বাসস দেশ-২৩ : জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণে দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন : শ্রম প্রতিমন্ত্রী

375

বাসস দেশ-২৩
মুজিবুল- জেনেভা
জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণে দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন : শ্রম প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ৫ জুন, ২০১৮ (বাসস) : শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক বলেছেন, জীবন-জীবিকার সকল স্তরে জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণে দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। বিশ^ব্যাপী সব ধরনের কাজের ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা অর্জনে সকলকে অঙ্গিকার করতে হবে।
আজ জেনেভায় আন্তর্জাতিক লেবার অর্গানাইজেশনের (আইএলও) ১০৭তম আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনের প্লেনারী সেশনে বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশে^র বিভিন্ন দেশ জেন্ডার অগ্রাধিকার প্রদানে যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছে। তারপরও জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণে শ্রমবাজারে এবং সামাজিক ব্যবস্থায় কিছু ঝুঁকি রয়েই গেছে। এ সকল ঝুঁকি দূরীকরণে আইএলও-এর নেয়া কর্মক্ষেত্রে নারী শতবর্ষী উদ্দ্যোগ ভালো ফল দেবে। নারীদের জীবনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ’এজেন্ডা-২০৩০’ সহায়ক হবে।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নে সরকারের নেয়া নানাবিধ উদ্যোগের বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে দৃঢ়ভাবে বিশ^াস করে মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারীদের উন্নয়ন কর্মকান্ড বাইরে রেখে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য সরকার জাতীয় উন্নয়ন নীতিমালা প্রনয়ণ করেছে, নারীদের জন্য সমান সুযোগ ও অধিকার নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে আবাসন সুবিধার জন্য ডরমেটরি নির্মাণ এবং কারখানাগুলোতে ডে-কেয়ার সেন্টার চালু করেছে। কর্মক্ষেত্রে গত ৪ বছরে নারী কর্মীর সংখ্য ২৪ থেকে ৪০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশে^র দ্বিতীয় বৃহত্তম গার্মেন্টস রপ্তানীকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এই গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে শ্রমিকদের ৯০ শতাংশই নারী । তিনি বলেন, এর আগে সরকার মালিকদের সাথে চুক্তির মাধ্যমে যে ৭৭ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি করেছে তার সুবিধাভোগী বেশির ভাগই নারী। তিনি বলেন, নারীদের জন্য ছোট ও মাঝারি ব্যবসায় এবং কর্মক্ষেত্র তৈরিতে তরুণ উদ্যেক্তাদের সংগঠন জৈয়তা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশে^র প্রথম সারির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। তিনি তাঁর বক্তৃতায় ২০২১ সালের মধ্যে একটি সমন্বিত, জ্ঞানভিত্তক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তথ্য ও প্রযুক্তিতে নারীদের অধিক হারে অংশগ্রহণে সরকার আরো বেশি সুবিধা প্রদান করছে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া তিনি নারী উন্নয়নের বাইরে বাংলাদেশে শ্রম মানের উন্নয়নে নেয়া দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধন প্রক্রিয়ায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শতকরা ৩০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ শ্রমিকের সমর্থনে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে পারবে এবং বাংলাদেশ শ্রম আইনের সাথে সংগতিপূর্ণ ইপিজেড আইন আপডেট করছে যাতে শ্রম পরিদর্শনে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।
গত ২৮ মে থেকে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় চলমান আইএলও এর ১০৭তম আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলন ০৯ জুন পর্যন্ত চলবে। আইন মন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে শ্রম প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মোঃ রুহুল আমিন ও রেজাউল হক চৌধুরী, আইন মন্ত্রণালয়ের লিজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হক, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজা খানসহ সরকারি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ৪০ জন সদস্য এ সম্মেলনে অংশগ্রহন করছেন।
বাসস/সবি/এমএন/১৯৪১/অমি