রাষ্ট্রপতির ভাষণ বর্তমান সরকারের উন্নয়নের দলিল : সরকারি দল

641

সংসদ ভবন, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : রাষ্ট্রপতির ভাষণের জন্য আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে, তার প্রতিফলন ঘটেছে রাষ্ট্রপতির ভাষণে। রাষ্ট্রপতির ভাষণ বর্তমান সরকারের উন্নয়নের একটি দলিল।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর এ আলোচনা শুরু হয়। ওই দিন চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে সরকারি দলের সদস্য আ. স. ম ফিরোজ তা সমর্থন করেন।
গত ৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম ও বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সংসদে ভাষণ দেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আজ ১১তম দিনে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সরকারি দলের সুবিদ আলী ভূইয়া, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী ও মীর মোস্তাক আহমেদ রবি আলোচনায় অংশ নেন।
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদীমাতৃক দেশকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করার জন্য এবং নদী ব্যবহার করে মানুষের জীবন-জীবিকা কাজে লাগাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় গঠন করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এই নদীর ব্যাপারে আর কেউ নজর দেয়নি। এই নদীগুলো শুধু নাব্যতা হারায়নি, এগুলো শুধু মরে যায়নি, নদীগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। নদী যাতে মানুষের জীবন-জীবিকার মাধ্যম না হয়, এ জন্য ষড়যন্ত্র হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রথম দায়িত্ব গ্রহণের পর নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। বন্ধ হয়ে যাওয়া খুলনা শিপইয়ার্ড তিনি চালু করেছিলেন। বন্ধ মংলাবন্দর চালু করেছিলেন। গত ১০ বছরের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। ইতোমধ্যে ১২শ’ কিলোমিটার নৌপথ চালু করা হয়েছে। দেশের ১০ হাজার কিলোমিটার নৌ-পথ চালুর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এদেশে ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌ-পথ ছিল, যা ৩ হাজার কিলোমিটারে নেমে এসেছিল।
তিনি বলেন, মৃতপ্রায় বিআইডব্লিউটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসি এখন আবার জাগিয়ে তোলার উদ্যোগ নিয়ে বড় বড় মেগা প্রজেক্ট গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, মংলা স্থলবন্দর এবং মহেশখালীতে একটি বন্দর নির্মাণসহ আরো কয়েকটি বন্দর নির্মাণের সমীক্ষা চলছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতুত্বে রাজধানী ঢাকার চারপাশের চারটি নদী দখল ও দুষণমুক্ত করে এগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। পাশাপাশি কর্ণফুলি নদী তীর দখলমুক্ত কার্যক্রম চলছে। সারা দেশের মানুষ এই কার্যক্রমকে স্বাগত জানাচ্ছে। সরকার দৃঢ়ভাবে সংকল্পবদ্ধ এই অভিযান কোনভাবেই বন্ধ হবে না, বরং এটি আরো বেগবান হবে।
তিনি বলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের অর্থনীতিকেই শুধু ধ্বংস করা হয়নি। ভুল ইতিহাস শিক্ষা দিয়ে এদেশের ঐতিহ্য, শিক্ষা, সমাজ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসিত করেছিলেন। এদেশে জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জামায়াতের ৭১ এর ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার কথা উঠেছে। শুধু জামায়াত নয় এদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপিকেও জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
সরকারি দলের সদস্য সুবিদ আলী ভূইয়া বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সকল মহলে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এই নির্বাচনে জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে আবারো বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছে।
বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলছে। এদেশের অগ্রযাত্রা বিশ্ববাসীর কাছে প্রশংসিত হচ্ছে। শেখ হাসিনা এখন নিজেই নিজের তুলনা। তাঁর নেতৃত্বে দেশে জঙ্গিবাদ বিদায় নিয়েছে।