মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহে প্রকৃতি ও পরিবেশের গুরুত্ব অপরিসীম : প্রধানমন্ত্রী

751

ঢাকা, ৪ জুন, ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহে প্রকৃতি ও পরিবেশের গুরুত্ব অপরিসীম।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকা-ের কারণে প্রকৃতি ও পরিবেশে প্রতিনিয়ত দূষিত বর্জ্য যুক্ত হচ্ছে। বিঘ্নত হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।’
প্লাস্টিকের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিদিন যে বর্জ্য তৈরি হয়, তার শতকরা প্রায় ১০ ভাগ প্লাস্টিক। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ৫শ’ বিলিয়ন প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহৃত হচ্ছে। যার মধ্যে প্রায় ৮ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক সমুদ্রে পতিত হয়। এর ফলে এক মিলিয়ন সমুদ্রচারী পাখি এবং এক লাখ সামুদ্রিক স্তন্যপায়ীর মৃত্যু হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, প্লাস্টিকের অত্যধিক উৎপাদন ও ব্যবহারের ফলে উর্বর কৃষি জমি থেকে শুরু করে খাল-বিল, নদ-নদী এবং সাগর-মহাসাগরের প্রতিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তাই প্লাস্টিকের পুনঃব্যবহার এবং পুনঃচক্রায়ন একান্ত প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে চলেছে। পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, পরিবহণ, মজুত ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে ২০১০ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অধিকতর সংশোধন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পলিথিনের বিকল্প পাটের শপিং ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক আইন, ২০১০ ও পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক বিধিমালা, ২০১৩ অনুসারে ১৭টি পণ্যের সংরক্ষণ ও পরিবহণে পলিথিনের পরিবর্তে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনে যাতে প্রতিবেশ ও পরিবেশসম্মত বিধিব্যবস্থা পালন করা হয় সেদিকে বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে। শিল্পাঞ্চল, আবাসিক অঞ্চলসহ যে কোন স্থাপনায় বৃষ্টির পানি ও জলাধার সংরক্ষণ এবং বৃক্ষ রোপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আমাদের সরকার নদী খনন, খাল খননসহ পাড়ে বৃক্ষরোপন বাধ্যতামূলক করেছে। সাগর ও উপকূল অঞ্চলে সবুজ বেষ্টনী, বৃক্ষরোপন ও ম্যানগ্রোভ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আসুন প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করি’ এবং স্লোগান ‘প্লাস্টিক পুনঃব্যবহার করি, না পারলে বর্জন করি’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের অন্যান্য সদস্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।’
‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০১৮’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদ্যাপনের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রতিবেশের টেকসই ব্যবস্থাপনায় জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাবে।’