বাসস প্রধানমন্ত্রী-৬ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সুরক্ষা করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

538

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৬ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-একুশে পদক-ভাষণ
ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সুরক্ষা করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের যা কিছু অর্জন তা কিন্তু সবসময় আওয়ামী লীগ সরকারই এনে দিয়েছে। যার মধ্যে- ভাষা আন্দোলন ছাড়াও ৬দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় রয়েছে।
আওয়ামী লীগ ১৯৫৬ সালে সরকার গঠন করেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময়ই ২১ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস এবং সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয় এবং শহিদ মিনার নির্মাণের জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী কাজ শুরু হলেও ১৯৫৮ সালে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে স্বৈরশাসক আইয়ুব খান মার্শাল ল ঘোষণা করেন এবং শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগের ফলেই ইউনেস্কো মহান একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
তিনি বলেন, প্রায় কুড়ি বছর আগে প্রয়াত রফিকুল ইসলাম, আবদুস সালামসহ কয়েকজন প্রবাসী বাঙালির উদ্যোগে এবং ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। আমাদের একুশ এভাবে পরিণত হয় পৃথিবীজোড়া মানুষের মাতৃভাষা দিবসে।
মাতৃভাষাকে রক্ষা, চর্চা এবং মাতৃভাষা নিয়ে গবেষণা করার জন্য তার সরকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলেছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার মেয়াদ ৫ বছর পূর্ণ করার পর ২০০১ সালে স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মত শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করলেও পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত সরকার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী নির্যাতনের পাশাপাশি আন্তর্জাাতিক মাতৃভাষা ইনষ্টিটিউট নির্মাণসহ আওয়ামী লীগ সরকারের সকল উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দেয়।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে পুণরায় সরকারের আসার পরই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনষ্টিটিউটের এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব পর হয়। যেখানে বর্তমানে বিশ্বের হারিয়ে যাওয়া মাতৃভাষার নমুনা সংগ্রহ এবং মাতৃভাষা নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, আমাদের মাতৃভাষা যেন সুরক্ষিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনষ্টিটিউটের মাধ্যমে আমরা সে উদ্যোগ নিয়েছি। পাশাপাশি আমাদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং পৃথিবীর অন্য ভাষাভাষি এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষার ওপরও এখানে নমুনা সংগ্রহ এবং গবেষণা কার্যক্রম চলছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে জাতির পিতার বাংলায় প্রদত্ত ভাষণের পদাংক অনুসরণ করে প্রতি বছর তাঁর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ প্রদানের কথাও উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে ১৯৫২’র মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষার দাবিতে রফিক, সালাম, বরকতদের রাজপথ রঞ্জিত করার গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস স্মরণ করে এই আন্দোলন গড়ে তোলার পেছনে জাতির পিতার অনন্য ধারবাহিক অবদানের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন।
তিনি বলেন, ‘ভাষার দাবিতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বাংলা ভাষা দাবি দিবস পালনের ঘোষণা দেয়। সেই থেকেই প্রকৃতপক্ষে ভাষার দাবি রাজপথে গড়ায়।’
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ ঐদিন ইডেন বিল্ডিং, জেনারেল পোস্ট অফিস এবং অন্যান্য জায়গায় ব্যাপক পিকেটিং করে। পুলিশ ছাত্রদের লাঠিচার্জ করে এবং বঙ্গবন্ধুসহ অনেক ছাত্রকে আটক করে।
বাসস/এএসজি-এফএন/২০৪০/আরজি