লিভারপুলের শিরোপা স্বপ্ন কিছুটা হলেও ভীতিকর করে তুলতে চায় ইউনাইটেড

193

ম্যানচেস্টার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : প্রিমিয়ার লিগে রোববার হাই ভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ঘরের মাঠে স্বাগতিক সমর্থকরা লিভারপুলের শিরোপা স্বপ্নে ভাগ বসাতে উন্মুখ হয়ে আছে। এমনকি লিভারপুল না পারলে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটির হাতে আরো একবার আসবে শিরোপা। কিন্তু সেটা জেনেও ইউনাইটেড লিভারপুলকে আটকে দিয়ে শীর্ষ চারে নিজেদের জায়গা পাকা করতে মুখিয়ে আছে।
ওলে গানার সুলশারের অধীনে ইন-ফর্ম ইউনাইটেডের সামনে এই স্বপ্ন পূরণের দারুন এক সুযোগও অপেক্ষা করছে। ঘরের মাঠের সুবিধাকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে লিভারপুলকে ঐতিহাসিক শিরোপা জয়ের স্বপ্ন থেকে দুরে ঠেলে দিতে পারে রেড ডেভিলসরা। ২৭ ম্যাচে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে ম্যান সিটি। এক ম্যাচ কম খেলে সমান পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে লিভারপুল। একইদিন লিগ কাপ ফাইনালে ম্যান সিটির মুখোমুখি হবে আরেক জায়ান্ট চেলসি।
গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে আগে ইউনাইটেডকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে অন্তর্বর্তীকালীণ কোচ সুলশারের সাফল্য। ডিসেম্বরে হোস মরিনহোর বরখাস্তের পর একের পর এক সাফল্যে সুলশার ইউনাইটেডকে শীর্ষ চারে টেনে তুলেছেন। এ্যালেক্স ফার্গুসন অধ্যায় শেষে দীর্ঘদিন পরে একটি কোচের অধীনে টানা সাফল্য পেল ইউনাইটেড। ২০১২ সালের পর থেকে সিটি প্রিমিয়ার লিগের তিনটি শিরোপা জয় করলেও ইউনাইটেডের ঘরে সম্প্রতী একটি শিরোপাও আসেনি। আর সে কারণেই ম্যানচেস্টারে ইউনাইটেডের ঐতিহ্য খর্ব করে সিটি শীর্ষে উঠে গেছে।
গত ৩০ বছর যাবত ইউনাইটেডের একনিষ্ট ভক্ত রব মাগের বলেছেন, ‘আমি মনে করি প্রতিটি দলকেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। ইংলিশ ফুটবলে ঐতিহাসিক ভাবেই ইউনাইটেড ও লিভারপুল দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী। দীর্ঘদিন ধরেই এটা হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি সেই জায়গাটা কোথায় যেন সিটি নিয়ে নিয়েছে।’
৬০’র দশকের শুরুর দিকে ফুটবল মাঠে ইউনাইটেড ও লিভারপুলের দ্বৈরথ সকলের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। এই সময়ে মূলত এই দুটি ক্লাবই ইংলিশ ফুটবলকে শাসন করতো। এই দুই ক্লাব এ পর্যন্ত ৩৮টি লিগ ও আটটি ইউরোপীয়ান কাপ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছে। ২০১৩ সালের পর থেকে ইউনাইটেড প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিততে পারেনি। এবারও তারা শিরোপা দৌড় থেকে আগেই ছিটকে পড়েছে। কিন্তু ১৯৯০ সালের পর প্রথমবারের মত ইংলিশ ফুটবলে নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে লিভারপুলের সম্ভাবনা এখনো দারুনভাবে টিকে আছে।
সুলশারের অধীনে সর্বোচ্চ ২৭ পয়েন্টের মধ্যে ইউনাইটেড ২৫ পয়েন্ট অর্জন করেছে। আর সে কারণেই লিভারপুল বস জার্গেন ক্লপ জানেন লিগে সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন ম্যাচে কাল তার দল মাঠে নামতে যাচ্ছে। এ্যানফিল্ডে আগের ম্যাচে ৩-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল ইউনাইটেড। যে কারণে মরিনহো ক্লাব ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। স্বাগতিক সমর্থকরা একটি বড় ম্যাচে যে বিশাল পার্থক্য গড়ে দিতে পারে তা বেশ ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পারছেন ক্লপ। বিশেষ করে ইউনাইটেডের উজ্জীবিত আক্রমণভাগ নিয়েই সবচেয়ে বেশি শঙ্কা ক্লপের। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘এটা লিগের অন্যতম বড় ম্যাচ। আমি জানি কতটা কঠিন হতে যাচ্ছে ম্যাচটি। তারা এই মুহূর্তে দারুন ছন্দে আছে। শারিরীকি ভাবেও ইউনাইটেডের খেলোয়াড়রা অনেক বেশি শক্তিশালী। আক্রমণ ও রক্ষণভাগে তারা সমান পারদর্শী।’
ইউনাইটেড বস সুলশার বলেছেন, ‘লিভারপুলের জন্য এটা বড় ম্যাচ, আমাদের জন্যও তাই। আমরা শীর্ষ চারে থাকতে চাই। আর সে কারণেই এই ম্যাচের গুরুত্ব আমাদের সকলের কাছে সমান। এই দলের কাছ থেকে আমরা আরো একটি চ্যালেঞ্জের অপেক্ষায় আছি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসে এই দলটি যেন চিরস্থায়ী আসন গড়তে পারে সেই লক্ষ্যেই আমরা মাঠে নামবো।