বাজিস-১ : জয়পুরহাটে ঈদের কেনাকাটা জমে উঠছে, দেশি কাপড়ের চাহিদা বেশি

239

বাজিস-১
জয়পুরহাট-ঈদ
জয়পুরহাটে ঈদের কেনাকাটা জমে উঠছে, দেশি কাপড়ের চাহিদা বেশি
জয়পুরহাট, ৩ জুন, ২০১৮ (বাসস) : জেলা শহরে ঈদের কেনাকাটা বেশ জমে উঠেতে শুরু করেছে। বিভিন্ন মার্কেট, বিপণী বিতান, শপিংমল ও হকার্সপট্টি ক্রেতা সমাগমে মুখোরিত। এবার দেশি কাপড়ের চাহিদা বেশি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, রোজা এগিয়ে যাচ্ছে ঈদ যত কাছাকাছি আসছে ততই বাড়ছে কেনাকাটা। দিন রাতে সুবিধামত সময়ে লোকজন যাচ্ছেন মার্কেটে, বিপণী বিতান ও শপিংমলে। ফলে ক্রেতাদের পদচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে কসমেটিকস, জুতা ও কাপড়ের দোকানগুলো। নারী, পুরুষ, শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ কিনছেন তাদের পছন্দসই সামগ্রী। ক্রেতারা এখন পোশাক সামগ্রী কিনলেও প্রসাধনী ও জুতার দোকানে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড়ে শহরে সৃষ্টি হয় যানজটের। কেনা-বেচা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। প্রশাসনের কঠোর ট্রাফিক ব্যবস্থা ও পৌরসভার স্থাপন করা রোড ডিভাইডারের কারণে এবার কিছুটা যানজট নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জেলা শহরের নিউমার্কেট, সদর রাস্তা, পূর্ব বাজার কাপড় পট্টি, এনামুল হক মার্কেট, মীনা বাজার ও হকার্স পট্টির, মৌসুমী, শাহাজান আলী মার্কেটসহ বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা বাড়তি কথা বলার সময় পাচ্ছেন না। রোজা শুরুর পর থেকেই টুকটাক বেচা-বিক্রি ছিল এখন বেশি হচ্ছে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।
দেশি শাড়ির মধ্যে সিল্ক, কাতান ও টাঙ্গাইলের শাড়ির চাহিদার পাশাপাশি লেহেঙ্গা , গ্রাউন, থ্রিপিস ও স্কাট মেয়েদের পোশাকের চাহিদা এবার বেশি বলে জানালেন করিম গেঞ্জি ষ্টোরের মালিক রেজাউল করিম। ছোট শিশুদের জন্যও রয়েছে বাবা সেট, বেবী সেট ও গেঞ্জি সেট। বিভিন্ন মাপের গামের্ন্টস পোশাক বিক্রি হচ্ছে ৫শ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বলে জানান পূর্ব বাজার বাবু গার্মেন্টসের মালিক মাসুদ পারভেজ বাবু। নীল কমল ফ্যাশনের মালিক পূজা আগরওয়ালা বলেন, আগের চেয়ে এবার কাপড়ের কোয়ালিটি অনেক ভাল সে তুলনায় দাম খুব বেশি নয়। থ্রি পিস ৫ শ থেকে ২ হাজার ৫ শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি। ফারুক ক্লথ ষ্টোরের মালিক ফারুক হোসেন বলেন, ক্রেতারা তাদের সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় করে কেনাকাটা করছেন। তবে ভারতীয় পোশাকের চাগিদা এবার কম। ৫শ টাকা পিস থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকার মধ্যে বেশী বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দেশি পোশাকেরই চাহিদা বেশি রয়েছে বলে জানান তনুশ্রী বস্ত্রালয়ের মালিক সুজন কুমার মন্ডল। দাম গতবারের মতই বলে জানান, ড্রেস মার্ট ফ্যাশনের মালিক সাথী বেগম। ইতি লেডিস টেইলার্সের মালিক পাপিয়া বেগম বলেন, লেহেঙ্গা তৈরিতে ৮শ, থ্রিপিস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা ও গ্রাউন তৈরি করছেন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। পূর্ব বাজারের নারী মার্কেট ভালভাবে চালু হয়নি বলে কম দামে জামা কাপড় সেলাই করলেও ক্রেতা সমাগম কম বলে জানালেন এ নারী উদ্যোক্তা পাপিয়া বেগম।
নিউমার্কেট, বিপণী বিতান ও শপিংমল ছাড়াও রেলওয়ে হকার্স মার্কেটে ও রাস্তার পাশের ছোট দোকানগুলো থেকে কেনাকাটা করছেন নি¤œ ও মধ্যবিত্ত আয়ের ক্রেতারা তাদের সামর্থ অনুযায়ী। জামালপুর এলাকার আহসানের স্ত্রী সালমা বেগম মেয়ের জন্য ৩ হাজার টাকায় একটি লেহেঙ্গা কিনেছেন বলে জানান। শহরের সরদারপাড়া এলাকার ছোট শিশু রেশমা ও কথা দুই বোন ২ হাজার টাকায় একটি টি সার্ট ও একটি গ্রাউন পেয়ে খুশি বলে জানান। মন্ডলপাড়ার রাসেল ২৭৫০ টাকার মধ্যে দুটি পাঞ্জাবী, একটি টাউজার কিনলেও দাম বেশি হয়নি বলে তিনি জানান। জুতার দোকানগুলো ক্রেতা আকর্ষণ বাড়াতে ১০ থেকে ৪০% পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে। নিউমার্কেটের ফেমাস টেইলার্সের মালিক আলহাজ্ব মকবুল হোসেন বলেন, গামের্ন্টস কাপড় বেশি বিক্রি হলেও টেইলার্সে অনেক কাপড় আসছে। সময় মত ডেলিভারী দেওয়ার জন্য কাপড় বুকিং নেয়া বন্ধ করা হয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে অতিরিক্ত টাকা রোজগারের আশায় এবারও জেলার শতাধিক সেলাই কারিগর ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট গেছে। এবার সেলাইয়ের জন্য শার্ট প্রতি ২৫০-৩০০ টাকা, প্যান্ট ও পাঞ্জাবী সেলাই প্রতিটি ৪শ-৫শ টাকা মজুরী নেওয়া হচ্ছে। জেলা শহরের প্রায় শতাধিক টেইলার্সের শ্রমিকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানান তিনি।
ঈদের কেনাকাটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে মার্কেটগুলোতে। এতে খুশি বলে জানালেন পূর্ব বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ বাবু।
বাসস/সংবাদদাতা/কেইউ/১০২৫/নূসী