বাসস দেশ-২৮ : পলাশের লাশ আনার ইচ্ছে নেই পিতার

285

বাসস দেশ-২৮
নারায়ণগঞ্জ-পলাশ
পলাশের লাশ আনার ইচ্ছে নেই পিতার
নারায়ণগঞ্জ, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ (বাসস) : পলাশের লাশ আনার ইচ্ছে নেই বলে জানিয়েছেন তার পিতা পিয়ার জাহান সরদার।
আজ সোমবার বাসস’র নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সোনরগাঁও উপজেলার পলাশের বাড়িতে গেলে তার পিতা এ কথা বলেন।
তবে পরিবারের অন্যরা লাশ আনার অগ্রহ প্রকাশ করেন।
পলাশের পিতা জানান, গণমাধ্যমে আসা ছবি থেকে তারা পলাশের লাশ শনাক্ত করেছেন।
পলাশের বাবা বাসস প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, তিনি তার সন্তানের লাশ আনতে যাবেন না।
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে কমান্ডো অভিযানে নিহত পলাশ আহমেদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামে।
পিয়ার জাহান সরদার জানান, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। আমার ছেলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা বিশ্বাস করতেই অবাক লাগে। যে ছেলের কারণে সমাজে আমার মান-সম্মান নষ্ট হয়েছে সেই ছেলের লাশ আনতে ইচ্ছে করছে না।
তিনি জানান, শুক্রবার তার ছেলে পলাশ দুবাই যাবে বলে তার কাছ থেকে ১১ হাজার টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ছেলে টুরিস্ট ভিসায় দুবাই যাচ্ছিলো। পলাশ পরিবারের অবাধ্য সন্তান ছিলেন বলে জানান তিনি। পলাশের মা রেনু বেগম রোববার হাসপাতাল থেকে বাড়ি এসেছেন। ঘটনার আগেই তাঁর স্ট্রোক হয়েছিল। বাড়ি এসে ছেলের কথা শোনার পর বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন মা।
তিনি জানান, পলাশ স্থানীয় তাহেরপুর সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ২০১১ সালে দাখিল পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি সোনারগাঁ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হন। কিন্তু পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়ে তিনি বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। ঢাকায় পলাশ কী করতেন, কোথায় থাকতেন কিছুই তারা জানতো না পলাশের পরিবার।
পলাশ মাঝে-মধ্যে বাড়িতে আসতেন এবং টাকা নিয়ে চলে যেতেন। ঢাকায় গান ও অভিনয় করতেন বলে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে শুনেছেন পলাশের বাবা।
তিনি বলেন, পলাশকে মালয়েশিয়া ও দুবাই পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেখানে থাকেননি। দেশে ফেরত এসেছেন।
পলাশ বগুড়ার এক মেয়েকে আগে বিয়ে করে। সেই ঘরে দুই বছরের একটি সন্তান আছে। পরে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। ১০ থেকে ১২ মাস আগে চলচ্চিত্র নায়িকা সিমলাকে বিয়ে করেছেন বলে জানতে পারেন তারা।
সিমলা দুইবার তাদের বাড়িতেও বেড়াতে এসেছিলেন বলে জানান পলাশের পিতা। কিন্তু সিমলার সাথে তার পলাশের বয়সের পার্থক্য বেশি হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা আপত্তি করেন। এ কারণে যেদিন এসেছিলেন, ওই দিনই সিমলা ও পলাশ ঢাকায় চলে যায়।
পলাশের ফুপাতো ভাই ফরহাদ প্রধান বলেন, পলাশ শর্ট ফিল্ম ও গানের ক্যাসেট বের করেছিল। সে চলচ্চিত্র নায়িকা সিমলাকে বিয়ে করেছিল।
পলাশের চাচা দ্বীন ইসলাম বলেন, ‘পলাশ তার বাবা-মায়ের অবাধ্য সন্তান হলেও তার বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদ বা কোনো রাজনীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ বা মামলা মোকদ্দমা নেই। সে এমন একটি ঘটনা ঘটাতে পারে সেটা আমাদের বিশ্বাস হচ্ছে না।’
বাসস/সংবাদদাতা/এফএইচ/২১৫৫/এইচএন