বাজিস-২ : নাটোরে অনলাইনে যাচ্ছে সাড়ে আট লাখ জমির খতিয়ান

251

বাজিস-২
নাটোর-অনলাইনে জমির খতিয়ান
নাটোরে অনলাইনে যাচ্ছে সাড়ে আট লাখ জমির খতিয়ান
নাটোর, ৫ জুন, ২০১৮ (বাসস) : নাগরিক সেবার মান উন্নয়ন তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে জেলার প্রায় সাড়ে আট লাখ জমির খতিয়ান যাচ্ছে অনলাইনে। আর্কাইভে জমির যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চলছে ডাটা এন্ট্রির কাজ। এ কর্মযজ্ঞে নিয়োজিত হয়েছেন প্রায় একশ’ জনবল।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রেকর্ড রুমের রেকর্ড কীপার খন্দকার লুৎফর রহমান জানান, জেলার সাতটি উপজেলায় এস্টেট একিউজিশন অর্থাৎ এস এ রেকর্ডভূক্ত খতিয়ানের সংখ্যা এক লক্ষ ৮৫ হাজার ১১২, ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে অর্থাৎ সি এস খতিয়ানের সংখ্যা দুই লক্ষ ৭৮ হাজার ৭৪৪ এবং রিভিশনাল সার্ভে অর্থাৎ আর এস খতিয়ানের সংখ্যা তিন লক্ষ ৮২ হাজার ৯৮৫। সব মিলিয়ে মোট খতিয়ানের সংখ্যা আট লক্ষ ৪৬ হাজার ৮৪১টি।
ঐসব খতিয়ানের মধ্যে মোট সাত লক্ষ ১৩ হাজার ৯৮৭টি খতিয়ানের ডাটা এন্ট্রির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এরমধ্যে পাঁচ লক্ষ ৮০ হাজার ৪২৭টি খতিয়ান চলে গেছে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট আর্কাইভে। চলতি বছরের মধ্যে অবশিষ্ট এক লাখ ৩২ হাজার ৮৫৪টি খতিয়ানের ডাটা এন্ট্রির কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের “ডিজিটাল রেকর্ড রুম” প্রকল্পের আওতায় নির্ভূলভাবে ডাটা এন্ট্রির কাজ চলছে। নাটোর জেলা প্রশাসনের লাইবে্িরর, ল্যাব, ই-সেবা কেন্দ্র এবং রেকর্ড রুমের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় একযোগে চলছে এ কার্যক্রম। আউট সোর্সিং ভিত্তিতে নিয়োজিত প্রায় একশ’ শিক্ষিত তরুণ-তরুণীর অংশগ্রহণে তিনটি পর্যায়ে কাজ সমাধা হচ্ছে। প্রথমত: ডাটা এন্ট্রিকারী খতিয়ানের এন্ট্রি দিয়ে অনলাইন ফাইল পাঠিয়ে দিচ্ছেন তুলনাকারীর কাছে। তুলনাকারীর কাজ শেষ হলে অনলাইন ফাইল যাচ্ছে যাচাইকারীর কাছে। কর্মরতদের দুই-তৃতীয়াংশই ডাটা এন্ট্রি অপারেটর।
ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রমের টিম লীডার গোলাম রাব্বানী জানান, নির্ধারিত সার্ভারে গতি কম থাকায় দিনে মাত্র ৫০ থেকে ৬০টি খতিয়ানের এন্ট্রি সম্ভব হচ্ছে। আর গতি থাকলে তা হতো প্রায় ২০০ পর্যন্ত। একই অনুপাতে তুলনা ও যাচাই কাজের গতি আসতো বলে জানালেন তুলনাকারী অভিষেক দাস ও যাচাইকারী রতœা খাতুন। সার্ভারে গতি না থাকার কারণে সারাদিন অপেক্ষা করেও কাজ না করতে পারায় বিনা পারিশ্রমিকে বাড়ি ফিরেছেন অনেকদিন বলে জানালেন তাঁরা।
সর্বশেষ মাঠ জরিপের আর এস খতিয়ান ঠিক থাকলেও এস এ এবং সি এস খতিয়ানের অনেক রেজিস্টার খাতা জরাজীর্ন হয়ে পড়েছে। তাই কিছু ক্ষেত্রে তথ্য এন্ট্রির কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে ঐসব রেজিষ্টার খাতা সংগ্রহ করে কাজ করা হচ্ছে বলে জানালেন রেকর্ড রুমের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনিন্দ্য মন্ডল। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সার্ভার গতিশীল করতেও যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ মুনিরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, অন লাইন ডাটা এন্টি’র কার্যক্রম শেষ হলে বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে জমির মালিক ভূমি মন্ত্রণালয়ের আর্কাইভে জমির প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দেখতে পারবেন এবং স্বাক্ষরবিহীন প্রিন্ট আউট কপিও নিতে পারবেন। আর অন লাইনে রেকর্ড রুম থেকে খতিয়ান প্রাপ্তির আবেদন করা হলে স্বাক্ষরযুক্ত খতিয়ান মাত্র এক কর্ম দিবসের মধ্যে আবেদনকারীর ঠিকানায় পোষ্ট করা সম্ভব হবে।
জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বাসসকে বলেন, জমির খতিয়ানের অন লাইন ডাটা এন্ট্রির কার্যক্রম শেষ হলে সেবা গ্রহিতা ঘরে বসেই তাদের জমির অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং অতি দ্রুত জমির খতিয়ান হাতে পাবেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে তৈরি হবে আরো একটি মাইল ফলক।
বাসস/সংবাদদাতা/কেইউ/১১২৭/নূসী