বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ মিশনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

204

ঢাকা, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনসহ বিশ্বের বিভিন দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস/হাইকমিশন ও কনস্যুলেট জেনারেলের কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় প্রাপ্ত স্থায়ী মিশন,দূতাবাস/হাইকমিশন ও কনস্যুলেট জেনারেলের কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের যৌথ উদ্যোগে স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়।
এতে বলা হয়,দিবসটি উপলক্ষ্যে ২০ ফেব্রুয়ারি রাত রাত ৮টা ৩০ মিনিট থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহর পর্যন্ত মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ দিবস পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন স্বাগত:বক্তব্য রাখেন। নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসার শুভেচ্ছা বক্তব্যেরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। একুশের কবিতা আবৃত্তি, গান, গানের সাথে একক ও দলীয় নৃত্য এবং সমবেত সঙ্গীত দিয়ে সাজানো সাংস্কৃতিক পর্বটি পরিচালনা করেন নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশের খ্যাতনামা নাট্যশিল্পী টনি ডায়েস এবং তার সহধর্মীনি প্রিয়া ডায়েস।
সাংস্কৃতিক পর্ব শেষে রাত দশটায় শুরু হয় আলোচনা অনুষ্ঠান। আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই ভাষা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে দেয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
জাতিসংঘে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) বার্ষিক শুনানিতে যোগদান উপলক্ষে নিউইয়র্ক সফররত বাংলাদেশের সংসদ সদস্য ডা. এ এফ এম রুহুল হক,মো: আবু জহির বেনজীর আহমেদ ও আহসান আদেলুর রহমান এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাঙালির উপস্থিতিতে নিউইয়র্ক সময় ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে মিশনস্থ অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়।
‘আমার ভাইয়ের রক্ত রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’-এ গানের সাথে-সাথে রাত ১২টা ১মিনিটে মিশনে স্থাপিত শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির নেতৃত্বে স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ এবং নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কনসাল জেনারেলের নেতৃত্বে কনস্যুলেট জেনারেলের কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, যুক্তরাষ্ট্র সেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, যুব লীগ, ছাত্র লীগ, নিউইয়র্ক সিটি আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ স্পোর্টস্্ কাউন্সিল ও সোনালী এক্সচেঞ্জসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং উপস্থিত প্রবাসী বাঙালিগণ।
বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য ডা. এ এফ এম রুহুল হক, মো: আবু জহির, বেনজীর আহমেদ এবং আহসান আদেলুর রহমান।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. এ এফ এম রুহুল হক বলেন,‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনসহ সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। জাতির পিতা না থাকলে আমরা স্বাধীনতা পেতাম না, বাংলাদেশ পেতাম না।’
তিনি ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির মিছিল, ভাষার জন্য শহীদ হওয়া, প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণসহ বর্তমান শহীদ মিনার স্থাপনের ইতিহাসও তুলে ধরেন।
এছাড়াও এ অনুষ্ঠানে বক্তারা মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণের ভোটে পরপর তিনবার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের হাতকে আরও শক্তিশালী করতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন স্থায়ী মিশনের হেড অব চেন্সারি নিরুপম দেব নাথ।
এ ছাড়াও ভিয়েতনামের হ্যানয় এবং ফিলিপাইনের ম্যানিলায় বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে এ দিবস পালন করা হয়।