি ব্যবসা কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার না করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, এখন আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করা। ফলে শিক্ষার গুণগত মানের সঙ্গে কোন প্রকার আপোষ করা যাবে না। তিনি আজ রাজধানীর বসুন্ধরায় ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-র ২০ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দেয় ভাষণে একথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির চ্যান্সেলর আবদুল হামিদ বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে শিক্ষার সবোর্চ্চ স্থান, এটি কোন ব্যবসা কেন্দ্র নয়।
রাষ্ট্রপতি উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, যদি শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে উচ্চ শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষিত বেকারের হারও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি সকল প্রকার বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার কারিকুলাম প্রণয়ন এবং জ্ঞান অজর্নের প্রকৃত স্থান হিসাবে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ও সময়োপযোগী গবেষণা করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
রাষ্ট্রপতি দেশের ও দেশের জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সহায়ক হয়, এমন দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য অবদান রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে দু’জন গ্রাজুয়েট তাদের নিজ নিজ শিক্ষাবর্ষে সর্বোচ্চ ফলাফল অজর্নের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে স্বর্ণ পদক গ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সদ্য গ্রাজুয়েটদের স্বাগত জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ভিশনের আলোকে তারা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে তাদের মেধা ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগানোর জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, একটি সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে দেশে দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপতি বর্তমান সরকারের অধীনে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের বর্ণনা দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে সফল উৎক্ষেপণের পর বাংলাদেশ আজ অভিজাত স্যাটেলাইট ক্লাবের গর্বিত সদস্য। তিনি বলেন, সরকার বহুমুখী পদ্মাসেতু, বিভিন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্প, পায়রা সমুদ্র বন্দর এবং ঢাকা মেট্রোরেলের মতো বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ বিশ্বে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।
তিনি গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের স্বাক্ষর রাখবে এবং পরিবর্তিত বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তোমরা হবে আগামী দিনের নেতা।
রাষ্ট্রপতি গ্রাজুয়েটদেরকে সমাজ পরিবর্তনের স্থপতি হিসেবে বর্ণনা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে অংশ নেয়ার পরামর্শ দেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ও দেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে দেশপ্রেমিক শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ সমাবর্তন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, এমপি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, আইইউবির উপাচার্য অধ্যাপক ওমর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এ মতিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।