দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলায় ৪৪ হাজার ৮৫২ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ

450

যশোর, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : চলতি মৌসুমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলায় ৪৪ হাজার ৮৫২ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সরিষা তেলের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরাও সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন।
সরিষা চাষে তেমন কোন খরচ নেই। সেচের প্রয়োজন হয় না।এ কারণে অনেক চাষি সরিষা চাষে মনোযোগী হচ্ছেন- এমনটাই মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। বসত বাড়ির আশ-পাশে অনাবাদি ও পতিত জমিতে সরিষা চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। অনেক প্রান্তিক ও বর্গাচাষি অর্থকরী এ ফসল চাষে দিন দিন ঝুঁকে পড়ছেন বলে আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে। লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সরিষার চাষ।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলা হচ্ছে-যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা,কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও মাগুরা।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে (২০১৮-১৯) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলায় মোট ৪৪ হাজার ৮৫২ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এসব জমিতে ৬০ হাজার মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানান।
আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, যশোরে সরিষার চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে। ঝিনাইদহে সরিষার চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৫১৫ হেক্টরে, মাগুরায় ১২ হাজার ৫৯০ হেক্টরে, কুষ্টিয়ায় ৬ হাজার ৭৫০ হেক্টরে, চুয়াডাঙ্গায় ২হাজার ২২২ হেক্টরে এবং মেহেরপুর জেলায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। আবাদকৃত জমিতে উচ্চফলনশীল বারি-৯, বারি-১৪, টরি-৭ জাতের সরিষার চাষ বেশি হয়েছে বলে তিনি জানান।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক মো. ইমদাদ হোসেন শেখ বাসসকে জানান, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সরিষা চাষিদের উদ্বুদ্ধকরণ, পরামর্শ, মাঠ দিবস, উঠান বৈঠক, নতুন নতুন জাতের বীজ সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সরিষা চাষে অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম। সরিষায় পোকার আক্রমণ নেই বললেই চলে। ফলনও বেশি। প্রতিহেক্টর জমিতে ১.৪ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে সরিষা কাটা শুরু হয়েছে। সরিষা কাটা শেষ হতে আগামি দু’সপ্তাহ লাগতে পারে। সরিষার খৈল গরুর খাবার হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বাজারে সরিষার চাহিদা ব্যাপক থাকায় এ অঞ্চলে সরিষার চাষ দিন দিন বাড়ছে বলে তিনি জানান।