বাজিস-৫ : লামায় নির্মাণাধীন সেতু : ৩০ হাজার মানুষের জীবনমান পাল্টে দেবে

576

বাজিস-৫
লাসা-সেতু
লামায় নির্মাণাধীন সেতু : ৩০ হাজার মানুষের জীবনমান পাল্টে দেবে
বান্দরবান, ২ জুন ২০১৮ (বাসস) : জেলার লামা উপজেলা শহরের মিশনঘাটে নির্মাণাধীন গার্ডার সেতু এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের জীবনমান পাল্টে দেবে। মহান স্বাধীনতার ৪৮ বছরের মাথায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে একদা অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত সুযোগ নিশ্চিত এবং সহজকরণে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের উদ্যোগে এবং নির্দেশনায় এলাকবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবিটি পূরণ হতে চলেছে।
লামা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, লামা শহরের অদুরে মাতামুহুরী নদীর মিশনঘাটে একটি সেতুর অভাবে নৌকাসহ বিভিন্ন ভাসমান বাহন ব্যবহার করে পারাপার করতে গিয়ে প্রতিবছরই বহুমানুষের প্রাণহানি ঘটে। নৌকাডুবিতে শিশুসহ এলাকাবাসী নিখোঁজও হন। গার্ডার সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে ওই অঞ্চলের কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষের নদীর ওপর দিয়ে যাতায়াত নিশ্চিত হবে। সেতুটির নির্মাণের ফলে লামা,রুপসীপাড়া এবং গজালিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি গ্র্রাম-পাড়ার প্রায় ৩০হাজার মানুষ নিরাপত্তার মাধ্যমে দিনরাত ২৪ ঘন্টাই যাতায়াত করতে পারবেন ।
লামা পৌর মেয়র এম জহিরুল ইসলাম বলেন, পৌর শহরের পুর্ব-উত্তরাংশে একটি পাহাড়ের পরেই মাতামুহুরী নদীর ওপারে মেরাখোরা গ্রাম। এ গ্রামের মাঝখানেই প্রবাহিত মাতামুহুরী নদী। তবে মিশনঘাটের সিঁড়ির পাশে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে গার্ডার সেতুটির নির্মাণ হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহনে সুযোগ পাওয়া ছাড়াও শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষের যাতায়াত নির্বিঘেœ হবে। পৌর মেয়র জানান,উপজেলা শহরের কাছে থাকলেও এক সময় নদীর ওপারের প্রায় ৩০ হাজার পাহাড় ও বাঙ্গালি সড়কপথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন ছিল। বর্ষায় নৌকা বা ভাসমান বাহন দিয়ে মানুষকে যাতায়াত করতে হত। শুস্ক মৌসুমে হাঁটু কিংবা কোমর পানি ভেংগে পারাপার করতে হত।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবানস্থ প্র্রকল্প পরিচালক মো.আবদুল আজিজ বলেন, উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নির্মাণাধীন সিসি গার্ডার সেতুটি নদী পারাপারে স্থানীয়দের সেই কষ্ট আর পানির ¯্রােতে স্বজন হারানোর বেদনা থেকে মুক্ত হবেন। ১৪০ মিটার দীর্ঘ সেতুতে ৪টি স্পাম,১২টি গার্ডারের কাজ সমাপ্তি হয়েছে। সব মিলিয়ে ৭০ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। সেতুর পুরো নির্মাণ কাজ খুব শিগগিরই শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
২০১৬ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এই সেতুর নির্মাণ কাজের সুচনা করেন। চলতি বছরের শেষ নাগাদ নির্মাণ কাজ সমাপ্তি হবে। একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দরপত্রের মাধ্যমে ৭কোটি ৮৪ লাখ টাকার এই সেতুর নির্মাণ কাজ করছে।
মিশনঘাট এলাকার এবং মেরাখোলা গ্রামের বাাসন্দিা নুর হোসেন, ফাতেমা, কামাল হোসেন এবং চিংহলা মারমা জানান, লামা মাতামুহুরী নদী পয়েন্টের মিশনঘাট বা মেরাখোলা-রাজবাড়ি এলাকায় গার্ডার সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে মেরাখোলা-ছোটবমুসহ আশপাশের কমপক্ষে ৫০টি গ্রাম-পাড়ার মানুষ সহজেই সড়কপথের যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। ফলে দূর্গম গ্রামসমুহে উদপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করাসহ বিদ্যালয়গামী ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে উম্মোচিত হবে এক নতুন দিগন্ত। চলতি বছরের শেষদিকে সেতুটির কাজ পুরোপুরি শেষ হবে এবং উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বাসস/সংবাদদাতা/১৮৩০/মরপা