ইজতেমাকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

321

গাজীপুর, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেছেন, মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বিশ্ব ইজতেমার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ বুধবার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী অঞ্চল-১ মিলনায়তনে বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
আজকে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগের চেয়ে অনেক সমৃদ্ধ এ কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুসল্লীদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন থাকবে এবং তা আগের তুলনায় অনেক বেশি।
তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং এর জন্য ৫টি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে কোন ধরনের উস্কানী মূলক বক্তব্য না দেয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। কেউ এ ধরনের তৎপরতা চালালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।।
মুসল্লীদের উদ্দ্যেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা দীর্ঘ ৫৪ বছর যাবত আপনারা একত্রে চলেছেন একই প্লেটে খেয়েছেন, আমি আশা করব আপনারা এবারও একত্রিত হয়ে বিশ্ব ইজতেমাকে সুন্দরভাবে করবেন এবং আগের মতো মিলে মিশে চলবেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এমপি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আলহাজ মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন মেয়র আলহাজ মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজিপি ডা. জাবেদ পাটোয়ারী, র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, গাজীপুর পুলিশ কমিশনার ওয়াইএম বেলালুর রহমান ও পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বক্তৃতা করেন।
সভায় জানানো হয়, বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং এর জন্য ৫টি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন কন্ট্রোল রুম, গাজীপুর জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম, পুলিশ প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম, পুলিশ প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম, র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম, আনসার ও ভিডিপির কন্ট্রোল রুম।
সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পুলিশ প্রশাসনের ১৫টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন, র‌্যাবের ১০টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন, মুসল্লীদের জন্য ৩৫০টি অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ, ওজু, গোসল, পয়ঃনিষ্কাশন ও সুপেয় পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ১৩টি গভীর নলকূপ প্রতিদিন ৩ কোটি ৫৪ লাখ গ্যালন সুপেয় পানি সরবরাহ করবে। চাহিদা মোতাবেক ৬শ’ ড্রাম ব্লিচিং পাউডার, ২হাজার লিটার কেরোসিন সরবরাহ করা, ৫০টি গার্বেজ ট্রাকের মাধ্যমে দিন-রাত বর্জ্য অপসারণ করা, ৩০টি ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশক নিধনের ব্যবস্থা করা ও ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহা সড়কের চৌরাস্তা পর্যন্ত দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেছদ করা হয়েছে।
তুরাগ নদীতে নিরাপত্তার জন্য টঙ্গী ব্রীজ ও কামারপাড়া ব্রীজের নীচে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার জন্য বাঁশ দ্বারা ৩টি নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণ, অস্থায়ী ৭৫০টি বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা করা, জিসিসি’র কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমন্বয়ে ১৩টি কমিটি গঠন ও সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব প্রদান করা এবং সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া ইজতেমা চলাকালে অত্র এলাকার সিনেমা হলসমূহ বন্ধ এবং দেয়ালের অশ্লীল পোষ্টার অপসারণের ব্যবস্থা, মাঠের চারপাশের রাস্তার ধূলাবালি নিয়ন্ত্রণ ও মুসল্লীদের সুবিধার্থে গাড়ির মাধ্যমে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা গ্রহণ, বিদেশি মেহমানদের রান্নার কাজের জন্য ১৭৫টি গ্যাসের চুলা স্থাপন, জিসিসি’র কন্ট্রোল রুমে ৬টি টেলিফোন সেট, ২টি হটলাইন সংযোগ স্থাপন, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য ৪৫টি সিটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।